প্রধানমন্ত্রী রংপুর যাচ্ছেন আজ
নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা হয়েছে পুরো রংপুর শহরকে। জনসভায় অংশ নেয়ার জন্য জিলা স্কুলের দেয়াল ভেঙে তৈরি করা হয়েছে দুটি বড় প্রবেশ দ্বার ।
প্রথম নিউজ, অনলাইন: দীর্ঘ এক যুগ পর আজ রংপুর জিলা স্কুল মাঠে সমাবেশ করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিজেদের পুত্রবধূকে বরণ করে নিতে প্রস্তুত রংপুরবাসীও। পোস্টার, ব্যানার, বিলবোর্ড, শতাধিক তোরণে ছেয়ে গেছে নগরী। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও রং করে চাকচিক্য আনা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্থাপনাগুলোয়। নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা হয়েছে পুরো রংপুর শহরকে। জনসভায় অংশ নেয়ার জন্য জিলা স্কুলের দেয়াল ভেঙে তৈরি করা হয়েছে দুটি বড় প্রবেশ দ্বার । নারীদের জন্য বাঁশ দিয়ে ঘেরা আলাদা স্থান নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় অংশ নিতে যাতায়াতের সুবিধার্থে ৮টি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার জানিয়েছেন- পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, বুড়িমারী, দিনাজপুর, উলিপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও বোনারপাড়া স্পেশাল ট্রেন সকাল সোয়া ৯টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে রংপুরে পৌঁছাবে। এ ছাড়া বিভাগের প্রতিটি জেলা থেকে আন্তঃজেলা রুটের বাস, প্রাইভেট কার, মাইক্রো ও মোটরসাইকেলে করে জনসভাস্থলে যোগ দেবেন মানুষ। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ নগরীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি দপ্তরের মাঠে যানবাহন পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করেছে।
প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সহকারী সচিব ইসমাত মাহমুদা স্বাক্ষরিত সফরসূচি থেকে জানা যায়, বুধবার বেলা সাড়ে ১২টায় তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারযোগে রংপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন শেখ হাসিনা। দুপুর ২টায় রংপুর ক্যান্টনমেন্টের হেলিপ্যাডে প্রধানমন্ত্রীর হেলিকপ্টার অবতরণ করবে। ২টা ৫ মিনিটে সড়ক পথে সেনানিবাস থেকে সার্কিট হাউসের উদ্দেশে রওনা হবেন তিনি। সোয়া ২টায় সার্কিট হাউস মিলনায়তনে বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী। বিকাল ৩টায় রংপুর জিলা স্কুলের জনসভার উদ্দেশে রওনা হবেন। সেখানে রংপুর বিভাগের বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিকাল ৫টা ২০ মিনিটে জনসভায় বক্তব্য প্রদান শেষে ক্যান্টনমেন্টে হেলিপ্যাডের উদ্দেশে সড়ক পথে রওনা দেবেন তিনি। সেখান থেকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জানা গেছে, ২০১১ সালের ৮ই জানুয়ারি রংপুর সফরে এসে জিলা স্কুল মাঠের জনসভায় রংপুরের উন্নয়নের দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী রংপুর সিটি করপোরেশন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ, নগরীর ভেতর দিয়ে চারলেন মহাসড়কসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড ইতিমধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে। কিছু উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে ব্যানার-ফেস্টুন ও সামাজিক যোগাযোগ এবং স্মারকলিপির মাধ্যমে নানা দাবি ও প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন রংপুরবাসী। এরমধ্যে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন, পাইপ লাইনে দ্রুত গ্যাস সরবরাহ, রংপুরে অর্থনৈতিক অঞ্চল, দ্বিতীয় বিসিক শিল্পনগরী ও ইপিজেড প্রতিষ্ঠা, শিল্পায়নে বিশেষ বিনিয়োগ, পীরগঞ্জের খালাশপীরের কয়লা উত্তোলন, এলেঙ্গা-রংপুর চারলেন মহাসড়কের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা, ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে এনে নৌ-পথে যোগাযোগ বৃদ্ধি, শ্যামপুর সুগার মিল চালু করা, রংপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, আন্তর্জাতিকমানের ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণসহ নানা দাবি উঠেছে।
রংপুর-৪ (পীরগাছা-কাউনিয়া) আসনের এমপি বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, প্রধানমন্ত্রী রংপুরবাসীর জন্য সুখবর নিয়ে আসছেন। তিনি প্রায় এক যুগ আগে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে জনসভায় রংপুরের উন্নয়নের দায়িত্ব নিয়েছিলেন এবং তা তিনি পালনও করেছেন। উত্তরবঙ্গের উন্নয়নে আমাদের অনেক কিছু চাওয়ার আছে। প্রধানমন্ত্রী সেগুলো নিজেই ঘোষণা দেবেন।