গার্মেন্টসে শ্রমিক অসন্তোষের শঙ্কা
গার্মেন্টস কারখানায় যেকোনও ধরনের অসন্তোষ এড়াতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তৎপর রয়েছে।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: বেশ কিছু পোশাক কারখানায় অক্টোবর ও নভেম্বরের বেতন-ভাতা এখনও পরিশোধ করা হয়নি। বকেয়ার দাবিতে শ্রমিক অসন্তোষের আশঙ্কা দেখছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে দাখিল করা গোয়েন্দা প্রতিবেদন এ আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে। এ ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে ১ ডিসেম্বর চিঠি পাঠিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক শাখা ২-এর উপসচিব শামীম হাসান স্বাক্ষরিত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবকে লেখা পুলিশ অধিদফতরের চিঠিতে জানানো হয়েছে, যে সকল গার্মেন্টসে ক্রয়াদেশ না আসায় সংকট সৃষ্টি হচ্ছে, সেদিকে নজরদারি বাড়িয়ে তা নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। একইসঙ্গে বাজার গবেষণার মাধ্যমে নতুন প্রযুক্তির প্রয়োগ ও পণ্যের বহুমুখীকরণসহ নতুন বাজার সৃষ্টিতে উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এর আগে চলতি বছরের ১৪ নভেম্বর আইজিপির পক্ষে পুলিশ সদর দফতর থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব বরাবর চিঠি লেখেন অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহিল বাকী। ওই চিঠিতে বলা হয়, যে সকল গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের অক্টোবরের বেতন-ভাতা নভেম্বরের মধ্যে পরিশোধে ব্যর্থ হতে পারেন তাদের কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষের আশঙ্কা রয়েছে।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের কারণে গার্মেন্টেসের ফেব্রিকসসহ অন্যান্য সরঞ্জামের আমদানি সংকট, অর্ডার কম পাওয়া বা বাতিল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি কারণে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ও সাব কন্ট্রাক্টের গার্মেন্টসগুলোর উৎপাদন বিঘ্নিত হওয়ায় শ্রমিকরা সঠিক সময়ে বেতন পাচ্ছেন না।
পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়েছে, বেশ কিছু গার্মেন্টস বিদেশি মালিক দ্বারা পরিচালিত হয়। অনেক বিদেশি মালিক কারোনার কারণে কারখানা বন্ধ রেখেছেন। এতেও শ্রমিক অসন্তোষ বেড়েছে বলে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে পুলিশ সদর দফতর বলেছে—বিদেশি অর্ডার পাওয়ার ক্ষেত্রে অসুস্থ প্রতিযোগিতা এড়াতে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও শ্রম মন্ত্রণালয় যৌথভাবে নীতিমালা প্রণয়ন করবে। যে সকল কারখানায় ক্রয়াদেশ বাতিল হচ্ছে বা নতুন ক্রয়াদেশ আসছে না সেগুলোতে নজরদারি বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে।
গার্মেন্টসে কর্মরত শ্রমিকদের বেতন-ভাতা যাতে প্রতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে পরিশোধ করা হয়, সেটাও নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। দেশি বিদেশি কোনও সংস্থা বা কোনও শ্রমিক সংগঠন বা নেতা যাতে উস্কানি দিতে না পারে সেদিকেও নজর রাখার সুপারিশ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ জানিয়েছেন, গার্মেন্টস কারখানায় যেকোনও ধরনের অসন্তোষ এড়াতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তৎপর রয়েছে। বিজেএমইএ ও বিকেএমইএ নেতাদের সঙ্গে এ বিষয়ে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: