ফরিদপুরে সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার ৮

ফরিদপুরে সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার ৮

প্রথম নিউজ, ফরিদপুর : ফরিদপুর কোতয়ালী এলাকার বাখুন্ডা বাজারে সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনায় আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-১০।

সোমবার (৩ জুন) ও মঙ্গলবার (৪ জুন) রাজধানীর শ্যামপুর, লালবাগ, কামরাঙ্গীরচর, শ্যামলী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ ও মাদারীপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে র‍্যাব-১০।

গ্রেপ্তাররা হলেন— মো.ইসমাইল সরদার ওরফে লিটন, মো. মামুন সরদার, শেখ জাহাঙ্গীর, জলিল ওরফে সম্পদ ব্যাপারী, রুবেল মোল্লা, মো. হারুন, মো. সুমন মাতুব্বর ও মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন। গ্রেপ্তারদের মধ্যে মো. ইসমাইল সরদার ওরফে লিটন এই ডাকাত দলটির সরদার।

গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত তালা কাটার যন্ত্র, রুপার অলংকার ও ১৫টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। এছাড়া গ্রেপ্তার সুমন মাতুব্বর ও আব্দুল্লাহ আল মামুনের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ককটেল তৈরির সালফার ও দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।


র‍্যাব জানায়, গত মে রাতে ফরিদপুর কোতয়ালী এলাকার বাখুন্ডা বাজারে দেশীয় অস্ত্রসহ অজ্ঞাত ১২-১৪ জন সোনা, মুদি, ইলেক্ট্রনিকসসহ বেশ কয়েকটি দোকানের বিপুল পরিমাণ সম্পদ ডাকাতি করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ডাকাতি হওয়া দোকানের মালিকরা বাদী হয়ে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় অজ্ঞাতনামা ১২/১৪ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ডাকাতি মামলা করেন।

মঙ্গলবার (৪ জুন) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‍্যাব-১০ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন।

অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, এই ডাকাত দলে রয়েছে ৩৫ জনের মতো সদস্য। ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার ডাকাত দলটির এই সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরেই এই ধরনের ডাকাতি করে আসছিল। এদের রয়েছে বড় বড় তিনটি গ্রুপ। এসব গ্রুপের রয়েছে আবার দুই-তিনটি করে সাবগ্রুপও। তারা অস্ত্রের পাশাপাশি ককটেল ব্যবহার করে আতঙ্ক সৃষ্টি করত।

গ্রেপ্তাররা আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা গত ২৭ মে বাখন্ডা বাজার ডাকাতির সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। তারা বেশ কিছুদিন ধরে ঢাকা, মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ ও রাজবাড়ীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে স্বর্ণালংকার, টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান সম্পদ ডাকাতি করে আসছিল। তারা ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে, বরিশাল-ফরিদপুর, মাওয়া- গোপালগঞ্জসহ বিভিন্ন আন্তঃজেলা মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকায় বাস-ট্রাকসহ বিভিন্ন প্রকার যানবাহন থামিয়ে দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে টাকা পয়সা স্বর্ণালংকারসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ডাকাতি করে আসছিল।

ডাকাত সুমনের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় অস্ত্র, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মারামারি ও হত্যা চেষ্টাসহ মোট ২০টি মামলা রয়েছে। ডাকাত মামুন সরদারের বিরুদ্ধে ছিনতাই ও মারামারিসহ তিনটি মামলা রয়েছে। ডাকাত সর্দার ইসমাইল সর্দার লিটনের বিরুদ্ধে দুটি ডাকাতি মামলা রয়েছে। ডাকাত হারুন বেপারীর বিরুদ্ধে দুটি ডাকাতি ও একটি অপহরণ মামলা রয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে ফরিদ উদ্দিন বলেন, ডাকাত দলের সদস্যরা ছোটখাটো ব্যবসা করত। অনেকে আবার যখন যে কাজ পায় সেটা করত। ফরিদপুরে ডাকাতির ঘটনায় আমরা ১৫ জনের সম্পৃক্ততা পেয়েছি। এই ঘটনায় তারা ৫০ লাখ টাকা মালামাল নিয়েছে। দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তারা এই ডাকাতি করত। তারা যেসব জায়গায় ডাকাতি করবে সেখানে আগে পর্যবেক্ষণ করে নেয়।

ছিনতাই ও ডাকাতির বিষয়ে তিনি বলেন, আইনে রয়েছে কোনো ঘটনায় যখন চারজন জড়িত থাকে তখন সেটি ছিনতাই বলে ধরা হয়। আর ভয় দেখিয়ে পাঁচজন বা তার বেশি হলেই সেটা ডাকাতি হয়ে যায়। চক্রের সদস্যরা ছিনতাই ও ডাকাতির কাজে জড়িত। তারা যেখানে থাকে সেখানেই ছিনতাই ও ডাকাতি করে।