দাম কমেনি কাঁচা মরিচের, টমেটোও আকাশছোঁয়া
টমেটো এখন প্রতিকেজি ৩০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে কাঁচা মরিচের দাম কমেনি; খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৬০ টাকা কেজি দরে।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: ঈদুল আজহার আগে থেকে সরবরাহ অপর্যাপ্ত হওয়ায় বাজারে কাঁচা মরিচ ও টমেটোর দাম বাড়ছে। টমেটো এখন প্রতিকেজি ৩০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে কাঁচা মরিচের দাম কমেনি; খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৬০ টাকা কেজি দরে।
রাজধানীর শান্তিনগর বাজারে সবজি বিক্রেতা নাজির আমিন বলেন, দুদিন আগে টমেটো বিক্রি করেছি ২২০ টাকা কেজি, আজ ৩০০ টাকা। কাঁচা মরিচের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে টমেটোর দামও। দাম এত বেশি কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ দুই পদের মৌসুম শেষ। বাজারে দেশি টমেটো নেই। দেশি মরিচেরও সরবরাহ কম। তাই দাম বেশি।
এদিকে কারওয়ান বাজারে পাইকারি বিক্রেতা আমিনুল মোমেনিন বলেন, কাঁচা মরিচ ও টমেটোর দাম ভারতেও হু হু করে বাড়ছে। আর দেশে বৃষ্টির কারণে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কম। তাই ভারতের মরিচের তুলনায় বাংলাদেশের মরিচের দাম আরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারে ভারতীয় টমেটো বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২৪০ টাকায়। একটু নিম্নমানের টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায়। খুচরা বাজারেও কিছুটা নিম্নমানের টমেটো ২০০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে।
অন্যদিকে কারওয়ান বাজারে পাইকারিতে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৬০ কেজি দরে। কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা কালাম মিয়া বলেন, আমদানি খরচ বেশি। এছাড়া ঈদের কারণে চাহিদা বেড়েছে, সেই তুলনায় মরিচের সরবরাহ নেই বললেই চলে। তাই বাজারে দামও বেশি।
কারওয়ান বাজারের পাইকারি কাঁচা মরিচ ব্যবসায়ী আবদুল বাসেদ মোল্লা জানান, এখন প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) ভারতের মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ টাকায়। অর্থাৎ কেজি পড়ছে ৩২০ টাকা। গতকাল (বুধবার) মরিচের দাম ১৮০০ টাকা ছিল। সে হিসাবে পাইকারিতে দাম সামান্য কিছুটা কমেছে।
বাসেদ মোল্লা বলেন, ভারতের মরিচ সামান্য পরিমাণে আমদানি হয়েছে। বৃষ্টির কারণে দেশি মরিচের সরবরাহ অনেক কম। এ কারণে দুদিন ধরে দাম বেড়ে গেলো। ঈদের পরপরই মরিচের দাম পাইকারিতে ২০০ টাকায় নেমেছিল। এনামুল হক নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, কাঁচামালের দাম সরবরাহের ওপর ওঠানামা করে। ঈদের পর পর এক পাল্লা মরিচ তিন হাজার টাকায় উঠেছিল। এখন অর্ধেকে নেমেছে।
দেশে কয়েক সপ্তাহ ধরে কাঁচা মরিচের দামে অস্থিরতা চলছে। ঈদের আগে হঠাৎ কাঁচা মরিচের অস্বাভাবিক দাম বেড়ে যাওয়ায় আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। তখন দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। এরপর ঈদের ছুটিতে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় আবারও বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছিল। ফলে গত রোববার থেকে আবারও মরিচ আমদানি শুরু হয়েছে, তাতে দাম কিছুটা কমলেও একদিন বাদে বাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করা গেল। একই অবস্থা আমদানি হওয়া টমেটোর দামেরও।
এদিকে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাজধানীর কাঁচা মরিচের আড়তগুলোতে গভীর রাতে অভিযান চালিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। বুধবার (৫ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত অধিদপ্তরের দুটি টিম বাজারগুলোতে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে কাঁচা মরিচের আড়তে পাইকারি ক্রয় ও বিক্রয়মূল্য যাচাই করা হয়।
কারওয়ান বাজার, যাত্রাবাড়ী কাঁচা বাজার ও যাত্রাবাড়ী থ্রি স্টার সবজি বাজার এলাকায় এ কার্যক্রম পরিচালিত হয়। অভিযানে কারওয়ান বাজারে এক ঘণ্টার ব্যবধানে কেজিপ্রতি কাঁচা মরিচের পাইকারি দাম ২৫০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা বাড়তে দেখা যায়। অভিযানে পাইকারি মূল্য বেশি রাখা, মূল্যতালিকা প্রদর্শন না করা, ক্রয়-বিক্রয়ের ক্যাশমেমো ঠিকমতো প্রদর্শন না করায় দুটি প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।