নতুন ইতিহাস গড়লো ভারত, চাঁদে অবতরণ করেছে চন্দ্রযান-৩

চাঁদে সফলভাবে অবতরণ করেছে চন্দ্রযান-৩।

নতুন ইতিহাস গড়লো ভারত, চাঁদে অবতরণ করেছে চন্দ্রযান-৩

প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: নতুন ইতিহাস গড়লো ভারত। চাঁদে সফলভাবে অবতরণ করেছে চন্দ্রযান-৩। এর মধ্যদিয়ে বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসেবে চাঁদে মহাকাশযান পাঠালো ভারত। এর আগে শুধুমাত্র সোভিয়েত ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন এই কৃতিত্ব দেখাতে পেরেছিল। তবে উপরের তিন দেশকে ছাপিয়ে নতুন একটি রেকর্ড গড়েছে ভারত। এর আগে কোনো দেশই পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহের দক্ষিণ মেরু জয় করতে পারেনি। তবে ভারতের চন্দ্রযান-৩ প্রথমবারের মতো চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করেছে। 

এদিকে দেশের এই গৌরবের মুহূর্তে ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় অবস্থান করছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখান থেকেই তিনি বার্তা দিয়েছেন। এতে তিনি বলেন, আমার প্রিয় পরিবারের সদস্যরা যখন নিজেদের চোখের সামনে এরকম ইতিহাস তৈরি হতে দেখি, তখন জীবন ধন্য হয়ে যায়। এরকম ঐতিহাসিক ঘটনা রাষ্ট্রের জন্য গর্বের বিষয়। এই মুহূর্তটা অবিস্মরণীয়। 

বুধবার ভারতীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা বেজে ৪ মিনিটে অবতরণ করে চন্দ্রযান চাঁদের মাটিতে। ঠিক শেষ এক কিলোমিটারে ইসরোর সঙ্গে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। চাঁদের মাটি ছুঁতেই হাততালি দিয়ে ওঠেন মোদি। তার পর তাকে দেখা যায় ভারতের পতাকা দোলাতে। এর কিছুক্ষণ পরে শুরু হয় তার বক্তৃতা। চন্দ্রযান-৩ এর সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানী এবং ১৪০ কোটি ভারতবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে মোদি বলেন, আমরা ভারতে পৃথিবীকে মা বলি আর চাঁদকে বলি মামা। ভারতের শিশুদের মায়েরা এতদিন বলে এসেছেন, ‘চন্দামামা দূর কি হ্যায়’ (ওই দূরে চাঁদমামা)। আমার বিশ্বাস খুব শিগগিরই ভারতের আগামী প্রজন্মের শিশুরা বলবে ‘চন্দামামা ট্যুর কি হ্যায়’ (চাঁদমামা বেড়ানোর জায়গা)।’

এ ছাড়া ইংরেজিতেও ভাষণ দেন মোদি। তিনি বলেন, এই জয় শুধু ভারতের নয়। আমরা এক বিশ্বে বিশ্বাস করি। এক মানবজাতির সাফল্যে বিশ্বাস করি। আমাদের চন্দ্র অভিযানেও রয়েছে সেই একই মানবতার লক্ষ্য। তাই এই সাফল্য সমগ্র মানবজাতির জয়। ভারতের এই সাফল্য অন্য দেশের চন্দ্রাভিযানেও ভবিষ্যতে সাহায্য করবে। চন্দ্রযান-৩ এর যাত্রা শুরু হয়েছিল চন্দ্রযান-২ এর ব্যর্থতার কাহিনীকে মাথায় রেখেই। তাই বুধবার শেষ বেলায় এসেও ইসরোর ‘ওয়ার রুমে’ ছিল জমাট বাঁধা উৎকণ্ঠা। আবার একই সঙ্গে সাফল্যের আশা এবং উদ্দীপনাও।

এই মিশনের মধ্যদিয়ে রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সঙ্গে মহাকাশ দৌড়ে নতুন প্রতিযোগী হিসেবে যুক্ত হলো ভারত। চাঁদের দক্ষিণ মেরু বিজ্ঞানীদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন, এই মেরুতে বিপুল পরিমাণ পানি বরফ হয়ে জমা রয়েছে। ভবিষ্যতে চাঁদকে মহাকাশ অভিযানের প্রধান ঘাঁটিতে পরিণত করতে চায় দেশগুলো। তখন এই পানি অনেক প্রয়োজন পড়বে। মহাকাশযানের জ্বালানি কিংবা মহাকাশচারীদের খাওয়ার জন্যও এই পানি ব্যবহার করা যাবে।