ব্যবসায়ী সোহেল হত্যায় ৮ জনের যাবজ্জীবন
আজ বুধবার (২১ জুন) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মাসুদ করিম এ রায় ঘোষণা করেন।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: ছয় বছর আগে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় পূর্ব শত্রুতার জেরে সোহেল প্রধান নামে এক ডিস লাইন ব্যবসায়ীকে হত্যার দায়ে আট আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ বুধবার (২১ জুন) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মাসুদ করিম এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কামাল মোল্লা, জালাল মোল্লা, বিল্লাল মোল্লা, হারুন মোল্লা, মহসিন মোল্লা, আমির হোসেন, জাকির হোসেন ও জাবের হোসেন। এদের মধ্যে আমির হোসেন, জাকির হোসেন ও জাবের হোসেন পলাতক রয়েছেন। সংশ্লিষ্ট আদালতে রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মাহবুবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম সোহেল প্রধান (২৬) মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানাধীন টেংগারচর গ্রামের অসুস্থ পিতা নাছির উদ্দিন প্রধানের বড় ছেলে। গ্রাম্য দলাদলির রেশ ধরে পূর্ব শত্রুতার কারণে আসামিরা প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সোহেলকে খুন করার উদ্দেশে ঢাকার মিরপুর ১ নম্বর গোল চত্বর থেকে ২০১৭ সালের ৫ মে রাত ৯টার দিকে তাকে অপহরণ করেন। এসময় তারা সোহেলকে গামছা দিয়ে মুখ বেঁধে ১টি সাদা গাড়িতে করে টেংগারচর গ্রামের আসামি কামাল মোল্লার বাড়ির সামনে নিয়ে যান। এরপর তাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে পাশের ভুট্টা ক্ষেতের ভেতরে নিয়ে লোহার হাতুড়ি, লোহার চোকা রড ও লোহার পাইপসহ নানান অস্ত্রের মাধ্যমে উপর্যুপরি আঘাত করেন। সোহেল মারা গেছেন ভেবে টেংগারচর থেকে আসামিরা তাকে সিএনজিতে করে মেঘনা নদীতে ফেলে দেওয়ার উদ্দেশে নিয়ে যায়। এসময় পথিমধ্যে টহল পুলিশের গাড়ির আওয়াজ পেয়ে আসামিরা তড়িঘড়ি করে গুরুতর আহত সোহেলকে জামালদি ব্র্যাক অফিসের পাশে ফেলে দ্রুত পালিয়ে যান। পরে টহলরত পুলিশ আহত সোহেলকে উদ্ধার করে গজারিয়া (ভবেরচর) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
সেখানকার ডাক্তারের নির্দেশমতে সোহেলের উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ঢামেকের কর্তব্যরত ডাক্তার সোহেলকে পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। জানা গেছে, ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পথে সোহেল তার ভাইসহ আত্মীয়স্বজনদের আসামিদের নাম ও ঘটনা বলে যান। এ ঘটনায় সোহেলের মা সুফিয়া বেগম বাদী হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গজারিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। তাদের মধ্যে তিনজন আসামি আদালতে স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।