ঢাকায় সংঘর্ষে নিহত যুবকের পরিচয় পাওয়া গেছে
মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে এসে শাহজাহানের মরদেহ শনাক্ত করেন তার মা আয়েশা বেগম ও মামা মোসলেম উদ্দিন।
প্রথম নিউজ, অনলাইন: ঢাকার সায়েন্স ল্যাব এলাকায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা–কর্মীদের সঙ্গে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের মধ্যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের একজনের পরিচয় জানা গেছে। তার নাম মো. শাহজাহান (২৫)। তিনি নিউমার্কেট এলাকার হকার ছিলেন। মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে এসে শাহজাহানের মরদেহ শনাক্ত করেন তার মা আয়েশা বেগম ও মামা মোসলেম উদ্দিন। তারা জানান, শাহজাহানের বাড়ি কেরানীগঞ্জের মীরেরবাগ পোস্তগোলা এলাকায়। তার বাবার নাম মহসিন (মৃত)। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে শাহজাহান ছিলেন তৃতীয়। তিনি স্ত্রীকে নিয়ে কামরাঙ্গীরচরের চাঁন মসজিদ এলাকায় থাকতেন। আয়েশা বেগম হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেন, শাহজাহান নিউমার্কেট এলাকার বলাকা সিনেমা হলের সামনে পাপোশ বিক্রি করতেন। তিনি সকালে কাজে বের হতেন।
মঙ্গলবার বেলা ২টা থেকে সায়েন্স ল্যাব এলাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। ছাত্রলীগ–যুবলীগ নেতা–কর্মীরা ঢাকা কলেজের ফটকের সামনে আর আন্দোলনকারীরা সায়েন্স ল্যাব মোড়ের দিকে অবস্থান নিয়ে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। রাত আটটা পর্যন্ত সেখানে সংঘর্ষ চলে। এর মধ্যে সন্ধ্যায় শাহজাহানকে আহত অবস্থায় সিটি কলেজের সামনের রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। পথচারীরা উদ্ধার করে তাকে পপুলার মেডিকেলে নিয়ে যান। সেখান থেকে সন্ধ্যার পর ঢাকা মেডিকেলে আনলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, একজন অ্যাম্বুলেন্সচালক সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ওই যুবকের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ছেলেটিকে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই অ্যাম্বুলেন্সচালক আলী মিয়া বলেন, সিটি কলেজসংলগ্ন পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে ফোন পেয়ে তিনি সেখানে যান। সেখানকার লোকজন ছেলেটিকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসতে বলেন। তিনি ছেলেটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
সায়েন্স ল্যাব এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় শাহজাহান ছাড়া আরও এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। বিকেলে ঢাকা কলেজের সামনে একদল লোক ওই যুবককে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় বিকাল সোয়া ৫টার দিকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আনুমানিক ২৫ বছর বয়সী ওই যুবকের পরিচয় এখনো জানা যায়নি।
ওই এলাকায় সংঘর্ষের মধ্যে এই দুজনের মৃত্যুসহ অন্তত পাঁচ শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও শতাধিক শিক্ষার্থী। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের অবস্থান থেকে তাদের ওপর গুলিবর্ষণ করা হয়। এতে পাঁচ শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হন।