কাপাসিয়ায় পরিত্যক্ত ঘরে মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর সন্তান প্রসব
ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল শনিবার গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের রাওনাট বাজার এলাকায়।
প্রথম নিউজ, কাপাসিয়া (গাজীপুর): ঘুরে বেড়ান রাস্তায় রাস্তায়। থাকেন বাজারের দোকানপাটের সামনে। বলতে পারেন না নিজের নাম-পরিচয়। এমনই এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারী সড়কের পাশে জন্ম দিয়েছেন এক ছেলে সন্তানের। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল শনিবার গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের রাওনাট বাজার এলাকায়। নবজাতকের বাবার পরিচয় জানতে পারেননি স্থানীয় লোকজন। ভারসাম্যহীন নারীর সন্তান জন্ম দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন কাপাসিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) এস এম আজিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে তাঁকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
রাওনাট বাজার এলাকার বাসিন্দা রুবি আক্তার বলেন, ‘সড়কের পাশে পরিত্যক্ত দোকান ঘরে এক পাগলি কারও সাহায্য ছাড়াই নিজের বাচ্চার জন্ম দিয়েছে। খবর পেয়ে এসে দেখি বাচ্চাটি দূরে বালুর মধ্যে পড়ে আছে। আমি তাড়াতাড়ি বাচ্চাটিকে ধরে এলাকার কয়েকজন নারীর সাহায্য নিয়ে পাশের টিউবওয়েলের পানি দিয়ে বাচ্চাটিকে পরিষ্কার করি। পরে বাচ্চাটিকে কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই।’
মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর ছেলে সন্তান জন্ম দেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে রাওনাট বাজার এলাকায় ঘটনাস্থলে আসেন স্থানীয় বাসিন্দা রেজাউল করিম মোল্লা। তিনি বলেন, ‘এসে দেখি কয়েকজন নারী ওই পাগলির বাচ্চাটির গায়ের ময়লা পরিষ্কার করতেছেন। আরও কয়েকজন নারী ওই পাগলিকে পরিষ্কার করাচ্ছেন। ততক্ষণে ঘটনাস্থলে পুলিশ চলে আসে।’
মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর সন্তান জন্ম দেওয়ার বিষয়টি কাপাসিয়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন রোববার সন্ধ্যার দিকে জানতে পারেন। তিনি বলেন, ‘ওই নারী ও তাঁর সন্তানকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন সমাজ কর্মীকে হাসপাতালে পাঠাই। সন্তানসহ ওই নারী সুস্থ হওয়ার পর তাঁদেরকে স্থায়ী পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।’
কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিচালক ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. মামুনুর রহমান জানান, ‘রোববার দুপুরের দিকে নবজাতকসহ এক নারীকে হাসপাতালে আনা হয়। পরে জানা যায় তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। বাচ্চাটির ওজন অনেক কম থাকায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। রোববার দুপুরে মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকেও ওই হাসপাতালের মানসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে। মা ও ছেলে ভালো আছেন। ওই নারীর পরিচয় জানা যায়নি।’