নির্বাচন কমিশনের অগণতান্ত্রিক বিধিনিষেধ সাংবাদিক সমাজ মানবে না : এম আবদুল্লাহ
প্রথম নিউজ, দেলোয়ার হোসেন ও বশির আহমেদ কাজল, গাজীপুর থেকে: বাংলাদেশ ফেডাারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)’র সভাপতি এম আবদুল্লাহ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাংবাদিকদের জন্যে নির্বাচন কমিশন যে নীতিমালা জারি করেছে তা প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, স্বাধীনভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালন এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ সংগ্রহ বাধাগ্রস্ত করতেই নির্বাচন কমিশন অযৌক্তি ও অগ্রহণযোগ্য নীতিমালা জারি করেছে। অনুমতি নিয়ে প্রবেশের বাধ্যবাধকতা এবং মোটর সাইকেল ব্যবহার, ১০ মিনিটের অধিক অবস্থান, লাইভ সম্প্রচার, একসঙ্গে দুই জনের অধিক সাংবাদিকের প্রবেশ, ভোট কর্মকর্তা, এজেন্ট ও ভোটারদের সঙ্গে কথা বলার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক। নির্বাচন কমিশনের নীতিমালা স্বাধীন সাংবাদিকতার পথ রুদ্ধ করার শামিল। অন্যায্য বিধিনিষেধ সাংবাদিক সমাজ মানবে না বলে মন্তব্য করেন বিএফইউজে সভাপতি।
আজ বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) সাংবাদিক ইউনিয়ন গাজীপুর (জেইউজি)’র বার্ষিক সাধারণ সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএফইউজে সভাপতি এসব কথা বলেন। সংগঠনে সভাপতি এইচ এম দেলোয়ারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ হেদায়েত উল্লাহ’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিএফইউজে’র মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএফইউজে’র সহসভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, প্রচার সম্পাদক মাহমুদ হাসান, ডিইউজের সহসভাপতি রাশেদুল হক, আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক সংসদ সদস্য হাসান উদ্দিন সরকার, জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. শফিকুল ইসলাম, মহানগর বিএনপির সাবেক আহবায়ক সালা উদ্দিন সরকার, বর্তমান সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক রাকিব উদ্দিন সরকার পাপ্পু, সিটি কাউন্সিলর ও মেয়র প্রার্থী আওয়ামী নেতা আবদুল্লাহ আল মামুন মন্ডল, জেইউজি’র নেতা শেখ আজিজুল হক, অধ্যাপক শামসুল হুদা লিটন, এস এম হাবিবুর রহমান, গাযী খলিলুর রহমান প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এম আবদুল্লাহ সাংবাদিক ইউনিয়ন গাজীপুরের সহসভাপতি ও দৈনিক নয়াদিগন্তের মহানগর প্রতিনিধি শেখ আজিজুল হকের ওপর বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, কোন সাংবাদিক তার সহকর্মীর ওপর এমন পৈশাচিক হামলা চালাতে পারে না। আমাদের মধ্যে মতভিন্নতা থাকবে কিন্তু সেটা হিংস্রতায় রূপ নেওয়া কোনভাবেই কাম্য নয়।
এম আবদুল্লাহ শীর্ষ দৈনিক প্রথম আলোর বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে রীতিমত যুদ্ধ ঘোষণার তীব্র সমালোচনা করে বলেন, কোন সরকার প্রধান যখন একটি সংবাদ প্রতিষ্ঠানকে প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করান তখন বুঝতে হবে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। প্রথম আলো অফিসে দুর্বৃত্তের হানা প্রমান করে পেশী শক্তি দিয়ে স্বাধীন সাংবাদিকতাকে বাধাগ্রস্ত করাই ক্ষমতাসীনদের লক্ষ্য। বিএফইউজে সভাপতি দেশে সংবাদমাধ্যমে বিরাজমান ঘোর দুর্দিন, সাংবাদিক হত্যা, নির্যাতন, নিপীড়নের চিত্র তুলে ধরে এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্যে দেশে গণতন্ত্র ফেরানোর সংগ্রামকে শানিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বিএফইউজে’র মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে সাংবাদিক নির্যাতন, নিপীড়ন ও সংবাদমাধ্যম দলন সাধারণ নিয়মে পরিনত হয়েছে। একের পর এক সাংবাদিক হত্যা হয়, নির্যাতন হয় কিন্তু বিচার হয় না। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে প্রথম আলো সম্পাদক ও পত্রিকার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে যেভাবে রাষ্ট্রীয় খড়গ নেমে এসেছে তা ধারাবাহিক দমন-নিপীড়নেরই অংশ। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।