বুবলীকে ‘মহিলা’ ও ‘পচা আলু’ বললেন অপু বিশ্বাস! 

বুবলীকে ‘মহিলা’ ও ‘পচা আলু’ বললেন অপু বিশ্বাস! 

প্রথম নিউজ, বিনোদন ডেস্ক: ঢাকাই সিনেমার দুই নায়িকা অপু বিশ্বাস ও শবনম বুবলীর সম্পর্কটা ঠিক যেন আদায় কাঁচকলায়। চিত্রনায়ক শাকিব খানকে ঘিরে এই দুই নায়িকার কোন্দল লম্বা সময় ধরে চলছে। বিভিন্ন সময় একে অন্যকে তিরস্কার করেছেন। তবে দিন দিন তাদের তিরস্কারের ভাষা সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। পারষ্পরিক আক্রমণের মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে যেকোনো শিষ্টাচারকে। 

চলতি বছর এক সাক্ষাৎকারে অপু বিশ্বাস বলেন তিনি বুবলীকে ‘ঘৃণা’ করেন। এরপর এক স্ট্যাটাসে পরোক্ষভাবে কুকুরের সঙ্গে তুলনা টেনে এই নায়িকাকে জবাব দেন বুবলী। 

সবশেষ এই দুই নায়িকার কোন্দল স্পষ্ট হয় গানবাংলার কর্ণধার কৌশিক হোসেন তাপসের স্ত্রী ফারজানা মুন্নী ও অপু বিশ্বাসের একটি ফোনালাপকে কেন্দ্র করে। যার সূত্রপাত ফারজানা মুন্নীর এক ফেসবুক স্ট্যাটাসকে ঘিরে। যেখানে তিনি দাবি করেন, তার স্বামী কৌশিক হাসান তাপসের সঙ্গে প্রেম করছেন নায়িকা বুবলী।

এরপরই ফারজানা মুন্নীকে রাত তিনটায় মোবাইল ফোনে কল দেন অপু বিশ্বাস। যেখানে তিনি জানান, বুবলী তার জীবনে কী কী কাণ্ড ঘটিয়েছেন। অপু বিশ্বাসের সঙ্গে সেই ফোনালাপে মুন্নীও বুবলী সম্পর্কে নানান তথ্য ফাঁস করেন। যেটা অপু বিশ্বাস রেকর্ড করে রাখেন। 

পরদিন প্রায় ১৪ মিনিটের একটি অডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। যেখানে ফারজানা মুন্নীর কণ্ঠ শোনা যায় পুরো সময়জুড়ে। অপু বিশ্বাস কী বলেছেন, সেসব বাদ দেওয়া হয়।

এ ঘটনার বেশ কিছুদিন পর সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ফারজানা মুন্নী জানান, অপু বিশ্বাস তার অনুমতি না নিয়ে কলটি রেকর্ড করেছেন। মুন্নীর দাবি, অপু বিশ্বাস উদ্দেশ্যপ্রোণিতভাবে কল রেকর্ডটি ফাঁস করেছেন।

গণমাধ্যমে দেওয়া ফারজানা মুন্নীর এমন বক্তব্যের পর আজ এক ভিডিও বার্তায় সেদিনের ফোনালাপ প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন অপু বিশ্বাস।

রোববার ভোরে নিজের ফেসবুক পেজে ২৮ মিনিট ৫৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও প্রকাশ করেন এই নায়িকা। যেখানে বুবলী সম্পর্কে একাধিক মন্তব্য করেন অপু বিশ্বাস। কখনো সরাসরি নাম নিয়ে, কখনো আবার নায়িকার সঙ্গে কোনো কিছুর তুলনা টেনে আক্রমণ করেন তিনি। 

