জিমন্যাস্টিক্সকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা কাওসারের!
প্রথম নিউজ, অনলাইন: বিদেশে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিতে গিয়ে আর ফেরেননি। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সাবেক কোচ মো. কাওসার ২০ বছর পর দেশে ফিরে জিমন্যাস্টিক্সকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। খেলাধুলার গতি বাড়ানোর পরিবর্তে রুদ্ধ করছেন তিনি-এমনটাই অভিযোগ সাবেক জিমন্যাস্টদের।
অভিযোগে আরও জানা যায়, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কর্তৃক নতুন কমিটি দেওয়ার আগেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে জিমন্যাস্টিক্স নিয়ে নানা কটূক্তি করছেন ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ে সুযোগ নেওয়া মো. কাওসার।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সাবেক কোচ মো. কাওসারের প্রোপাগান্ডার জবাবে আরেক সাবেক জাতীয় জিমন্যাস্ট, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কমিটির সহসভাপতি আহমেদুর রহমান বাবলু ফেসবুকে লেখেন, ‘একজন ভালো জিমন্যাস্ট ছিলেন মোহাম্মদ কাওসার। বেশ কয়েকবার সেরা জিমন্যাস্টও হয়েছেন। লেখাপড়া শেষ না করে খুব তাড়াতাড়ি কোচ হওয়ার জন্য পাতিয়ালায় চলে যান এবং পরে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কোচ হন। ১৯৯৪ সালে তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান দিপুকে জুতা দিয়ে আঘাতের মতো ধৃষ্টতাপূর্ণ কাজ করায় কাওসারের শাস্তি দাবি করে তার অপসারণ চায় জিমন্যাস্টিক্স পরিষদ, যা তৎকালীন মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার হয়। পরে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে কাওসারের চাকরি চলে যায়। ১৯৯৬ সালের পরবর্তী আওয়ামী সরকারের সময় নিজেকে একজন ফ্যাসিস্ট ঘরানার লোক হিসাবে পরিচয় দিয়ে ক্রীড়া পরষদে ফের চাকরি নেন। কিন্তু অবাক হলেও সত্যি যে, ২০০৪ সালে উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য যুক্তরাজ্যে মাসখানেকের জন্য পাঠানো হলে পালিয়ে যান মো. কাওসার। ফলে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চাকরি থেকে ফের অব্যাহতি দেওয়া হয় তাকে। বর্তমানে তিনি জিমন্যাস্টিক্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন এবং ফেডারেশনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ও নিজের বন্ধুদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।’
শুধু তাই নয়, কাওসার ক্রীড়াঙ্গনের কর্মকর্তাদের মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি ফেসবুকে অভিযুক্ত কাওসার লেখেন, ‘বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে ক্রীড়া কর্তৃপক্ষকে মামলার সম্মুখীন হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কাছে ক্রীড়ামোদিরা আশা করে ভবিষ্যতে বিতর্ক-বিহীন অবশিষ্ট ফেডারেশনগুলোর অ্যাডহক কমিটি শিগগিরই ঘোষণা করবেন।’
অভিযোগের বিষয়ে মোহাম্মদ কাওসার বলেন, ‘২০০৪ সালে ইংল্যান্ডে গিয়েছিলাম একটি কোর্স করতে, কিন্তু আমার বিরুদ্ধে মামলা হলে আর দেশে ফিরতে পারিনি। গত পাঁচ বছর জাতীয় জিমন্যাস্টিক্স প্রতিযোগিতা নেই। অথচ ক্রীড়া পদক ও পুরস্কার পাচ্ছেন কর্মকর্তারা। এটা আমাদের জাতির জন্য লজ্জাজনক।’
অভিযোগের বিষয়ে কাওসারের উত্তর বেশ প্রশ্নবিদ্ধ, ‘২০০৪ সালে ইংল্যান্ডে কোর্স করতে গেলে আমার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দেওয়া হয়েছিল। তাই দেশে ফিরতে পারিনি। হয়তো আমার আসাটা কেউ পছন্দ করেনি।’
একজন কোচের বিরুদ্ধে কেউ কেন হত্যা মামলা দেবে, তার কোনো উত্তর ছিল না তার কাছে। অভিযোগে আরও জানা যায়, গত ২০ বছরে নিজে লন্ডনে থাকার সময় ছেলে ও মেয়েকেও সেখানে স্থায়ী করেছেন কাওসার। যদিও তিনি এটিকে বৃত্তির বিষয় বলে চালিয়ে দিয়েছেন। একজন সরকারি কোচ বিদেশে গিয়ে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এমন ঘটনা আমার জানা নেই। তবে অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব। তার ব্যাপারে সব কিছু খতিয়ে দেখব।’