সুন্দরবনে নতুন প্রকল্প শুরু করতে চলেছে মমতার সরকার

প্রথম নিউজ, অনলাইন: নোনা পানির সুন্দরবন এলাকায় বৃষ্টির পানি ধরে রেখে নতুন প্রকল্প শুরু করতে চলেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। যাবতীয় পরিকল্পনা সম্পন্ন করে সেই প্রকল্পের বরাদ্দ পেতে বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকেও সবুজ সংকেত পেয়ে গিয়েছে রাজ্য সচিবালয়। এবার সেই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতির জন্য আবেদন জানিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা রবিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ওয়াটার ইউজার্স কমিটি’ নাম দিয়ে প্রকল্পটি চালু করা হচ্ছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজ্যের পানিসম্পদ উন্নয়ন দপ্তরকে। দপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তারা ওই কমিটিকে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবেন। নেদারল্যান্ডসের একটি বিশেষজ্ঞ সংস্থা এই কাজে সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন দপ্তরের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া।
ইতিমধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার অধীনে থাকা সুন্দরবনের ১১টি ব্লকের মধ্যে ৩৯টি দ্বীপকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এই প্রকল্প শুরুর আগে পানিসম্পদ উন্নয়ন দপ্তর সুন্দরবনের ওই ব্লকগুলোকে চিহ্নিত করে মজে যাওয়া খালগুলো পুনরুজ্জীবিত করেছে। বৃষ্টির পানি ওই খালগুলোতে ধরে রেখে কৃষিকাজসহ আরো বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের কাজ করা হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। এই কাজে মোট খরচ হবে চার হাজার ১০০ কোটি রুপি।
বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই প্রকল্পের কাজ করবে রাজ্য সরকার। সেখানে রাজ্য সরকার খরচ করবে ৩০ শতাংশ অর্থ। বাকি ৭০ শতাংশ দেবে বিশ্বব্যাংক।
পানিসম্পদ উন্নয়ন দপ্তর সূত্রের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমটি বলেছে, এই কাজের জন্য রাজ্য সরকারের খরচ হতে পারে এক হাজার ২৩০ কোটি রুপি। আপাতত সুন্দরবনের ব্লকগুলোতে এই প্রকল্পের কাজ শুরু করতে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে।
তারা অনুমতি দিলেই এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে যাবে সুন্দরবনের প্রান্তিক জেলাগুলোতে। ওই ৩৯টি দ্বীপে মানুষ যাতে সুলভে সুপেয় পানি পেতে পারে, সেই ভাবনাও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে নতুন এই প্রকল্পে।
এ ছাড়া ধরে রাখা মিষ্টি পানিতে কৃষিকাজের পাশাপাশি মৎস্য চাষ, হর্টিকালচার উন্নয়নের কাজ হবে। এই প্রকল্পে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্য রক্ষা করার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে এই প্রকল্পের অধীনে সুযোগ-সুবিধা পেতে গেলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে নিজের নাম সরকারিভাবে নথিভুক্ত করাতে হবে। দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত বছর মধ্য প্রদেশের ভোপালে পানি নিয়ে যে জাতীয় স্তরের সম্মেলন হয়েছিল, তাতে রাজ্য সরকারের এই প্রকল্পের কথা তুলে ধরেছিল পানিসম্পদ উন্নয়ন দপ্তর। সেখানেও রাজ্য সরকারের এই ভাবনাকে প্রশংসা করেছিলেন জাতীয় সম্মেলনের আয়োজকরা। এর পাশাপাশি আগামী কয়েক মাসের মধ্যে সুন্দরবন উন্নয়নে আরো একটি বড় প্রকল্প রাজ্য সরকার চালু করতে চলেছে বলেই রাজ্য সচিবালয় সূত্র জানিয়েছে।