ওই ভিডিওবার্তার একটি অংশে অপু বিশ্বাস বলেন, ‘এই যে তার (ফারজানা মুন্নী) সংসারে টানাপোড়েন, সেই একই তৃতীয় পক্ষ। যে তৃতীয় পক্ষ আমার সংসারটাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। সরি টু সে ভাবি, আপনি যেমন একটি ইনফরমেশন দিয়েছেন যে, একটি ফোন এসেছে রাত ৩টায়। সেখানে অপু বিশ্বাস লেখা। ফর ইওর কাইন্ড ইনফরমেশন, ট্রু-কলারে যে নামটা দিয়ে রেজিস্ট্রার করা হয়, সে নামটা ভেসে আসে। আমার নম্বরটি থেকে যদি আপনার নম্বরে কল যায়, তাহলে ওখানে নাম উঠবে আব্রাহাম খান। কারণ, আমার ওইভাবে রেজিস্ট্রি করা। মুন্নী ভাবি আমাকে প্রথমে ফোন করেছিল মোবাইল ফোনে। তখন তাকে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করতে বলি। কারণ, বিষয়টি সেনসিটিভ। আমার সঙ্গে কিন্তু ওনার হোয়াটসঅ্যাপে কথা হয়েছে।’

কী কথা হয়েছিল তাদের মাঝে সেটা উল্লেখ করে এই নায়িকা বলেন, উনি (ফারজানা মুন্নী) এতটা ডিস্টার্ব ছিল যে, আমার কোনো কথাই বলতে হয়নি। নিজেই বলছিল। তিনি আমাকে বলেছেন ‘আমি আর এই সংসারে থাকব না’। আমি তখন তাকে বলেছি, ভাবি আপনি আমাকে অপু ডেকেছেন না! আমাকে আদর করেছেন না! ওই ‘মহিলা’র (বুবলী) ইনটেনশন হচ্ছে, প্রতিটা সংসার ভাঙা। শাকিব অত্যন্ত সরল-সোজা একজন মানুষ। সেই সরল-সোজা মানুষকে যা-তা করে ইউজ করতে পেরেছে সাইনবোর্ডের মতো। আমি আপনার ক্ষেত্রে এমনটা হতে দেব না। দরকার হলে বলেন, আমি ভাইয়ার সঙ্গে কথা বলব। আপনি ভাইয়াকে ছেড়ে যাবেন, এটা স্বপ্নেও চিন্তা করবেন না। আপনি যদি এই কাজ করেন, তাহলে এখনই ফোনটা কেটে দেব। আমি যখন তাকে বললাম, আমি ভাইয়ার সঙ্গে কথা বলি। তখন ভাবি বলল, অপু তোমাকে সে তার কাছে এতটা খারাপ বানিয়েছে যে, তুমি কীভাবে কথা বলবা। সেই স্পেসটাই তো রাখেনি। আমার বাচ্চাকে নিয়ে সে (বুবলী) বাজে মন্তব্য করেছে।

এরপর বুবলীকে ‘পচা আলু’ নাম দিয়ে অপু বিশ্বাস বলেন, ‘একটা ভালো রুমের মধ্য পচা আলু থাকলে সেটা গন্ধ ছড়াবেই। যেই গন্ধটা আমার পরিবারকে উই পোকার মতো খেয়ে অন্য একটা পরিবারে ঢুকেছে। আজকে আপনারা (ফারজানা মুন্নী-তাপস) বা আমি-সাকিব অপরপ্রান্ত হয়ে কথা বলছি, সেটা তো ওই পচা আলুর জন্যই। যেহেতু ওই পচা আলু হাতে ধরে ফেলেছেন, গন্ধ তো ছড়াবেই।’

সবশেষ অপু বলেন, ‘আলুর গন্ধের জন্য আমার পরিবারটা নষ্ট হয়েছে। মন থেকে দোয়া করি আপনি ও ভাইয়া ভালো থাকেন। আপনারা ভালোভাবে চলেন। আপনারা ভালো-মন্দ যেটাই বলেন, পরিবার সবার আগে তারপর সবকিছু। আমার কাছেও আমার পরিবার আগে। তারপর সবকিছু। উপস্থাপকও হয়ত একটু বোকার মতো কাজ করেছেন। সে হয়ত চেয়েছন আমাকে আপনাদের কাছে বাজেভাবে উপস্থাপন করতে। তাতে আমার সমস্যা নেই। আমার পরিবারের লোকজন জানেন আমি কেমন। সবশেষে বলব, হ্যাপি থাকুন। আর এই পচা আলুর গন্ধ যেন আর কোনো পরিবারকে নষ্ট করতে না পারে সেটা মাথায় রাখুন।’