তাজরীন গার্মেন্টসে অগ্নিকাণ্ড: মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ পেছালো
প্রথম নিউজ, ঢাকা : তাজরীন গার্মেন্টসে অগ্নিকাণ্ডে ১১১ শ্রমিক নিহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় প্রতিষ্ঠানটির মালিক দেলোয়ার হোসেনসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ পিছিয়েছে। সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১৯ জুলাই নতুন দিন ধার্য করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৩০ মে) মামলাটিতে সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু এদিন কোনও সাক্ষী না আসায় ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দিলারা আলো চন্দনা ৯ জুলাই সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী দিন ধার্য করেন। মামলায় ১০৪ জন সাক্ষীর মধ্যে এ পর্যন্ত ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।
২০১৩ সালের ২২ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠানটির মালিক, ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক একেএম মহসিনুজ্জামান খান। ঘটনার এক বছর ২৮ দিন পর আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তিনি এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর ২০১৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।
মামলায় অভিযুক্ত আসামিরা হলেন– প্রতিষ্ঠানের মালিক দেলোয়ার হোসেন, চেয়ারম্যান মাহমুদা আক্তার, শামীম, স্টোর ইনচার্জ (সুতা) আল আমিন, সিকিউরিটি ইনচার্জ আনিসুর রহমান, সিকিউরিটি সুপারভাইজার আল আমিন, স্টোর ইনচার্জ হামিদুল ইসলাম লাভলু, অ্যাডমিন অফিসার দুলাল উদ্দিন, প্রকৌশলী এম মাহবুবুল মোর্শেদ, সিকিউরিটি গার্ড রানা ওরফে আনোয়ারুল, ফ্যাক্টরি ম্যানেজার আব্দুর রাজ্জাক, প্রোডাকশন ম্যানেজার মোবারক হোসেন মঞ্জুর ও শহীদুজ্জামান দুলাল।
মামলায় অভিযুক্ত আসামিদের মধ্যে আল আমিন, রানা, শামীম ও মোবারক হোসেন পলাতক। বাকি সব আসামি জামিনে রয়েছেন।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, কারখানা ভবনটি ইমারত নির্মাণ আইন মেনে করা হয়নি। শ্রমিকদের বের হওয়ার জন্য ভবনটিতে জরুরি বহির্গমন পথ ছিল না। তিনটি সিঁড়ির মধ্যে দুটি নিচতলার গুদামের ভেতরে এসে শেষ হয়েছে। ওই গুদামে আগুন লাগার পর শ্রমিকরা বের হতে চাইলে কারখানার ম্যানেজার শ্রমিকদের বাধা দিয়ে বলেন, আগুন লাগেনি। অগ্নিনির্বাপণের মহড়া চলছে। এরপর তিনি বের হওয়ার পথ বন্ধ করে দেন।
২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর তাজরীন গার্মেন্টসে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এতে ১১১ জন শ্রমিক আগুনে পুড়ে মারা যান। অন্যদিকে আহত হন আরও ১০৪ গার্মেন্টস শ্রমিক। গার্মেন্টসটিতে সে সময় ১ হাজার ১৬৩ জন শ্রমিক কাজ করতেন কিন্তু দুর্ঘটনার সময় ৯৮৪ জন শ্রমিক সেখানে কর্মরত ছিলেন। দুর্ঘটনায় নিহত ১১১ জনের মধ্যে তৃতীয়তলায় ৬৯ জন, চতুর্থ তলায় ২১ জন, পঞ্চম তলায় ১০ জন, পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন হাসপাতালে মারা যান ১১ জন। ৫৮ জনের লাশ শনাক্ত হওয়ায় তাদের আত্মীয়-স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বাকি ৫৩ জনের লাশ শনাক্ত না করতে পারায় তাদের জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হয়।