Ad0111

নাটকীয় জয়ে চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা

১৫২ রান তাড়া করতে গিয়ে শুরুতেই ধাক্কা খায় বরিশাল

নাটকীয় জয়ে চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা
নাটকীয় জয়ে চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা

প্রথম নিউজ, ঢাকা: ফরচুন বরিশালের খেলোয়াড় ও টিম ম্যানেজমেন্টের সদস্যরা প্রস্তুত ছিলেন। জয়সূচক রানের সঙ্গে সঙ্গেই জয়োল্লাসে মাঠে নেমে পড়বেন তারা। কিন্তু মিরপুর শেরেবাংলার গ্যালারি সাক্ষী হলো নাটকীয়তার। ফাইনালে পেন্ডুলামের মতো দুলছিল দু’দলের ভাগ্য। রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে শেষ বলে ১ রানের জয়ে ফের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস। বিপিএলে এটি কুমিল্লার তৃতীয় শিরোপা।  ১৫২ রান তাড়া করতে গিয়ে শুরুতেই ধাক্কা খায় বরিশাল। ফর্মের তুঙ্গে থাকা মুনিম শাহরিয়ার রানের খাতা খোলার আগেই নেন বিদায়। দলীয় ৫ রানে শহিদুল ইসলামের বলে ক্যাচ তুলে দেন ফাফ ডু প্লেসির হাতে। তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামেন সৈকত আলী। সৈকত একাদশে আসেন জিয়াউর রহমানের জায়গায়। জিয়াউর চলতি আসরে কোয়ালিফায়ারসহ খেলেছেন ৯ ম্যাচ। এদিন রিভিউ নিয়ে জীবন পাওয়ার পর সৈকত হয়ে ওঠেন মারমুখী। ফিফটি পার করার পর বাউন্ডারির দিকে না ঝুঁকে মনোযোগ দেন সিঙ্গেলসে। টানা দুই ওভার বাউন্ডারিহীন কাটানোর পর তানভীর ইসলামের করা দশম ওভারের চতুর্থ বলে আউট হয়ে যান সৈকত। ৩৪ বলে ৫৮ রান করেন তিনি। ইনিংসটি সাজান ১১টি চার ও এক ছক্কায়।

শেষ ১০ ওভারে জয়ের জন্য বরিশালের প্রয়োজন ছিল ৭১ রান। সৈকতের বিদায়ের পর হাত খুলে খেলা শুরু করেন গেইল। মঈন আলীকে ছক্কা হাঁকিয়ে আভাস দেন তিনি। পরের ওভারে তানভীর ইসলামকে মারেন একটি করে চার-ছয়। তবে বেশিদূর এগোতে পারেননি গেইল। ১৩তম ওভারে গেইলকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন তার স্বদেশি অফস্পিনার সুনীল নারাইন। ৩১ বলে এক চার ও দুই ছক্কায় ৩৩ রান করেন গেইল। গেইলের বিদায়ের পর উইকেটে আসেন অধিনায়ক সাকিব। কিন্তু আসরে টানা পাঁচ ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতে ইতিহাস গড়া ফরচুন বরিশাল অধিনায়ক ফাইনালে ব্যাট হাতে থাকলেন নিস্প্রভ। কুমিল্লার বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলামের বলে দারুণ ক্যাচ লুফে সাকিবকে সাজঘরে ফেরান মোস্তাফিজুর রহমান। বল হাতে চার ওভারের স্পেলে ২৪ রানে দুই উইকেট নেন তানভীর। পরে সুনীল সাজঘরে ফেরান আরেক স্বদেশী তারকা ডোয়াইন ব্রাভোকে। এতে জেগে ওঠে ভিক্টোরিয়ানরা। চার ওভারের স্পেলে মাত্র ১৫ রানে দুই উইকেট নেন নারাইন। মোস্তাফিজও নেন এক উইকেট। সর্বাধিক ১৯ উইকেট নিয়ে আসর শেষ করলেন মোস্তাফিজ। শেষ ওভারে ১০ রানের দরকার ছিল বরিশালের। পেসার শহিদুল ইসলাম শেষ পর্যন্ত রুদ্ধশ্বাস জয় এনে দেন বরিশালকে।

বিপিএলের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে সুনীল নারাইনের ব্যাটিং তাণ্ডবে উড়ে যায় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে ফাইনালেও ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন নারাইন। কিন্তু তার বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের পরেও বড় পুঁজি গঠনে ব্যর্থ হয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস। ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৫১ রানে। সপ্তম উইকেটে মঈন আলী-আবু হায়দার রনির ৫৩ রানের জুটিতেই মূলত দেড়শ’র কোঠায় পৌঁছে কুমিল্লার সংগ্রহ। শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ফাইনালে টসে জিতে ব্যাটিং নেন কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। চার-ছক্কার ফুলঝুরিতে প্রথম দুই ওভারেই ৩৬ রান তুলে ফেলেন সুনীল নারাইন। আগের ম্যাচে ১৩ বলে ফিফটি হাঁকানো নারাইন এবার পঞ্চাশ পূর্ণ করেন ২১ বলে। বিপিএলের ফাইনালে যা দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড। ষষ্ঠ ওভারে মেহেদী হাসান রানার প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকান নারাইন। দ্বিতীয় বলেও উড়িয়ে মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ধরা পড়েন নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে। ২৩ বলে ৫৭ রানের ইনিংসটি তিনি সাজান সমান ৫টি করে চার-ছক্কায়।

আরেক ওপেনার লিটন দাস সুবিধা করতে পারেননি। ৪ রান করে সাকিব আল হাসানের বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে লিটন ফেরেন সাজঘরে। তবে দলীয় ৬৯ রানে নারাইনের বিদায়ের পরেই মূলত ধস নামে কুমিল্লার ব্যাটিংয়ে। ১০ রানের ব্যবধানে আউট হন মাহমুদুল হাসান জয় ও ফাফ ডু প্লেসি। ৭ বলে ৮ রান করা জয় কাটা পড়েন রানআউটে। মুজিব উর রহমানের বলে রিটার্ন ক্যাচে ফেরেন ডু প্লেসি (৪)। দলীয় ৯৪ রানে অধিনায়ক ইমরুল কায়েসকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান ব্রাভো। ১২ বলে ইমরুলের সংগ্রহ ১২ রান। উইকেটে এসে থিতু হওয়ার আগেই আরিফুল হককে (০) বোল্ড করেন মুজিব। প্রথম ওভারে ১৮ রান খরচ করা মুজিব ৪ ওভার শেষে ২৭ রানে নিলেন ২ উইকেট। অধিনায়ক সাকিব ৪ ওভারের কোটা শেষ করেন ৩০ রান খরচায়।

৯৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বসা কুমিল্লার শেষ ভরসা ছিলেন মঈন আলী। দেখে-শুনে খেলছিলেন মঈন। আগের ম্যাচে ১৩ বলে ৩০* রানে অপরাজিত থাকা এই ইংলিশ অলরাউন্ডার এবার প্রথম ১৫ রান করেন ১৯ বলে। ২১তম বলে হাঁকান প্রথম বাউন্ডারি। শেষ পর্যন্ত ৩২ বলে ৩৮ রান করে রানআউট হন ইনিংসের শেষ ওভারে। তার ইনিংসটিতে ছিল দুই চার ও এক ছক্কার মার। আবু হায়দার রনির অবদান কম নয়। দলের পক্ষে তৃতীয় সর্বোচ্চ রান এই পেসারের। ২৭ বলে একটি করে চার-ছয়ে ১৯ রান করেছেন রনি। শফিকুল ইসলামের করা ২০তম ওভার থেকে মাত্র ৩ রান তুলেছে কুমিল্লা। উইকেট হারিয়েছে ৩টি। ৪ ওভারে ৩১ রানে ২ উইকেট নেন পেসার শফিকুল।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom

 

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

This site uses cookies. By continuing to browse the site you are agreeing to our use of cookies & privacy Policy from www.prothom.news