নোবিপ্রবির শিক্ষিকা তৃষার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও অসদাচরণের অভিযোগ

অভিযোগে জানা গেছে, তৃষা সাহা ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হলেও কোনো শিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত নেই। বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ২য় টার্মের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি হয়েও নেননি ফাইনাল ভাইভা পরীক্ষা।

নোবিপ্রবির শিক্ষিকা তৃষার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও অসদাচরণের অভিযোগ
নোবিপ্রবির শিক্ষিকা তৃষার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও অসদাচরণের অভিযোগ

প্রথম নিউজ, নোয়াখালী : নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস (এমআইএস) বিভাগের  সহকারী অধ্যাপক তৃষা সাহার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে ওই বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. জিয়াউল হক উপচার্য ও ডিন বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে জানা গেছে, তৃষা সাহা ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হলেও কোনো শিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত নেই। বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ২য় টার্মের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি হয়েও নেননি ফাইনাল ভাইভা পরীক্ষা। এ ছাড়া তিনি স্বেচ্ছাচারী মনোভাব নিয়ে একাডেমিক কমিটির পর পর চারটি সভায়ও উপস্থিত হননি। তাকে এ ব্যাপারে বলা হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের সামনে এমআইএস বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. জিয়াউল হকসহ শিক্ষকদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক বলেন, শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ভাইভা বোর্ড থেকে তৃষা সাহাকে অযোগ্য বলে বের করে দেওয়া হয়। পরে বিভিন্ন উপায়ের মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়ায় তার মধ্যে সেই অযোগ্যতা এখনো বিদ্যমান আছে। না হলে একজন শিক্ষক কীভাবে বিভাগের সব শিক্ষা কার্যক্রমে অনুপস্থিত থাকেন। কেননা তার ভেতরে শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা এখনো গড়ে ওঠেনি। সে কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক হওয়ার মতো যোগ্য নয়। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, মিডিয়াম অব ইনস্টাকশন ইংলিশ হলেও তিনি ইংরেজি বলতে পারেন না। ক্লাসে কি পড়ান আমরা তা বুঝি না। অন্যান্য ব্যাচের ভাইভা পরীক্ষা সম্পন্ন হয়ে গেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন কোর্সসমূহের পরীক্ষক হিসেবে সেমিস্টার ফাইনালের মার্কসসমূহ জমা না দেওয়ায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফল প্রকাশ করতে পারছেন না শিক্ষকবৃন্দ। এতে আমরা দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছি। দ্রুত আমাদের ফল প্রকাশের দাবি জানাচ্ছি।

সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. জিয়াউল হক বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ নিষেধও শোনেন না তৃষা সাহা। স্বেচ্ছাচারীভাবে সব নোটিশও উপেক্ষা করে আসছেন। ছুটি না নিয়ে দিনের পর দিন অনুপস্থিত রয়েছেন। তার খামখেয়ালিতে আটকে আছে শিক্ষার্থীদের ফল। এতে স্থবির হয়ে পড়েছে বিভাগের শিক্ষা-কার্যক্রম। বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করে ও তার স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ করা যাচ্ছে না। তাই বিষয়টি চাকরি বিধিমালা পরিপন্থী হওয়ায় লিখিতভাবে অভিযোগ করা হয়েছে। আমার আগের চেয়ারম্যানের সময় থেকেই তৃষা সাহা এমন স্বেচ্ছাচারিতা করছেন, যা চিঠি আকারে উপাচার্যকে অবগত করা হয়েছে।

অভিযুক্ত তৃষা সাহাকে ফোন করলে প্রথমে তিনি ব্যস্ত রয়েছেন বলে দুই ঘণ্টা পর ফোন দিতে বলেন। দুই ঘণ্টা পর বলেন, এ ব্যাপারে আমি কোনো মন্তব্য করতে রাজি নই। এর কিছুক্ষণ পর ফোন করে জানান, অভিযোগের ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। এর পর হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করে তার বিরুদ্ধে একটি মহল মিথ্যা ষড়যন্ত্র করছে এবং আনিত অভিযোগগুলো মিথ্যা বলে দাবি করেন।

এ বিষয়ে জানতে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়র উপাচার্য ড. মো. দিদার উল আলমকে ফোন দিলে ডেপুটি রেজিস্ট্রার খালেদ মেহেদী রিসিভ করে বলেন, ‘স্যার ব্যস্ত আছেন পরে ফোন করেন।’ পরে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ ব্যাপারে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন এসএম মাহবুবুর রহমানকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

যোগাযোগ করা হলে অধ্যাপক এসএম মাহবুবুর রহমান বলেন, অভিযোগে অনেক বিষয় থাকায় তদন্তে সময় লাগছে। অচিরেই প্রতিবেদন দাখিল করে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হবে।

 Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: