জবি শিক্ষার্থীদের সাথে সরকারকে আলোচনায় বসার আহ্বান সাকির

জবি শিক্ষার্থীদের সাথে সরকারকে আলোচনায় বসার আহ্বান সাকির

প্রথম নিউজ, অনলাইন: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে সরকারকে আলোচনায় বসার আহবান জানিয়ে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ছাত্র নেতারা রাষ্ট্র পরিচালনায় গিয়েছেন, উপদেষ্টা হয়েছেন। একজন উপদেষ্টাকে অসম্মান করা কোনভাবেই সমর্থন যোগ্য না। তাকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। কিন্তু আমরা উপদেষ্টাদের বলি আপনাদের আন্দোলন ন্যায্য আর অন্যদের আন্দোলন অন্যায্য এটা তো কোনো ভালো কথা না। কাজেই আজকে যখন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা আন্দোলনের নেমেছে তখন তাদের ন্যায্য দাবি মানার জন্য আলোচনায় বসুন। আলোচনায় না বসে বড় কায়দা করে দীর্ঘ সুত্রিতা করে আপনারা কিসের পরিচয় দিচ্ছেন।  

শুক্রবার (১৬ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঐতিহাসিক ফারাক্কা লং মার্চের ৫০ বছর উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশের আয়োজন করেছে গণসংহতি আন্দোলন।  
জোনায়েদ সাকি বলেন, আমরা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সরকারকে পরিষ্কার করে বলতে চাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সকলের, আন্দোলনকারীদের সমর্থনে তৈরি হয়েছে। এটা তো কোনো একটা পক্ষের সরকার নয়। আপনাদের কাজ হচ্ছে মুহূর্তের সমস্যাগুলো সমাধান করা। যে সমস্যা সমাধান করতে পারবেন না দ্রুত সমস্ত পক্ষের সাথে আলাপ করে সমাধানের উদ্যোগী হন। 
তিনি বলেন, ২০২৪ সালে শ্রমিক জনতা আরেকবার রক্ত দিয়ে সরকারকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করে, ভারতের দালাল সরকারকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করে নতুন করে মান মর্যাদা অধিষ্ঠিত করেছেন। নতুন করে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু করেছেন। 
তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান আমলে তারা বাঁধ দেওয়া শুরু করে। কিন্তু পাকিস্তান সরকারের বিরোধিতার কারণে গোপনে তারা কাজ চালিয়ে যায়। বাংলাদেশ একটি রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার পরে তারা এটি চালু করতে পারেনি। কিন্তু পরীক্ষামূলকভাবে দশ দিন চালু করার কথা বলে আর সেটা তারা বন্ধ করেনি। ১৯৭৫ সালের ২১ শে মে তারা এটা চালু করে। 
গণতন্ত্র মঞ্চের এই শীর্ষ নেতা বলেন, বাংলাদেশে একের পর এক সরকার এসেছে। বিশেষ করে গত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সরকার নিজের গদির বদলে বাংলাদেশের সকল স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়েছে। তারা নিজেরাই বলেছে ভারতকে এত কিছু দিয়েছি তারা চিরকাল মনে রাখবে। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য কি এনেছেন? শেখ হাসিনার গদি। সেই গদি মানুষ এবার উল্টে দিয়েছে এবং ভারতের আধিপত্যকে উল্টে দেয়া হবে। ভারতকে আমরা আগেও বলেছি এই দেশের মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করেন। আর সত্যিকার অর্থে যদি বন্ধুত্ব করতে চান তাহলে সমতার ভিত্তিতে করেন। কারো অধিকার হরণ করে বন্ধুত্ব হয় না। সেটাকে দাসত্ব বলে। যে আমাদের অধিকার হরণ করছে প্রতিমুহূর্তে আমাদের ঠকাচ্ছে তাদেরকে যদি আমরা বন্ধু ভাবি তাহলে আমরা শুধু শারীরিকভাবেই দাস নই আমরা মানসিকভাবেও দাস।  
সাকি বলেন, আপনারা কাউকে ছাড় দিবেন যা শক্তি বেশি, আবার আপনাদের কারো কারো অপছন্দ থাকলে তার সাথে দীর্ঘ সুত্রিতা করবেন এই সমস্ত আচরণ আপনাদের সরকারের বৈশিষ্ট্যের সাথে যায় না। তাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানের কাছে অনুরোধ করবো বিচার সংস্কার এবং নির্বাচন এই তিন বিষয়ে একসাথে চলে বাংলাদেশকে একটা যথার্থ উত্তরণের পথে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব আপনার কাছে। বিচার সংস্কার নির্বাচন এই তিনটা একসাথে চলতে হবে। এই তিনটার সাথে কেউ কোন বিরোধ লাগিয়ে দিয়ে কোন কিছু প্রলম্বিত করা জনগণ মানবে না। কাজে এই তিনটাকে একসাথে চালিয়ে নিয়ে যত সমস্যা হচ্ছে সেগুলোর দ্রুত সমাধান করে জনগণের ঐক্য ফিরিয়ে আনুন। 
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর আপনারা বিদেশীদের কাছে দিতে চান। জনগণ কি একমত কিনা আপনারা জিজ্ঞেস করেন নাই। কি পদ্ধতিতে দেয়া হচ্ছে সেটা আপনারা খোলাসা করেন নাই। এভাবে কাজ করার এখতিয়ার আপনার নাই। আপনাদের উচিত রাজনৈতিক পক্ষগুলোর সাথে আলোচনা করা। এই মুহূর্তে কাজ বিচার সংস্কার এবং নির্বাচন।
সমাবেশে এসময় গণসংহতি আন্দোলনের অনেক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।