ফুটপাতে ‘দোকান বসানো নিয়ে’ ঢাবি ছাত্রলীগের দুই পক্ষে মারামারি
গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত একটার দিকে হাসপাতালের একটি ফটকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রথম নিউজ, অনলাইন : ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনের ফুটপাতে দোকান বসানো নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল শাখা ছাত্রলীগের দুটি পক্ষের নেতা-কর্মীরা মারামারিতে জড়িয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত একটার দিকে হাসপাতালের একটি ফটকে এ ঘটনা ঘটে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ফটক, নতুন ভবনের সামনের ফটক (২ নম্বর ফটক) ও বহির্বিভাগসংলগ্ন ‘বাগান ফটকে’ বেশ কিছু অবৈধ ভ্রাম্যমাণ দোকান রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এসব দোকান থেকে নির্দিষ্ট লাইনম্যানের মাধ্যমে তোলা চাঁদার একটি অংশ ছাত্রলীগের কিছু নেতার পকেটেও যায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শহীদুল্লাহ হল শাখা ছাত্রলীগের দুজন নেতা বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ কর্মচারী সমিতির একজন শীর্ষ নেতা নতুন ভবনের সামনের ফটকে একটি ভ্রাম্যমাণ দোকান বসিয়েছিলেন। সেটি তুলে দিয়ে সেখানে অন্য একটি দোকান বসান শহীদুল্লাহ হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি সিকদার সাজ্জাদ হোসেন। পরে কর্মচারী সমিতির সেই নেতার পক্ষে সেখানে যান বিজয় একাত্তর হল শাখার সহসভাপতি বেলায়েত হোসেন। তিনি সাজ্জাদের বসানো দোকানিকে মেডিকেলের সামনে থেকে তুলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নিয়ে মারধর করেন। ওই দুই নেতা আরও বলেন, বিষয়টি নিয়ে মুঠোফোনে সাজ্জাদের সঙ্গে বেলায়েতের উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। ফোনে হুমকি-ধমকির পর শুক্রবার মধ্যরাতে ঢাকা মেডিকেলের বাগান ফটকে দুজনের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। ছাত্রলীগের আরও কিছু নেতা-কর্মী সেখানে গেলে ঘটনাটি মারামারিতে রূপ নেয়। পরে বিষয়টি সমাধানের জন্য গভীর রাতে শহীদুল্লাহ হল শাখা ছাত্রলীগের চার পক্ষ হলের অতিথিকক্ষে আলোচনায় বসে।
এ নিয়ে সাজ্জাদ হোসেনের ভাষ্য, নতুন ভবনের সামনের ফটকের এক দোকানির গ্রামের বাড়ি ও তাঁর গ্রামের বাড়ি একই এলাকায়। দোকান নিয়ে বিপদে পড়ে সহযোগিতা চাইলে তিনি ওই দোকানিকে সাহায্য করতে যান। এ নিয়ে শহীদুল্লাহ হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মেহেদী হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, বিজয় একাত্তর হল শাখার সহসভাপতি বেলায়েত হোসেনসহ কয়েকজন মিলে তাঁকে মারধর করেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে বেলায়েত হোসেনের মুঠোফোনে একাধিক কল করা হলেও তা ব্যস্ত পাওয়া গেছে। অন্য দুজনের দাবি, দোকান বসানো নিয়ে কথা-কাটাকাটির জেরে সাজ্জাদ হোসেন ও তাঁর পক্ষের নেতা-কর্মীরা বেলায়েত হোসেনকে মারধর করেছেন। ঘটনার সময় তাঁরা মেডিকেলের বাগান ফটকের পাশে বসে চা পান করছিলেন। এর সঙ্গে তাঁদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
এদিকে এ ঘটনায় আজ শনিবার সাজ্জাদ হোসেন, শহীদুল্লাহ হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল আলম ও সাংগঠনিক সম্পাদক বুলবুল আহমেদকে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। যদিও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রগুলো বলছে, জাহিদুল ও বুলবুল সরাসরি মারামারিতে অংশ নেননি। যাঁরা মারামারি করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতার অনুসারী হওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে শিক্ষার্থীরা কেন দোকান বসাবেন—এ বিষয়ে প্রতিবাদ করতে যাওয়ায় বিজয় একাত্তর হল শাখার নেতা বেলায়েত হোসেনের ওপর শহীদুল্লাহ হলের সিকদার সাজ্জাদ হোসেনের নেতৃত্বে হামলা হয়েছে।