প্রথম নিউজ, অনলাইন: সরকারের অনুমতি নিয়ে জামায়াতে ইসলামী ১০ জুন ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বড়সড় শোডাউন দিয়েছে। স্থানটিতে আওয়ামীলীগের গৃহপালিত বিরোধী দল জাপার যুবসংগঠন যুবসংহতির সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। যারা ৯ জুন ওই স্থানে গিয়েছিল তাদের চোখে পড়েছে যুবসংহতির পোষ্টার ফেস্টুন। গভীর রাতে সরকার যুবসংহতির সেই সম্মেলন বা সমাবেশ সেখান থেকে সরিয়ে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে পাঠিয়ে দিয়ে সেখানে জামায়াতের এই শোডাউন করার অনুমতি দেয়।
অবাক
কান্ড!মাত্র তিনদিন আগে সমাবেশের অনুমতি চাইতে গেলে যে দলটির চার নেতাকে নাশকতার অভিযোগে আটক করা হলো সেই দলটিকে এত সুবিধা দেওয়ার বিষয়টি রাজনীতি সচেতন মানুষের চোখে লেগেছে। যে দলটির শীর্ষ নেতাদের ফাঁসিতে লটকিয়ে সরকার আনন্দ উৎসব করেছে, গত ১০ টি বছর যাদের মাঠে নামতে দেয়নি এমনকি যে দলটি নিষিদ্ধ করার জন্য সরকার মামলা করেছে; এক রাতের মধ্যে এমন কি ঘটলো যে তাদের জামাই আদর দেওয়া হলো?
তবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের খুব চমৎকার একটা কথা বলেছেন ; বিএনপি এবার জামায়াতকে মাঠে নামিয়েছে।গ্রামদেশে একটা কথা খুব চালু আছে; চৈত্র মাসে গরু হারালে এমনটি হয়।মাঠের মালিক ওবায়দুল কাদের আর সেই মাঠ জামায়াতকে ইজারা দেয় বিএনপি।এটা একটা হাস্যকর ব্যপার নয় কি?অবশ্য গত ১৫ বছর যাবৎ এটাই চলে আসছে ; ওবায়দুল কাদের যেটা বলবে সেটাই ঠিক আর সবার কথা মিথ্যা। তবে যুক্তিসংগত কথা বলেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষি মন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। তিনি বলেন,'রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে’ জামায়াতকে ঢাকায় সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সামনে আরও অনেক কিছু দেখতে পাবেন।"
আমরা এই কথাটাই শুনতে চাচ্ছি। জামায়াতকে জনসভা করার অনুমতি দিয়েছে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে। আর রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত মানে সমঝোতা যা কিনা এতদিন জাতীয় পার্টির সঙ্গে ছিলো সেটা ঘুরে জামায়াতের দিকে ঝুঁকছে।এটাও ঠিক জামায়াতকে জোটে নিলে আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা শানিত হয়।ইতিপূর্বে আমরা দেখেছি ১৯৮৬ সালে জামায়াতকে সাথে নিয়ে এরশাদের সামরিক শাসনের অধীনে নির্বাচন করতে সমস্যা হয়নি।১৯৯৬ সালে বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে জামায়াতকে সাথে নিয়ে আন্দোলন করতে আওয়ামী লীগের কোনো সমস্যা হয়নি।
যখনই জামায়াতে ইসলামী বিএনপির সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধে তখনই তারা হয়ে যায় স্বাধীনতা বিরোধী আর যখন আওয়ামী লীগের সাথে গাঁটছড়া বাঁধে তখন হয় স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। সামনের দিনগুলোতে আরও অনেক চমকের আশায় থাকছি।
লেখক: আমিরুল ইসলাম কাগজী, বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিষ্ট ও লেথক (ফেইসবুক ওয়াল থেকে)