পালিয়ে যাওয়ার পথ খুঁজছেন মুরাদ
অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে মন্ত্রিত্ব হারানো ডা. মুরাদ হাসান গোপনে দেশ ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি কানাডায় পাড়ি দিতে পারেন বলে জানা গেছে।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে মন্ত্রিত্ব হারানো ডা. মুরাদ হাসান গোপনে দেশ ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি কানাডায় পাড়ি দিতে পারেন বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার রাতে কানাডাগামী একটি বিমানের টিকিট কেটেছেনও তিনি। সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইনস সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগের পর তার যে লাল পাসপোর্ট (বিশেষ পাসপোর্ট) ছিল সেটি তিনি ফেরত দিয়েছেন। এদিকে রাজধানীর শাহবাগ থানায় ডা. মুরাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। নারীদের নিয়ে অশালীন মন্তব্য করায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি দায়ের করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। এ ছাড়া অনলাইন প্ল্যাটফর্মসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুরাদ হাসানের অশ্লীল-কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের ৩৮৭টি লিংক চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এর মধ্যে ফেসবুক ১৫টি ও ইউটিউব দুটি লিংক অপসারণ করেছে।
বিটিআরসি’র আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই-রাকিব সংবাদমাধ্যমকে জানান, বিটিআরসি ফেসবুকে ২৭২ লিংক এবং ইউটিউবে ১১৫ লিংক চিহ্নিত করে তা অপসারণের আবেদন জানিয়েছে। এর মধ্যে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ১৫টি এবং ইউটিউব কর্তৃপক্ষ ২টি লিংক অপসারণ করেছে। অন্যদিকে, মন্ত্রিত্ব হারানো ডা. মুরাদ হাসানের সংসদ সদস্য (এমপি) পদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। বুধবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করা হয়।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মুরাদ হাসানের বক্তব্যসংবলিত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে তাকে খালেদা জিয়ার নাতনি জাইমা রহমান সম্পর্কে ‘অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ’ মন্তব্য করতে শোনা যায়। ওই ভিডিওতে মুরাদ হাসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রোকেয়া হল ও শামসুন নাহার হলের সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রীদের নিয়েও আপত্তিকর মন্তব্য করেন। এরই মধ্যে রোববার (৫ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সাথে মুরাদ হাসানের আপত্তিকর ফোনালাপ ফাঁস হয়। মুহূর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে ভাইরাল হয়ে যায় এটি।
এ নিয়ে তুমুল আলোচনার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) পদত্যাগ করেন মুরাদ হাসান। পরে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকেও তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়। মুরাদ হাসান পেশায় চিকিৎসক ও আওয়ামী লীগপন্থি চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) ও একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত সরকারে প্রথমে মুরাদ হাসানকে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়। পরবর্তীতে ২০১৯ সালের মে মাসে স্বাস্থ্য থেকে তাকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: