দিল্লিতে তীব্র গরম, হিটস্ট্রোকে ৫ জনের মৃত্যু

দিল্লিতে তীব্র গরম, হিটস্ট্রোকে ৫ জনের মৃত্যু

প্রথম নিউজ, ডেস্ক: তীব্র গরমে গত দুই দিনে ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লিতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। তাছাড়া কমপক্ষে ১২ জন দিল্লির রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন। সেই সঙ্গে দিল্লির অন্যান্য হাসপাতালেও হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছেন অনেকে।

ভারতের রাষ্ট্র-পরিচালিত হাসপাতালের মেডিকেল সুপারিনটেনডেন্ট ডা. অজয় ​​শুক্লা বলেছেন, সোমবার ও মঙ্গলবার (১৮ জুন) হিটস্ট্রোক করার পরে ২২ জনকে ভর্তি করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে পাঁচজন রোগী মারা গেছেন ও ১২-১৩ জন রোগী ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রয়েছেন।


গত বেশ কিছুদিন ধরে ভারতের নয়া দিল্লির ওপর দিয়ে ভয়াবহ তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে চিকিৎসকরা বারবার সতর্ক করে দিচ্ছেন যে হিটস্ট্রোকের ক্ষেত্রে মৃত্যুর হার বেশ বেশি, যা প্রায় ৬০-৭০ শতাংশ। রোগীকে হাসপাতালে দেরি করে আনা হলে, মৃত্যুর সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। আর এই রোগীদের বেশিরভাগই হলেন বাইরে কাজ করা শ্রমিকরা।

ডা. শুক্লা বলেন, হিটস্ট্রোক সম্পর্কে ব্যাপক সচেতনতা ছড়ানো দরকার। হাসপাতালে ছুটে যাওয়ার পরিবর্তে, তাৎক্ষণি কীভাবে হিটস্ট্রোক করা কোনো ব্যক্তির শরীর ঠান্ডা করানো যায়, তা শেখাতে হবে। রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় পানি ও বরফ ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া রোগীকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে আনা হলেও বাঁচানো যেতে পারে।

প্রায় এক মাস ধরে অবিরাম তাপপ্রবাহে ভুগছেন দিল্লির বাসিন্দারা। শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে দাঁড়িয়েছে, যা স্বাভাবিকের ‍তুলনায় কয়েক ডিগ্রি বেশি। অন্যদিকে, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। এমন পরিস্থিতিতে গভীর নলকূপের পানিও দিনভর গরম থাকছে। এমনকি, শীতাতপ নিয়ন্ত্রক (এসি) ব্যবহার করেও ঘর শীতল করা যাচ্ছে না।

আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তর ভারতের বেশিরভাগ অংশে তাপপ্রবাহের অবস্থা একই রকম থাকতে পারে। এই সময়ের পরে তাপমাত্রা হ্রাস পেতে পারে।

দিল্লি-ভিত্তিক থিঙ্কট্যাঙ্ক সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের (সিএসই) সাসটেইনেবল হ্যাবিট্যাট প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক রজনীশ সরিন বলেছেন, দিল্লির মতো বড় শহরগুলোতে নির্মাণ ও কংক্রিটকরণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। কংক্রিটের ভবনগুলো দিনে তাপ শোষণ করে ও রাতে ছেড়ে দেয়। এ কারণেই বড় শহরগুলোতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বাড়ছে।


‘এর আগে দিনের তাপমাত্রা বাড়লেও রাতে কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যেতো। কিন্তু আজকাল নির্মাণকাজ বাড়তে থাকা ও সবুজ এলাকা হ্রাস পাওয়ায় সেই স্বস্তিটুকুও মিলছে না। এমনকি, এসিও বিস্ফোরিত হচ্ছে। মনে রাখতে হবে, উঁচু ভবন নির্মাণও বায়ুর চলাচলে প্রভাব ফেলে। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের উচিত, কংক্রিটের ব্যবহার হ্রাস করা।’