জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী ইউরোপিয়ান রেজ্যুলুশন পাস

প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়ে সোমবার জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে একটি রেজ্যুলুশন পাস হয়েছে। এতে সমর্থন রয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও ইউক্রেনের। এতে ইউক্রেন থেকে তাৎক্ষণিকভাবে রাশিয়ার সেনা প্রত্যাহারের দাবি তোলা হয়েছে। দ্রুত শত্রুতা বন্ধ করে যুদ্ধের একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানানো হয়েছে। রেজ্যুলুশনটির পক্ষে ৯৩টি ভোট পড়ে। ভেটো দেয় ১৮টি দেশ। এর মধ্যে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র উল্লেখযোগ্য। চীন, উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের (জিসিসি) সদস্য রাষ্ট্রসমূহসহ ৬৫টি দেশ ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকে। লেবানন অবশ্য এর পক্ষে ভোট দিয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আরব নিউজ। ওই রেজ্যুলুশনে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্বের বিষয়ে প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা হয়। বলা হয়, হুমকি বা শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে কোনো প্রকার আঞ্চলিক অধিগ্রহণ বৈধ বলে গণ্য হবে না। সপ্তাহান্তে ইউক্রেনের রেজ্যুলুশনের বিপক্ষে ভোট দিতে দেশগুলোকে তাগিদ দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
শুক্রবার ওয়াশিংটন ইউক্রেনের রেজ্যুলুশনের পাল্টা হিসেবে আরেকটি রেজ্যুলুশন উত্থাপন করে। এতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে প্রাণহানি সম্পর্কে বলা হয়। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদি শান্তি প্রতিষ্ঠাতেও তাগিদ দেয়া হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের রেজ্যুলুশনে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিষয়ে তেমন কিছু বলা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের রেজ্যুলুশন একটি সংশোধনীর পর শুধুমাত্র জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে পাস হয়। ওই সংশোধনীর প্রস্তাব দেয় ফ্রান্স। যাতে স্পষ্ট করা হয় রাশিয়া জাতিসংঘের সনদ লঙ্ঘন করে ছোট প্রতিবেশীকে আক্রমণ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সংশোধিত রেজ্যুলুশনের ওপর ভোট হয়। পক্ষে যায় ৯৩ টি ভোট আর বিপক্ষে ৮ টি । ৭৩ টি দেশ ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকে। যুক্তরাষ্ট্র এর মধ্যে অন্যতম। যুক্তরাষ্ট্র নিজের রেজ্যুলুশনেই ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকে। জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের দূত ডরোথি শি বলেন, এর আগে কয়েকটি রেজ্যুলুশনে ইউক্রেনে, রাশিয়ার আক্রমণের নিন্দা ও দ্রুত রাশিয়ার সৈন্য প্রত্যাহারের দাবি তোলা হয়। তবে তা যুদ্ধ বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়। আমাদের যা প্রয়োজন তা হলো- দীর্ঘ মেয়াদি শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি। ইউক্রেনের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিয়ানা বেতসা দীর্ঘ মেয়াদি শান্তি প্রতিষ্ঠায় সকল রাষ্ট্রকে জাতিসংঘের সনদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, এই যুদ্ধ কখনোই শুধু ইউক্রেনের বিষয়ে ছিলো না। এটি আগ্রাসন ব্যতীত জীবন যাপনের জন্য যেকোনো দেশের মৌলিক অধিকারের বিষয়। উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে জাতিসংঘে নিয়োজিত কুয়েতের স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক আল-বানাই বলেন, জিসিসি’র সদস্যরা সংলাপে প্রাধান্য দেয়ার জন্য ভোট দেয়া থেকে বিরত ছিলো । এছাড়া যুদ্ধের ইতি টানতে তিনি ওই সময় জিসিসি’র প্রতিশ্রুতির বিষয়টি ব্যক্ত করেন।