ঢাকায় মাসে ৪৯৮ নিখোঁজের জিডি, কতজন ফিরলেন জানে না পুলিশ
এ বিষয়ে পিবিআই প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার বলেন, নিহত হওয়ার ঘটনাগুলো আমরা গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করি। সব ঘটনারই জিডি থাকে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করি, যাতে বেওয়ারিশ মরদেহের পরিচয় ও মৃত্যুর কারণ জানা যায়।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: রাজধানীর কদমতলী থানার মুরাদপুর এলাকায় বসবাস করতেন মো. মাসুদ মোল্লা (৩৫)। পেশায় রাজমিস্ত্রি মাসুদ গত ১৭ মে বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। স্ত্রী নাদিয়া বেগম বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও মাসুদের কোনো সন্ধান পাননি। নিখোঁজের দুইদিন পর নাদিয়া কদমতলী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং-১২২১) করেন। প্রায় দুই মাস পার হতে চললেও এখনো মাসুদের কোনো খোঁজ পায়নি পুলিশ।
এ বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ইরান মোল্লা বলেন, নিখোঁজ মাসুদ যে মোবাইল ফোন নম্বর ব্যবহার করতেন তা এখনো বন্ধ। নিখোঁজের পর থেকে ফোন নম্বর বন্ধ থাকায় তার অবস্থান শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। কল ডিটেইলস রেকর্ডে (সিডিআর) আবেদন করেছি মাসুদের কল লিস্ট বের করার জন্য। কল লিস্ট হাতে পেলে তার সূত্র ধরে হয়তো তদন্ত এগিয়ে নিতে পারবো।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি ২৫ বছর বয়সী মাজহারুল ইসলাম। ঘটনার পরদিন মাজহারুলের বাবা মো. আলমগীর মোহাম্মদপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। একইভাবে গত বছরের ৭ জানুয়ারি রাজধানীর শনির আখড়ার বাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি মো. নজরুল ইসলাম। ঘটনার সাড়ে তিন মাস পর যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করে তার পরিবার। মামলাটির তদন্ত করছে ডিবির ওয়ারী বিভাগের ডেমরা জোনাল টিম।
রাজধানীর থানাগুলোতে প্রায় নিয়মিতই নিখোঁজ সংক্রান্ত সাধারণ ডায়েরি (জিডি) বা মামলা হয়। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তথ্যমতে, ২০২২ সালে রাজধানীতে নিখোঁজ সংক্রান্ত জিডি হয়েছে ৫ হাজার ৯৮৪টি। অর্থাৎ প্রতি মাসে গড়ে ৪৯৮টি নিখোঁজের জিডি হয়েছে।
গত ১০ জুন রাজধানীর মুগদা থানার দক্ষিণ মান্ডা এলাকায় বাসা থেকে চা খাওয়ার কথা বলে বের হন ৬১ বছর বয়সী কে এম আব্দুল কাইয়ুম। এরপর আর বাসায় ফেরেননি তিনি। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও কোনো সন্ধান না পেয়ে অবশেষে মুগদা থানায় জিডি করেন নিখোঁজের স্ত্রী জুড়িয়ানারা বেগম। ঘটনার এক মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো তার খোঁজ মেলেনি।
এ বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল কাইয়ুমের সঙ্গে ফোন বা কোনো ধরনের ডিভাইস ছিল না। তার অবস্থান কোথায়, সে বিষয়ে কোনো আলামত এখনো পাওয়া যায়নি। জুড়িয়ানারা বেগমের বোন নাজমুন নাহার বলেন, নিখোঁজের পর আমরা একটি নম্বর থেকে ফোন পেয়েছিলাম। সেসময় তার অসুস্থতার কথা জানালেও পরে আর কিছু বলেনি। এখনো তাকে পাওয়া যায়নি।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাছে নিখোঁজ জিডির পরিসংখ্যান থাকলেও ঠিক কতজন নিখোঁজ ব্যক্তি ফিরে এসেছেন সে বিষয়ে সঠিক তথ্য নেই। এর কারণ হিসেবে পুলিশ বলছে, নানা কারণে নিখোঁজের জিডি হয়। পরিবার থেকে নিখোঁজের জিডি করলেও অনেকে ফিরে আসার পর তারা পুলিশকে জানায় না। ফলে ঠিক কতজন নিখোঁজ ব্যক্তি ফিরে আসছেন সে বিষয়ে সঠিক তথ্য পাওয়া পুলিশের জন্য সম্ভব হয়ে ওঠে না।
