খালার সহায়তায় কিশোরীকে ধর্ষণ!
পরিবারের সদস্যদের নির্যাতনের ভয়ে ৬ দিন পলাতক থাকার পর রোববার সন্ধ্যায় ওই কিশোরী আপন খালা ও বাবার বিরুদ্ধে সহকারী পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেছেন।
প্রথম নিউজ, লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে খালার সহায়তায় কিশোরীকে (১৭) জোরপূর্বক ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরিবারের সদস্যদের নির্যাতনের ভয়ে ৬ দিন পলাতক থাকার পর রোববার সন্ধ্যায় ওই কিশোরী আপন খালা ও বাবার বিরুদ্ধে সহকারী পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেছেন। তার নিরাপত্তা চেয়ে ঢাকায় খালার বাসায় থাকার অনুরোধ জানায় মেয়েটি। এ ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছে ২৭ আগস্ট রাতে দক্ষিণ চরবংশী ইউপির চরকাছিয়া গ্রামের মিয়ারহাট এলাকায়।
এ ঘটনায় রোববার রাতে কিশোরীর মা-বাবা ও খালাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের বিদায় করে কিশোরীকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানার নারী ও শিশু কক্ষে (সেফহোম) রাখেন সহকারী পুলিশ সুপার ও ওসি। পরে কান্নাকাটি করায় মুচলেকা নিয়ে ওই কিশোরীকে তার বাবা ও মায়ের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।
ওই কিশোরী জানায়, রায়পুরের মেঘনার দুর্গম চরে বায়রাঘাটে তাদের জেলে পরিবারে বসবাস। সে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। তারা এক ভাই ও এক বোন। গত ২৭ আগস্ট দক্ষিণ চরবংশী ইউপির মিয়ারহাট এলাকায় তার খালার বাড়িতে বেড়াতে যায়। রাতে কিশোরী দেখে তার পাশে অচেনা এক যুবক (৩৫)। সে চিৎকার করলে মুখ চেপে দুইবার ধর্ষণ করে ওই যুবক। এ ঘটনা সে তার খালাকে জানালে ধমক দিয়ে চুপ করিয়ে রাখে।
পরদিন কিশোরী বাড়িতে এসে তার মা-বাবাকে ঘটনা জানালে কাউকে না বলার জন্য চাপ সৃষ্টি ও বেদম মারধর করে। এ ঘটনার বিচার না পেয়ে পরদিন ২৮ আগস্ট বাড়ি থেকে পালিয়ে মোল্লারহাট এলাকায় তৃতীয় লিঙ্গের এক নারীর কাছে ৫ দিন থাকার পর রোববার দুপুরে রায়পুরের সহকারী পুলিশ সুপারের কাছে বাবা ও খালার বিরুদ্ধে অচেনা যুবক দ্বারা ধর্ষণে সহায়তা এবং দেহ ব্যবসা করানোর চেষ্টার অভিযোগ করে কিশোরী।
রোববার সন্ধ্যায় সহকারী পুলিশ সুপার ওই কিশোরীর মা-বাবা ও খালাকে থানায় হাজির করেন। মেয়েটির বাবা বলেন, গত ৮ দিন আগে তার মেয়ে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হলে রায়পুরের হাজিমারা পুলিশ ফাঁড়িতে সাধারণ ডায়েরি করেন। পুলিশ মেয়েটির সন্ধান করে তৃতীয় লিঙ্গের এক নারীর সঙ্গে রয়েছে বলে নিশ্চিত হন এবং তাকে ফাঁড়িতে আসার জন্য বলা হলেও মেয়েটি না গিয়ে তার বাবা ও খালার বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহায়তার অভিযোগ করেছে।
সহকারী পুলিশ সুপার (রায়পুর ও রামগঞ্জ থানার সার্কেল) শেখ সাদী বলেন, মেয়েটি তার গ্রামের মাদ্রাসাপড়ুয়া এক ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক এবং ওই ছেলেকেই বিয়ে করতে চায়। এতে তার পরিবার রাজি হয়নি। অপরদিকে নদীরপাড়ে খালার বাড়িতে বেড়াতে গেলে খালারই সহায়তায় অচেনা যুবকের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয় মেয়েটি। দুটি ঘটনায় আমরা মেয়েটির মা, বাবা ও খালাকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের ছেড়ে দেই।