চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক তিন দিনেই ঝরেছে ১৬ প্রাণ, দুর্ঘটনাস্থলে বসলো গতিরোধক

প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক:চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে তিনটি ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ১৬ জনের। এ ছাড়াও আহত হয়েছেন প্রায় ৩৫ জন। এসব দুর্ঘটনার পর টনক নড়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ)। দুর্ঘটনা রোধে মহাসড়কের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকাকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করে সেখানে বসানো হয়েছে র্যাম্বল স্পিড।
পাশাপাশি সড়কের পাশে বসানো খুঁটিতে উড়ছে লাল নিশানাও। রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত এলাকাটির সড়কের উভয় পাশে ৩-৪ ফিট রাস্তা প্রশস্তকরনের কাজও চলছে। গত বুধবার (৩ এপ্রিল) সকালে ওই এলাকায় একটি যাত্রীবাহী মাইক্রোবাস ও বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নারী-শিশুসহ ১১ জন নিহত হওয়ার ঘটনার পরেই এই উদ্যোগ নিয়েছে সওজ।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ সড়ক বিভাগের (ভারপ্রাপ্ত) নির্বাহী প্রকৌশলী রোকন উদ্দিন খালেদ চৌধুরী ও দোহাজারী হাইওয়ে থানার ওসি শুভ রঞ্জন চাকমা আশা প্রকাশ করে বলেছেন, এই র্যাম্বল স্পিড স্থাপনের ফলে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রিত হবে এবং দুর্ঘটনার হার হ্রাস পাবে।
’
এদিকে, চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার দূরে লোহাগাড়ার চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকাটি দীর্ঘদিন ধরেই দুর্ঘটনাপ্রবণ অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত। চুনতি অভয়ারণ্যের কাছের এই অংশে প্রায় তিন কিলোমিটার জুড়ে সড়কটি পাহাড়ি ঢালু ও এতে বেশ কয়েকটি বিপজ্জনক বাঁকও রয়েছে। ফলে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা।
আরাকান সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. মুসা বলেন, দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য সড়ক প্রশস্তকরণসহ বাঁক অপসারণ এবং ডিভাইডার নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।
দ্রুতই এসব বাস্তবায়ন করত হবে।
লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইনামুল হাছান বলেন, গত ২ এপ্রিল মহাসড়কে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত হওয়ার খবর পেয়ে উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীর প্রতীক ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে মহাসড়কের এ অংশের বাঁক অপসারণের বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। তবে সড়ক ও জনপথ বিভাগের এই র্যাম্বল স্পিড স্থাপনের উদ্যোগ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও চালকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। দুর্ঘটনা কমানোর এই চেষ্টাকে অনেকে স্বাগত জানালেও, নিরাপত্তা নিয়ে নতুন উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে মহাসড়কের এই অংশটি অত্যন্ত নির্জন হওয়ায় ভিন্ন আশঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়রা মনে করছেন, মহাসড়কের এ অংশে গতিরোধ স্থাপনের ফলে আরো বেশী দুর্ঘটনা বাড়বে এবং চুরি-ডাকাতি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও দেখা দিবে। কারণ এলাকাটি নির্জন । এই এলাকায় র্যাম্বল স্পিডের কারণে গাড়ির গতি কমে যাওয়ার ফলে ডাকাতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
দোহাজারী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কটিকে অবিলম্বে চার লেনে উন্নীত করতে হবে। আপাতত নতুন স্থাপিত র্যাম্বল স্পিডগুলো দুর্ঘটনা কমাতে কতটুকু সহায়ক হবে এবং তা নতুন কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করবে কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়। প্রয়োজন হলে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হবে।