ফর্মে ফিরেও আক্ষেপ বাবরের

ফর্মে ফিরেও আক্ষেপ বাবরের

প্রথম নিউজ, অনলাইন:  কয়েক সেকেন্ডের জন্য বাবর আজম যেন থমকে গেলেন। নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারলেন না। হয়তো ভাবছিলেন, এটা কোনো দুঃস্বপ্ন। কিন্তু কয়েক সেকেন্ড পর বাবর বুঝলেন, সত্যি সত্যিই তিনি আউট হয়ে গেছেন।

রোববার কেপটাউন টেস্টের তৃতীয় দিনে বাবরের সঙ্গে এ ঘটনা ঘটেছে। পুরোদিন উইকেটে টিকে থাকার পর শেষ মুহূর্তে আউট হয়ে গেলেন পাকিস্তানি ব্যাটার। তাও আবার নিজের প্রিয় শট কাভার ড্রাইভ খেলতে গিয়ে।

দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার মার্কো জানসেনের বলে কাভার ড্রাইভ খেলতে গিয়েছিলেন বাবর। তখন ৮১ রান নিয়ে খেলছিলেন তিনি। কিন্তু ব্যাটে-বলে ভালোমতো সংযোগ ঘটাতে পারেননি ডানহাতি পাকিস্তান সুপারস্টার। কভার অঞ্চলের বদলে ব্যাটের কাণায় লেগে বল চলে যায় সোজাসোজি গালি অঞ্চলে ফিল্ডিং করা বেডিংহ্যামের হাতে।

বাবরের সাজঘরে ফেরার মধ্যে দিয়ে প্রথম উইকেট হারায় পাকিস্তান। সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে অপরাজিত থাকা শান মাসুদের সঙ্গে ২০৫ রানের উদ্বোধনী জুটি করেছিলেন বাবর। দিনের ১৫ মিনিট বাকি থাকতে আউট হলেও পাকিস্তানের ইনিংস ব্যবধানে হার এড়ানোর ভিত্তি গড়ে দিয়েছেন তিনি।

ফলোঅনে খেলতে নামা পাকিস্তান তৃতীয় দিন শেষে তুলেছে ১ উইকেটে ২১৩ রানে। এখনো ২০৮ রানে পিছিয়ে সফরকারীরা।

৮১ রান করেও আক্ষেপে পুড়ছেন বাবর। টেস্টে ১৯ ইনিংস পর ফিফটি পাওয়া এই ব্যাটার নানা সমালোচনা সহ্য করে ফর্মে ফিরলেও আশানুরূপ খেলতে পারছেন না। দীর্ঘ ফরম্যাটের ক্রিকেটে সর্বশেষ ৩ ইনিংসে ফিফটি হাঁকানো বাবর শেষবার সেঞ্চুরি করেছিলেন ২০২২ সালের ডিসেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে করাচিতে।

নিজের পরিসংখ্যানের দিকে তাকিয়ে মোটেও সন্তুষ্ট নন বাবর। দিনের খেলা শেষে গণমাধ্যমের কাছে আক্ষেপের কথাও শোনান পাক ব্যাটার। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা যে অনিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছেন, তাতে অন্তত সেঞ্চুরি পাওয়ার আশা করছিলেন বাবর।

বাবর বলেন, ‘দুটি ইনিংসেই আমি খুবই হতাশ (প্রথম ইনিংসে ৫৮)। আমি ভালো শুরু করেছিলাম। কিন্তু শেষটা ভালো করতে পারিনি। আপনি যদি স্থির হন তবে আপনাকে অবশ্যই বড় (ইনিংস) করতে হবে। সেজন্য আমি কিছুটা বিরক্ত ছিলাম। (দিনের) মাত্র ১৫ মিনিট বাকি ছিল।’

কেপটাউনের উইকেট ছিল ফ্ল্যাট। এমন পিচে রান করা সহজ। এ নিয়ে বাবর বলেন, এখানকার কন্ডিশন সেঞ্চুরিয়নের থেকে আলাদা। দক্ষিণ আফ্রিকায় আপনি আশা করেন না যে (পিচ এমন ফ্ল্যাট হবে)। নতুন বলে কিছুটা চ্যালেঞ্জ ছিল, কিন্তু একবার আপনি স্থির হয়ে গেলে ও জুটি গড়ে তুললে এটি সহজ হয়ে যায়। স্পিনাররা কিছু চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছিল, তবে আপনি যদি সেট হয়ে যান, তাহলে ফাস্টবোলারদের বিপক্ষে স্বাভাবিক খেলা খেললেই হয়।’

টেস্ট টানা ১৯ ইনিংসে ফিফটি নেই। এমন ক্রিকেটারের সমালোচনা থাকবে স্বাভাবিক। বাবরকেও নানা তির্যক মন্তব্য সহ্য করতে হয়েছিল। এক পর্যায়ে তাকে দল থেকে বাদও দেওয়া হয়। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে সিরিজের শেষ দুই টেস্টে বেঞ্চে বসানোর পর দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে বাবরকে ফের দলে ভিড়ায় পাকিস্তান।

এবার সুযোগ পেয়ে দারুণ কিছু করেছেন। এখন পর্যন্ত চলতি সিরিজে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী বাবর। খারাপ দিনগুলো কীভাবে কাটিয়েছেন এবং কীভাবে ফর্মে ফিরছেন তা নিয়ে বাবরকে প্রশ্ন করা হয় দিনশেষে।

উত্তরে বাবর বলেন, ‘জীবন সব সময় পরিবর্তিত হয়। এই সময়ে আমি অনেক কিছু শিখেছি (খারাপ ফর্মে)। আমি যা করতে চেয়েছিলাম তা আমি করতে পারিনি এবং যখন আমি সেই কাজগুলো করতে পারিনি যা মানুষ আমার কাছ থেকে আশা করে। আমি শুধু নিজেকে শান্ত থাকতে বলছিলাম। বিশ্বাস করি যে, আমার ক্ষমতা ও কঠোর পরিশ্রম প্রমাণিত হবে। নিজেকে উপভোগ করার চেষ্টা করবো। পিচে কিছু সময় কাটানো সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ধন্যবাদ (এই সিরিজে তা হয়েছে)।’