Ad0111

জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক পীর হাবিবের জানাজা অনুষ্ঠিত

পীর হাবিবুর রহমান শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টা ৮ মিনিটে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।

জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক পীর হাবিবের জানাজা অনুষ্ঠিত

প্রথম নিউজ, ঢাকা: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক পীর হাবিবুর রহমানের দ্বিতীয় জানাজা জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ রোববার দুপুর ১২টা ৫৮ মিনিটে জাতীয় প্রেস ক্লাবের টেনিস গ্রাউন্ডে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের সম্পাদক, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক, সাংবাদিক নেতা, রাজনৈতিক নেতা এবং তার সহকর্মীরা অংশ নেন। এর আগে দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে তার মরদেহ জাতীয় প্রেস ক্লাবে আনা হয়। জানাজা শেষে তার মরদেহে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সর্বস্তরের সাংবাদিকরা।

জানাজার আগে তাকে স্মরণ করে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান বলেন, পীর হাবিবের মৃত্যু নিঃসন্দেহে অকাল মৃত্যু। কারণ তার বয়স হয়েছিল মাত্র ৫৭ বছর। তিনি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সদস্য ছিলেন। তার বিদেহী আত্মার জন্য আমরা প্রার্থনা করি।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, পীর হাবিবুর রহমান সাহসী সাংবাদিক ছিলেন। আমরা একজন সাহসী সাংবাদিককে হারালাম। তার অগণিত পাঠক আছেন, যারা তার কলামের জন্য অপেক্ষা করতেন। তারাও তাদের কলামিস্টকে হারালেন।

তিনি আরও বলেন, আমাদের অতি আপনজন ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সদস্য পীর হাবিবুর রহমানকে চির বিদায় জানাচ্ছি। এই বিদায় হয়ত আনুষ্ঠানিকতার। কিন্তু আমাদের মনে থাকবেন তিনি। তিনি তার লেখনীর মধ্যে থাকবেন। তিনি যেটা বিশ্বাস করতেন, তার নীতি আদর্শের ব্যাপারে অটল ছিলেন। এরকম একজন সাহসী সাংবাদিকে আমরা হারিয়েছি। এতে আমাদের যেমন ক্ষতি, তেমনি সাংবাদিকতার জন্যও ক্ষতি।

পীর হাবিবুর রহমানের ছেলে ব্যারিস্টার অন্তর বলেন, আমার পরিবারের সবার জন্য আমার বাবা ছায়া হিসেবে ছিলেন। তিনি থাকলে মনে হতো সব হয়ে যাবে। আমি আমার ছায়াকে হারালাম। বাবা বলতেন আমার টাকা পয়সার দরকার নেই। আমার মৃত্যুর পর আমাকে শহীদ মিনার এবং জাতীয় প্রেস ক্লাবে নিয়ে যেও। বাবা মানুষের জন্য লিখতে চেয়েছেন। সেই সাহসিকতা তার ছিল। অনেক কিছু সহ্য করেছেন। তিনি আরও বলেন, অনেক সময় মানুষ আশা করতেন বাবা অনেক কিছু লিখবেন। হয়ত উনার অনেক সীমাবদ্ধতা ছিল। উনি পারেননি। আপনারা দোয়া করবেন আল্লাহ যেন উনাকে বেহেস্ত নসিব করেন।

জানাজায় আরও উপস্থিত ছিলেন— দ্য ডেইলি অবজারভারের সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, সাংবাদিক নেতা মনজুরুল আহসান বুলবুল, এডিটরস গিল্ডের সভাপতি মোজাম্মেল বাবু, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, সাইফুল আলম প্রমুখ।

জানাজা শেষে তার মরদেহে শ্রদ্ধা জানায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটি, এডিটরস গিল্ড, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, দৈনিক দেশ রূপান্তর, সকালের সময়, ভারতীয় হাইকমিশনসহ অন্যান্য সংগঠন। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধার জন্য পীর হাবিবের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হয়। সেখানে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, নাগরিক ঐক্য, জাসদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তার সহপাঠী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ প্রতিদিন পরিবারসহ সাধারণ মানুষ তার কফিনে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান।

দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হয়। পরে নেওয়া হয় জাতীয় প্রেস ক্লাবে। জানাজা শেষে প্রেস ক্লাব থেকে পীর হাবিবুর রহমানের মরদেহ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে নেওয়া হবে। এদিন বিকেল ৩টায় তার মরদেহ কর্মস্থল বাংলাদেশ প্রতিদিন কার্যালয়ে নেওয়া হবে।

সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় সুনামগঞ্জ পৌর শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হবে তার মরদেহ। বাদ জোহর সুনামগঞ্জ কেন্দ্রীয় মসজিদে এবং নিজ গ্রাম মাইজবাড়ীতে জানাজার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে বরণ্যে এই সাংবাদিককে শায়িত করা হবে।

এর আগে শনিবার বাদ এশা রাজধানীর উত্তরা ৪নং সেক্টর পার্ক জামে মসজিদে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও কলামিস্ট পীর হাবিবুর রহমান শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টা ৮ মিনিটে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এর আগে শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পীর হাবিবুর রহমান স্ট্রোক করলে তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়।

গত ২২ জানুয়ারি পীর হাবিবুর রহমান করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। করোনামুক্ত হলেও কিডনি জটিলতার কারণে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সন্ধ্যায় স্ট্রোক করেন তিনি। ২০২১ সালের অক্টোবরে মুম্বাই জাসলুক হাসপাতালে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশনের মাধ্যমে ক্যান্সার মুক্ত হন পীর হাবিবুর রহমান। বরেণ্য সাংবাদিক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও কলামিস্ট পীর হাবিবুর রহমানের জন্ম ১৯৬৩ সালের ১২ নভেম্বর সুনামগঞ্জ শহরে।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

This site uses cookies. By continuing to browse the site you are agreeing to our use of cookies & privacy Policy from www.prothom.news