ডিএমপির জনসংযোগ ও গণমাধ্যম শাখার উপ-কমশিনার (ডিসি) ফারুক হোসেন বলেন, এই (নিখোঁজ ব্যক্তি ফিরে আসা) পরিসংখ্যান করা অসম্ভব, বেশ কঠিন। কারণ কম বয়সী ছেলেমেয়ে যারা প্রেম করে চলে যায়, পরিবার জিডি করে। কিন্তু পরে যখন ফিরে আসে, সব স্বাভাবিক হয় তখন থানায় তা আর জানায় না। অভিমান করে বা নানা কারণে বাড়ি থেকে অনেকে চলে যান, পরে ফিরে আসলে তা জানায় না। এছাড়া রাজধানীতে গৃহকর্মী, গাড়িচালক, নিরাপত্তাকর্মীরা না জানিয়ে চলে গেলে থানায় জিডি হয়। এরপর তারা চলে এলে বা খোঁজ পাওয়া গেলেও অনেকেই সে বিষয়ে পুলিশকে জানায় না। ফলে নিখোঁজ ও তাদের ফিরে আসার বিষয়ে সঠিক পরিসংখ্যান করা সম্ভব হয় না।
রাজধানীতে নানা কারণে নিখোঁজের জিডি হয়। স্বজনদের কাউকে খুঁজে না পেলেই থানায় জিডি করে নিখোঁজের পরিবার। কম বয়সী ছেলেমেয়েরা প্রেমের কারণে পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে পরিবার থানায় জিডি করে, যা মূলত নিখোঁজ ক্যাটাগরিতে হয়। এছাড়া গৃহকর্মী, গাড়িচালক, নিরাপত্তাকর্মীরা না জানিয়ে চলে গেলে জিডি হয়। কেউ পরিবারের সঙ্গে রাগ করে বাসা থেকে চলে গেলেও হয় নিখোঁজ জিডি। প্রতিপক্ষের হাতে অপহরণের শিকার হলেও জিডি করা হয়। শুধু তাই নয়, কেউ আত্মগোপনে গেলেও পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় জিডি করা হয়। এছাড়া এতিমখানা বা কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে কেউ না বলে চলে গেলে, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও শিশু হারিয়ে গেলে জিডি হয়।
গত ২০ জানুয়ারি রাজধানীর গুলশানের আজাদ মসজিদ মাদরাসা থেকে নিখোঁজ হয় সাকিব আল হাসান আব্দুল্লাহ (১২) নামের এক শিশু। দুইদিন পর গুলশান থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন শিশুটির বাবা মো. আলাউদ্দিন শিকদার। ঘটনার প্রায় এক মাস পর ফিরে আসে সাকিব। এ বিষয়ে আলাউদ্দিন শিকদার বলেন, ছেলে হারানোর পর জিডি করি। পুলিশের কাছে ছেলের খোঁজ নিতে বারবার গিয়েছি। এরপর মাসখানেক পর ছেলে ফিরে এসেছে। বছরজুড়ে নানা কারণে যেসব নিখোঁজের জিডি হয় তার বিপরীতে সব তথ্য পুলিশের কাছে আসে না। তবে অপরাধী কিংবা জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার সন্দেহে যারা নিখোঁজ হন, তাদের বিষয়ে পুলিশের বিশেষ তৎপরতা চলে। তাদের খুঁজে বের করতে নানামুখী চেষ্টা চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নানা কারণে নিখোঁজের জিডি হয়। পরিবার থেকে নিখোঁজের জিডি করলেও অনেকে ফিরে আসার পর তারা পুলিশকে জানায় না। ফলে ঠিক কতজন নিখোঁজ ব্যক্তি ফিরে আসছেন সে বিষয়ে সঠিক তথ্য পাওয়া পুলিশের জন্য সম্ভব হয়ে ওঠে না
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) কেএম হাফিজ আক্তার বলেন, কেউ হারিয়ে যায়, কেউ চলে যায়। এক্ষেত্রে আমরা দেখি অপরাধী হলে তা নিয়ে আমরা চিন্তা করি। তবে এ ধরনের ঘটনা বেশি নয়। অনেক সময় দেখা গেলো কোনো মামলার আসামিকে ডিবি নিয়ে আসছে, সেটাও জিডি হতে পারে।
উদ্বিগ্ন স্বজনরা
নিখোঁজদের অনেকেই ফিরে এলেও সবাই যে ফিরেছেন তা নয়। দিন, মাস, বছর পার হয়ে গেলেও অনেকের খোঁজ এখনো মেলেনি। স্বজনদের ফিরে আসার অপেক্ষায় থাকা এসব পরিবার ভুগছে মানসিক অশান্তিতে। কেউ পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়েছেন, কেউবা ছোট্ট শিশুকে। কেউ হারিয়েছেন কৈশোর পেরোনো তরুণ কিংবা তরুণী, যাদের ছিল নানা স্বপ্ন। প্রিয়জনকে হারিয়ে স্বজনদের দিন কাটছে নানা উদ্বেগ, আশঙ্কায়।
২০১৭ সালের ২৬ আগস্ট নিখোঁজ হন কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইশরাক আহম্মেদ। ছুটিতে দেশে ফিরে ধানমন্ডির স্টার কাবাব রেস্টুরেন্টে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে রাতে বাসায় ফেরার পথে নিখোঁজ হন ইশরাক। এ ঘটনায় ধানমন্ডি থানায় জিডি করেন তার বাবা মো. জামাল উদ্দীন। প্রায় ৬ বছর পেরিয়ে গেলেও ছেলেকে এখনো ফিরে পাননি তিনি। জাগো নিউজকে জামাল উদ্দীন বলেন, ছেলেকে পাওয়ার জন্য সব ধরনের চেষ্টা করেছি, এখনো পাইনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সব সংস্থার কাছে গিয়েছি, কিন্তু তারা কোনো তথ্য দিতে পারেনি। মাত্র দুই সেমিস্টার শেষ হয়েছিল। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হতে চেয়েছিল ছেলেটা। সেই স্বপ্ন আর পূরণ হলো না। এখনো ছেলের অপেক্ষায় আছি, একদিন সে ফিরবে এ আশায়।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১২ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশে নিখোঁজ ও গুমের অভিযোগ পেয়েছে ১১৯টি। এসব অভিযোগের মধ্যে ১০৮টি নথিভুক্ত করেছে সংস্থাটি। অভিযোগগুলোর মধ্যে ২৮ জন নিখোঁজ ব্যক্তি ফিরে এসেছেন, ৩৪ জন মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন। বাকি ৫৭ জন এখনো নিখোঁজ। তবে নিখোঁজের অধিকাংশ ঘটনারই কোনো অভিযোগ পায় না মানবাধিকার কমিশন। ২০২১ সালের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুধু ২০২১ সালে সারাদেশে ১৬২টি নিখোঁজের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সংস্থাটিতে অভিযোগ এসেছে মাত্র ৮টি। ২০২২ সালে সারাদেশে ১৫৮টি নিখোঁজের ঘটনা ঘটেছে। এসময়ে সংস্থাটিতে অভিযোগ এসেছে হাতে গোনা কয়েকটি।
পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীতে মাসে ৪৯৮টি নিখোঁজের জিডি হলেও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ আসে হাতে গোনা কয়েকটি। মানুষের অসচেতনতা ও অজ্ঞতার কারণে এমনটা হচ্ছে বলে মনে করছে সংস্থাটি। তবে নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে পুলিশকে আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখা দরকার বলে মনে করে কমিশন।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) মো. আশরাফুল আলম বলেন, অভিযোগ এলে আমরা একটা পদক্ষেপ নেই মানুষ এটা জানে না। এর কারণ মানুষের অজ্ঞতা। আমাদের কাছে অভিযোগ এলে আমরা নিজ উদ্যোগেই পুলিশকে বলি। তারা আমাদের একটি প্রতিবেদন দেয়। তবে সরাসরি থানায় কোনো নিখোঁজের অভিযোগ এলে পুলিশকে দায়িত্ব নিয়ে সেটা খুঁজে বের করা উচিত।
গত ২৯ জুন রাজধানী হাজারীবাগের ব্যবসায়ী একলাস মিয়া নিখোঁজ হলে স্বজনরা থানায় জিডি করেন। পরদিন কামরাঙ্গীরচর থেকে একলাসের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা দুরন্ত বিপ্লব নিখোঁজ হওয়ার পর ৯ নভেম্বর (২০২২ সাল) তার ছোট বোন শাশ্বতী বিপ্লব জিডি করেন। ১৩ নভেম্বর বুড়িগঙ্গা নদী থেকে দুরন্তের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। রাজধানীতে নিখোঁজ মানুষের সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি বাড়ছে বেওয়ারিশ মরদেহ দাফনের সংখ্যাও। বেওয়ারিশ মরদেহ দাফন করা সংস্থা আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে ৪৪৩টি, ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ২৬৪টি বেওয়ারিশ মরদেহ দাফন করা হয়েছে।
বেওয়ারিশ মরদেহ নিয়ে থানা পুলিশের পাশাপাশি কাজ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সংস্থাটির সাইবার ক্রাইম অ্যান্ড ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাবের সার্জেন্ট মো. নাভিদ ইমতিয়াজ জানান, ২০২২ সালে দেশে এক হাজার ৯৩টি অজ্ঞাতপরিচয় মরদেহের মধ্যে ৩১৬ জনের পরিচয় শনাক্ত করেছে পিবিআই। বাকি ৭৮১টি মরদেহের পরিচয় অজানাই রয়ে গেছে। শনাক্ত মরদেহের ১১ দশমিক ৪৪ শতাংশ হত্যার শিকার। এছাড়া ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত উদ্ধার হওয়া ৫৬৯টি অজ্ঞাতপরিচয় মরদেহের মধ্যে পিবিআই ১৫৪ জনের পরিচয় শনাক্ত করেছে। বাকি ৪১৫ মরদেহের পরিচয় এখনো অজানা।
এ বিষয়ে পিবিআই প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার বলেন, নিহত হওয়ার ঘটনাগুলো আমরা গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করি। সব ঘটনারই জিডি থাকে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করি, যাতে বেওয়ারিশ মরদেহের পরিচয় ও মৃত্যুর কারণ জানা যায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খন্দকার ফারজানা রহমান বলেন, কোনো নাগরিক নিখোঁজ হলে প্রথমেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো উচিত। তাহলে কোনো নিখোঁজ ব্যক্তি যদি অপরাধও করেন, পুলিশ জানবে তিনি নিখোঁজ। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরও এ বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করতে হবে। প্রয়োজনে ছবিসহ কেন্দ্রীয়ভাবে একটি তালিকা রাখা উচিত, যাতে নিখোঁজ ব্যক্তিকে সহজে চিহ্নিত করা যায়।
মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) চেয়ারম্যান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, নিখোঁজ হওয়ার সংস্কৃতিটা বেশি দিনের নয়। আগে নিখোঁজের এমন অবস্থা ছিল না। এখন বিভিন্ন কারণে নিখোঁজের সংস্কৃতি খুব শক্তিশালী হয়েছে। নিখোঁজের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জড়িত থাকার অভিযোগও আসছে। অনেক মানুষ এখন ভাবতে শুরু করেছে যে এমনটা (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জড়িত) হয়। তবে এর সঙ্গে অন্য নিখোঁজের ঘটনাও আছে।
বছরজুড়ে নিখোঁজের জিডির যেই পরিসংখ্যান আসে তা প্রকৃত চিত্র নয় দাবি করে এই সিনিয়র আইনজীবী বলেন, অনেকেই নিখোঁজের জিডি করতে চান না। সাধারণত যারা একটু প্রভাবশালী তাদের নিখোঁজের জিডি হয়। প্রকৃতপক্ষে নিখোঁজের সংখ্যা আরও বেশি। নিখোঁজের এমন পরিস্থিতি আইনের শাসনের একটি দুর্বলতা। একটা মানুষ উধাও হয়ে গেলো, কীভাবে হলো, কেন হলো তার কোনো গুরুত্ব নেই। এ বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা দরকার। নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা খুবই বিপজ্জনক।