থামছে না হাওরের কান্না
পানি বেড়ে হাওর তলিয়ে যাওয়ায় ফসল হারিয়ে কাঁদছেন সুনামগঞ্জের কৃষকরা। অনিয়ম-দুর্নীতি করে দুর্বল বাঁধ নির্মাণের বিষয় নিয়ে চলছে তোলপাড়।
প্রথম নিউজ, নেত্রকোনা: চারদিন আগেও ধানে ধানে সবুজ ছিল যে হাওড়টি এখন পানিতে তলিয়ে জলমগ্ন হয়ে ঢেউ খেলছে, কচুরিপানা ভাসছে হাওড়ের বুকে। সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনার হাওরের কৃষক। পানি বেড়ে হাওর তলিয়ে যাওয়ায় ফসল হারিয়ে কাঁদছেন সুনামগঞ্জের কৃষকরা। অনিয়ম-দুর্নীতি করে দুর্বল বাঁধ নির্মাণের বিষয় নিয়ে চলছে তোলপাড়। গত ২৪ ঘণ্টায় নদ-নদীতে পানি কিছুটা কমেছে। আসাম ও মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি না হলে পানি বাড়ার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা। তবুও আতঙ্ক কাটেনি হাওরের কৃষকের। দুর্বল বাঁধ ভেঙে ফসল তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন তারা।
পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জের ধর্মপাশার ক্ষতিগ্রস্ত চন্দ্রসোনার থাল হাওর পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি বলেন, হাওরের বাঁধের কাজে অনিয়মের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় নেই। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। কমিটি সুনামগঞ্জে এসে সুষ্ঠু তদন্ত করবে। হাওরের বাঁধের কাজে কোনো সরকারি কর্মকর্তা কিংবা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) অনিয়মে জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া নেওয়া হবে।
বুধবার রাত পর্যন্ত জেলার প্রায় দেড়শ ছোট-বড় হাওরের মধ্যে ১২টির ফসল উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে ডুবেছে। বেশিরভাগ হাওরে পানি ঢুকেছে বাঁধ ভেঙে। সুনামগঞ্জ শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সুরমা নদীর ষোলোঘর পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার দশমিক ৫৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।এদিকে নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলার হাওরের কীর্তনখোলা বেড়িবাঁধ মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আতঙ্ক বেড়েই চলেছে। খালিয়াজুরী ইউএনও এ এইচ এম আরিফুল ইসলাম জানান, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, পাউবো ও এলাকাবাসী বাঁধে রয়েছে। স্থানীয় কৃষকদের সহায়তায় বাঁশ, কাঠ, মাটি দিয়ে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
অপরদিকে কিশোরগঞ্জ পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম বলেন, দুই দিন আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং কোথাও বৃষ্টিপাত না হওয়ায় বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা পর্যন্ত হাওরে তিন থেকে সাড়ে তিন সেন্টিমিটার পানি কমেছে।আবহাওয়া অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে ইটনা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা উজ্জল সাহা জানান, আগামী ৭২ ঘণ্টায় মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে তেমন বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। তাই জেলার ধনু, সুরমা, বাউলাই, কালনীসহ প্রধান নদীগুলোর পানি সার্বিকভাবে কমতে পারে।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews