ডেঙ্গু সংক্রমণের হার বেড়ে ৩ গুণ, রোগী বেশি ১০ জেলায়

প্রথম নিউজ, অনলাইন: দেশে গত এক দিনে আরো ১৩৮ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এই সময়ে কারো মৃত্যুর তথ্য পাওয়া যায়নি। চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৪ হাজার ৬৯। ২০২৪ সালের একই সময়ে রোগী ছিল চার হাজার ৩১১ জন।
অর্থাৎ ২০২৪ সালের তুলনায় এবার ডেঙ্গুর প্রকোপ তিন গুণের বেশি।
জানুয়ারিতে ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় এক হাজার ১৬১ জন ও মৃত্যু ১০ জনের, ফেব্রুয়ারিতে আক্রান্ত ৩৭৪ জন ও মৃত্যু তিনজনের, মার্চে আক্রান্ত ৩৩৬ জন, এ মাসে কোনো মৃত্যু হয়নি। এপ্রিলে আক্রান্ত ৭০১ ও মৃত্যু সাতজনের, মে মাসে আক্রান্ত এক হাজার ৭৭৩ জন ও মৃত্যু তিনজনের।
১০ জেলায় রোগী বেশি
এদিকে দেশের ৬১ জেলায় এডিস মশা বাহিত রোগ ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে।
সংক্রমণ বেশি ১০ জেলায়। এর মধ্যে পাঁচটি উপকূলীয় জেলা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুমের সর্বশেষ পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে এ চিত্র পাওয়া গেছে।
উপকূলের পাঁচটি জেলা হলো কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, বরগুনা, বরিশাল ও পটুয়াখালী।
অন্য পাঁচ জেলা হচ্ছে ঢাকা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুমিল্লা, গাজীপুর ও চাঁদপুর। সারা দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের ৭৯ শতাংশ রোগী এই ১০ জেলার। মোট মৃত্যুর ৮৭ শতাংশ এসব জেলায়।
উপকূলের পাঁচ জেলায় আক্রান্ত ৪৫.৭৭ শতাংশ ও মৃত্যু ৪১.৪৮ শতাংশ। জয়পুরহাট, চুয়াডাঙ্গা ও সুনামগঞ্জে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যায়নি।
কীটতত্ত্ববিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কবিরুল বাশার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের গবেষণা ফোরকাস্টিং মডেল অনুযায়ী, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে বরগুনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, কক্সবাজার, গাজীপুর, পিরোজপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, চাঁদপুর ও মাদারীপুরে ব্যাপক হারে ডেঙ্গু ছড়াতে পারে। কারণ এসব জেলায় একদিকে এডিস মশার ঘনত্ব বেশি, অন্যদিকে ডেঙ্গু রোগী রয়েছে।’
অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেন, ‘কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব জ্যামিতিক হারে বেড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এ পর্যন্ত ঢাকায় আক্রান্ত তিন হাজার ১৩৭ জন, মৃত্যু ২৮ জনের। চাঁপাইনবাবগঞ্জ আক্রান্ত ৪৯০ জন, মৃত্যু শূন্য। কুমিল্লায় আক্রান্ত ৪৬৫ জন, মৃত্যু দুজনের। গাজীপুরে আক্রান্ত ৩২৭ জন, মৃত্যু শূন্য।
চাঁদপুরে আক্রান্ত ২৭৪, মৃত্যু শূন্য। কক্সবাজারে আক্রান্ত ৩৪০ জন, মৃত্যু শূন্য। চট্টগ্রামে আক্রান্ত ৫৫২ জন, মৃত্যু দুজনের। বরগুনায় আক্রান্ত তিন হাজার ৫৮৭ জন, মৃত্যু ছয়জনের। বরিশালে আক্রান্ত এক হাজার ১৯১ জন, মৃত্যু আটজনের। পটুয়াখালীতে আক্রান্ত ৭৭০ জন ও মৃত্যু একজনের।