বঙ্গোপসাগরে দুই ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা

পেট্রোবাংলা সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একটি বৈঠকে এসব তথ্য উপস্থাপন করে

বঙ্গোপসাগরে দুই ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা
ফাইল ফটো

প্রথম নিউজ, ঢাকা: জ্বালানি বিভাগ বঙ্গোপসাগরে প্রায় দুই ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ) গ্যাস পাওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখছে। অগভীর সমুদ্রে তিনটি কূপ খনন করে পাওয়া যেতে পারে ১ দশমিক ৯ টিসিএফ গ্যাস, সম্প্রতি পেট্রোবাংলার কাছে ভারতের জাতীয় প্রতিষ্ঠান ওএনজিসি ভিদেশ যে তথ্য-উপাত্ত জমা দিয়েছে তাতে এমনটাই বলা হচ্ছে।

বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানায়, পেট্রোবাংলা সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একটি বৈঠকে এসব তথ্য উপস্থাপন করে। তখন জ্বালানি সচিব আনিছুর রহমান বলেন, ‘সুসংবাদটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ঘোষণা দেওয়া যেতে পারে।’

গত ২৯ সেপ্টেম্বর মহেশখালীতে কাঞ্চন-১ কূপ খনন শুরু হয়েছে বলে জানান পেট্রোবাংলার পরিচালক (প্রডাকশন শেয়ারিং কন্ট্রাক্ট) প্রকৌশলী মো. শাহিনুর রহমান। তার আশা, সেখানে তিনটি লেয়ারে গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর গভীরতা ৪ হাজার ২০০ মিটার পর্যন্ত। 
 
গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য তিন মাস এবং বাণিজ্যিক উপযোগিতা নিরূপনের জন্য আরও তিন মাসসহ মোট ছয় মাস প্রয়োজন বলে মনে করেন এই প্রকৌশলী।
 
ওই সূত্র মতে, ওএনজিসি ভিদেশ এবং ইন্ডিয়ান অয়েলের সঙ্গে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে ২০১২ সালে  প্রডাকশন শেয়ারিং কন্ট্রাক্ট চুক্তি হয়। এর মাধ্যমে অগভীর সমুদ্রের ৪ ও ৯ নম্বর ব্লকে প্রতিষ্ঠান দুটিকে অনুসন্ধানের সুযোগ দেওয়া হয়। 

ওএনজিসি সাড়ে ৫ হাজার লাইন কিলোমিটার দ্বিতীয় মাত্রার ভূকম্পন জরিপ করে তেল-গ্যাস পাওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখেছে। এরপর ২০২০ সালে কূপ খননের উদ্যোগ নেয়। যদিও এই কূপ খনন একবছর পিছিয়ে গত ২৯ সেপ্টেম্বর শুরু হয়েছে।

পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা বলেন- তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানের যে প্রক্রিয়া রয়েছে তাতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, কোথাও কূপ খনন করে নিশ্চিত হওয়ার আগে গ্যাস পাওয়ার ঘোষণা দেওয়া উচিত নয়। তবে জরিপে যদি বোঝা যায় গ্যাস পাওয়া যাবে তাহলে সম্ভাবনার কথা বলতে বাধা নেই।
 
বিষয় সংশ্লিষ্ট বিভিন্নজন বলছেন, ‘আমাদের সাগরে আমরা তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে পিছিয়ে থাকলেও ভারত এবং মিয়ানমার তাদের সীমানায় গ্যাস পেয়েছে। ফলে আমাদের এখানেও গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা আমরা কাজে লাগাতে পারছি।’
বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহম্মদ আলী বলেন, ‘কূপের ডিজাইনটি ৪ হাজার ২০০ মিটার গভীরে হচ্ছে। এর ৩ হাজার ৪০০ মিটার গভীরতায় উচ্চচাপ এলাকা (হাইপ্রেশার জোন) রয়েছে। এখানে মোট তিনটি কূপ খনন করা হবে। সব মিলিয়ে ১ দশমিক ৯ টিসিএফ গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

পেট্রোবাংলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, একটি কূপ এখন খনন করা হলেও বাকি দুটি কূপ খনন করা হবে আগামী বছর। প্রথম কূপের ৪০০ মিটার পর্যন্ত খনন করা হয়েছে। ৪ হাজার ২০০ মিটার পর্যন্ত খনন করতে সব মিলিয়ে তিন মাস সময় লাগতে পারে। এ ছাড়া, পরের দুটি কূপের একটির কাজ আগামী বছরের সেপ্টেম্বর এবং অন্যটির খনন অক্টোবরে শুরু হবে।

সূত্র বলছে, সাগর উত্তাল থাকায় সেপ্টেম্বর থেকে মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত কাজ করা যায়। বছরের বাকিটা সময় ঝড়-ঝঞ্ঝার কারণে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান কূপ খনন করা দুরূহ হয়ে ওঠে। 

বর্তমানে বঙ্গোপসাগরের ২৫ ব্লকের মাত্র তিনটিতে কাজ হচ্ছে। বাকি ২২টি ব্লকই পড়ে রয়েছে। এর মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী দুটি ব্লক রয়েছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের হাতে।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

This site uses cookies. By continuing to browse the site you are agreeing to our use of cookies & privacy Policy from www.prothom.news