গৌরীপুরে টিসিবির পণ্য বিক্রয়ে অনিয়ম
গত বুধবার সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে টিসিবির দুইজন ডিলার ১৫২০ জন কার্ডধারীর কাছে ন্যায্য মূল্যে পণ্য বিক্রয়ের কথা থাকলেও প্রায় ২শত কার্ডধারীকে বাকী রেখেই ৪টার পূর্বে চলে যায় ডিলারের ট্রাক।
প্রথম নিউজ, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: গৌরীপুর উপজেলার ২ নম্বর গৌরীপুর সদর ইউনিয়নে টিসিবির পণ্য বিক্রয়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। টিসিবি কার্ড থাকলেও পণ্য পায়নি প্রায় ২শত সুবিধা ভোগী। কারণ জানতে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান ও ডিলারদের নিজ কার্যালয়ে তলব করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। জানা গেছে গত বুধবার সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে টিসিবির দুইজন ডিলার ১৫২০ জন কার্ডধারীর কাছে ন্যায্য মূল্যে পণ্য বিক্রয়ের কথা থাকলেও প্রায় ২শত কার্ডধারীকে বাকী রেখেই ৪টার পূর্বে চলে যায় ডিলারের ট্রাক।
এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে ২কেজি সয়াবিন তেল, ২কেজি মুসুরির ডাল ও ৫ কেজি চাল। যার সরকার নির্ধারিত মূল্য ৪৭০ টাকা। টিসিবির ২ডিলার মেসার্স আলী এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স সোয়াদ এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধিরা বলছে, অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অতিরিক্ত কার্ড ও স্লিপ বিতরণের কারণে পণ্যের ঘাটতি হয়েছে। এছাড়া মাঝে মাঝে চেয়ারম্যানের বিভিন্ন লোকজন এসে কার্ড ছাড়াই পণ্য নিয়ে যায়।সুবিধাভোগীরা জানান, এ ইউনিয়নে টিসিবির পণ্য বিক্রয় ও বিতরণে শুরু থেকেই অনিয়ম চলে আসছে। সরকার নির্ধারিত স্থান হাটশিরা মাদ্রাসা সংলগ্ন মোড়, বোরহান উদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গজন্দর মোড় বাদ দিয়ে বিধি বহির্ভূতভাবে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে বিতরণ ও বিক্রয় হচ্ছে টিসিবির ন্যায্য মূল্যের পণ্য। এতে ইউনিয়নের দূরদূরান্ত থেকে দরিদ্র মানুষেরা টিসিবির পণ্য নিতে আসতে একদিকে যেমন সময় বেশী লাগে তেমনি তাদের যাতায়াত খরচ।
কোনাপাড়া গ্রামের আব্দুল হেকিম, কার্ড নং ১৬১, শালীহর গ্রামের মাঈন উদ্দিন, কার্ড নং ২৪, গাভীশিমুল গ্রামের মোছা: ডলি আক্তার, কার্ড নং ১৯৭, দৌলতপুর গ্রামের শামসুন্নাহার বলেন তারা দুপুর ২টা থেকে ৩টার মধ্যে টিসিবির পণ্য নিতে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ট্রাকের কাছে এসেছেন। শুরুতে ডিলার বার বার বলেছে, যাদের কার্ড আছে তারা সবাই পণ্য পাবেন, কিন্তু কিছুক্ষণ বিক্রয়ের পর জানায় মাল শেষ, আর কাউকে দেয়া হবে না, এই বলে তারা চলে যায়।এ ব্যাপারে ২ নম্বর গৌরীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ হযরত আলী অতিরিক্ত কার্ড ও স্লিপ বিতরণের বিষয়টি অস্বীকার করে জানান- কার্ড দেখে দেখে ডিলাররা পণ্য বিক্রি করার কথা। কেন কম পরলো এটা তাঁরা জানে। মেসার্স আলী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারি মোঃ আলী হায়দার জানায় এ ইউনিয়নে ৭৬০ জন্য কার্ডধারীর কাছে পণ্য বিক্রয়ের অনুমতি পেয়েছেন তিনি।
পূর্বনির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী তিনি বুধবার সকাল থেকে ৭৬০ জন কার্ডদারীর কাছে পণ্য বিক্রয় করেছেন। মেসার্স সোয়াদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মোঃ কামরুল ইসলাম জানান, তিনিও এ ইউনিয়নে ৭৬০টি কার্ডের বিপরীতে টিসিবির পণ্য বিক্রির অনুমতি পেয়েছেন। ঘটনার দিন ৪টার আগেই তাঁর বিক্রি শেষ হয়ে যায়, তাই ট্রাক নিয়ে চলে গেছেন। কার্ডধারীরা কেন পণ্য পায়নি, এর জবাবে তিনি বলেন- ইউপি চেয়ারম্যান নিয়ম বহির্ভূত অতিরিক্ত কার্ড বিতরণ ও স্লিপ দেয় তাই পণ্যের ঘাটতি হয়।গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নাহিদুল করিম জানান- টিসিবির অনিয়মের বিষয়টি জানতে পেরেছি, ইউপি চেয়ারম্যান ও টিসিবি ডিলারদের অফিসে তলব করা হয়েছে।অনিয়মের অভিযোগ তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।