কোথাও দখল, কোথাও পরিত্যক্ত,আওয়ামী লীগের কার্যালয়
অনেক জায়গায় কার্যালয়ে ফলের দোকান, কোথাও বিএনপি, কোথাও এনসিপির দখলে, অনেক স্থানে কার্যালয়ে এখন গণশৌচাগার, মাদকসেবনকেন্দ্র

প্রথম নিউজ, অনলাইন: গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে। সেই দিন জনতার রোষ থেকে রেহাই পাননি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। বেশির ভাগ জেলায় তাঁদের পালিয়ে থাকতে হয়েছে। অনেকে বিদেশে পালিয়ে যান।
তবে জেলায় জেলায় আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের কার্যালয় পুড়িয়ে, কোথাও আবার পোড়ানোর পর গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার পর বিভিন্ন স্থানের এসব কার্যালয় সাধারণ মানুষ নিজেদের কাজে ব্যবহার শুরু করেছে। কোথাও এ কার্যালয়গুলো হয়েছে গেছে বিএনপির, কোথাও দখল করে সাইনবোর্ড টাঙিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি। দেখা গেছে কোথাও আবার আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হয়ে উঠেছে ফলের দোকান।
বেশির ভাগ জেলায় আ. লীগ কার্যালয় পরিণত হয়েছে গণশৌচাগারে। আমাদের সংশ্লিষ্ট জেলা প্রতিনিধিরা গতকাল সরেজমিনে গিয়ে এই দৃশ্য দেখতে পান। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য থেকে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ অফিস এখন ফলের দোকান, আমতলিতে আওয়ামী লীগ অফিস বিএনপির অফিস হয়ে গেছে। ভোলার চরফ্যাশনে এনসিপি সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দখলে নিয়েছে আওয়ামী লীগ অফিস।
নারায়ণগঞ্জ : আওয়ামী লীগের নারায়ণগঞ্জ কার্যালয় এখন পরিত্যক্ত। বাংলাদেশ রেলওয়ের জায়গায় অবস্থিত এটি এখন ভাসমান মানুষ ও পথশিশুদের আশ্রয়ঘর। কার্যালয়ের সামনে বিভিন্ন ফলমূলের দোকান বসানো হয়েছে। গতকাল দুপুরে শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের ২ নম্বর রেলগেট এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে এমনই দৃশ্য দেখা যায়। স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে কার্যালয়টি ময়লা-আবর্জনায় ভরপুর ছিল।
সেই সঙ্গে দিন-রাত নেশাখোরদের আড্ডা ছিল এখানে। তাই অফিসের সামনের জায়গাটি পরিষ্কার করে বর্তমানে বিভিন্ন ফলমূলের দোকান দেওয়া হয়েছে।
কেরানীগঞ্জ : ঢাকার কেরানীগঞ্জে দুই আওয়ামী লীগের কার্যালয় পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন তারানগর ইউনিয়নের ঘাটার চরে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা আওয়ামী লীগ কার্যালয়। এটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। জিনজিরা বাসরোডে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ও পরিত্যক্ত।
ময়মনসিংহ : জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় নগরীর শিববাড়িতে অবস্থিত। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে কার্যালয়টি তালাবদ্ধ আছে। গতকাল দুপুরে গিয়েও একই চিত্র দেখা গেছে।
চট্টগ্রাম : নগরের দারুল ফজল মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় চট্টগ্রাম মহানগর ও দোস্ত বিল্ডিংয়ের চতুর্থতলায় চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় এখন তালাবদ্ধ। নগরের ১২২ নম্বর আন্দরকিল্লায় চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের কোনো স্মৃতিচিহ্ন নেই। অস্থায়ী কার্যালয় ভেঙে চারদিকে টিনের বেড়া দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় নেই। চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণ কার্যালয়ে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগসহ দলটির ভ্রাতৃপ্রতিম ও সহযোগী বিভিন্ন সংগঠনের কার্যালয়গুলোও বন্ধ। কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবদুল করিম গতকাল বলেন, কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া কাউকে নামতে দেওয়া হবে না। আমাদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত আছে। দারুল ফজল মার্কেটস্থ মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় দরজা-জানালা ভাঙা, দরজা তালাবদ্ধ। ভাঙা জানালা দিয়ে দেখা যায়, ভেতরে চেয়ার-টেবিল তছনছ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সেই সঙ্গে কাগজপত্রও মেঝেতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে।
খুলনা : খুলনা মহানগরের ৬৪ নম্বর লোয়ার যশোর রোডের ভবনের দ্বিতীয়তলার আলীগ কার্যালয় এখন পরিত্যক্ত পোড়া ও কঙ্কালসার। শঙ্খ মার্কেটে প্রবেশমুখের দোতলা ভবনটির নিচতলায় কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চললেও সেখানে দেখা মেলে না দলটির স্থানীয় কোনো নেতাকর্মীর। নিষিদ্ধ দলটির এই প্রধান কার্যালয়ই নয়, নগরীর দৌলতপুর, খালিশপুর, খানজাহান আলী, ফুলতলাসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা কার্যালয়ই বন্ধ। পুলিশ বলছে, নিষিদ্ধ দলটি যাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সে জন্য পুলিশ সজাগ রয়েছে। অফিসকেন্দ্রিক বা যেকোনোভাবে তারা যেন কোনো কার্যক্রম চালাতে না পারে, সে বিষয়ে পুলিশ সর্তক রয়েছে।
কক্সবাজার : কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের অফিস পরিত্যক্ত রয়েছে। পরিত্যক্ত অফিস ভবনটি দিনেরবেলায় মানুষশূন্য থাকলেও রাতে মাদকসেবীদের জমজমাট আখড়ায় পরিণত হয়। শহরের লালদিঘির পারে বহু বছর আগে অফিসটি ছিল। কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক) ২০২১ সালে লালদিঘি নামের পুকুরটি সংস্কার করার সময় আওয়ামী লীগের পুরনো অফিসটি ভেঙে দেয়। এরপর কউক নিজস্ব অর্থায়নে নতুন করে তিনতলাবিশিষ্ট একটি ভবন করে দেয়। সেই ভবনে জেলা জাসদ এবং জেলা জাতীয় পার্টিরও পৃথক অফিস রয়েছে। গণ-আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে স্থানীয় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার রোষানলে পড়ে ভবনটি। আগুনে ভবনের দরজা জানালা ও যাবতীয় চেয়ার-টেবিল পুড়ে গিয়ে পুরো অফিস ভবনটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। সেই থেকে অফিসটি দেখভাল করতেও কাউকে দেখা যায়নি।
বরিশাল : নগরীর বিবির পুকুরপারের জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়সহ শহরের ১৯টি কার্যালয়ের সবটিতে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। নেতাকর্মীবিহীন এসব পোড়া ভবন এখন পরিত্যক্ত। বরিশালনগরীর সদর রোডের বিবিরপুকুরপারে পাঁচতলাবিশিষ্ট সিটি করপোরেশনের এনেক্স ভবনের নিচতলার একটি অংশে ছিল আওয়ামী লীগের জেলা ও মহানগর কার্যালয়। ২০১৩ সালে দলীয় কার্যালয়টি উদ্বোধন করেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও তৎকালীন সিটি মেয়র শওকত হোসেন হিরণ। সেই থেকে দৃষ্টিনন্দন ভবনটিই আওয়ামী লীগের অস্থায়ী ঠিকানা হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ভবনটির ভেতর থেকে বিভিন্ন ধরনের মালপত্র খুলে নেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভবনটির নিচতলায় দেখা যায় আগুনে পোড়া ছাই, ভাঙা কাচ, পোড়া কাঠ। হাতুড়ি দিয়ে খোলা হয়েছে জানালার লোহা, সেগুলো নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কার্যালয়টিতে থাকা স্টিলের আলমারি, দরজাসহ অন্যান্য মালপত্র লুট হয়েছে। দরজাবিহীন কার্যালয়টি পরিত্যক্ত হিসেবে রয়েছে।
কুমিল্লা : দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ ও মহানগর আওয়ামী লীগ অফিসে এখন ভুতুড়ে অবস্থা। জেলা আওয়ামী লীগের অফিস তালাবদ্ধ থাকলেও পাশের মহানগর আওয়ামী লীগ অফিস ধ্বংসস্তূপ। আটতলা ভবনের দরজা-জানালার অবশিষ্ট কিছুই নেই। ভেঙে ফেলা হয়েছে মেঝে ও দেয়ালের টাইলস। প্রতিটি কক্ষ যেন একেকটি ভুতুড়ে কুঠুরিতে পরিণত হয়েছে। সন্ধ্যা হলেই ভবনের নিচতলার কক্ষগুলোতে বসে মাদকাসক্তদের আড্ডা, শৌচাগার হিসেবেও ব্যবহার হয় কয়েকটি কক্ষ। দুর্গন্ধে এই ভবনের কাছাকাছি ঘেষাও দুঃসাধ্য। লিফটসহ প্রতি তলার আসবাবে আগুনে পোড়ার চিহ্ন রয়েছে। জানা গেছে, কুমিল্লানগরীর রামঘাটলা এলাকায় ১০ শতক জমির ওপর আটতলা ভবনটি ছিল মহানগর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়। কনফারেন্স হল, মিডিয়া রুম, গেস্ট হাউস, ক্যাফেটরিয়া, ইনডোর গেম স্পট, একাধিক লিফট, সিসি ক্যামেরা, ইন্টারকম, অগ্নি-প্রতিরোধ ব্যবস্থা, ওয়াইফাইসহ অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সব সুযোগসুবিধা ছিল এই কার্যালয়ে।
কুমিল্লা মহানগর এবি পার্টির সভাপতি মুহাম্মদ গোলাম সামদানী বলেন, আওয়ামী লীগের কার্যালয় এখন মানুষের গণশৌচাগারে পরিণত হয়েছে।
ভোলা জেলা আ. লীগের পরিত্যক্ত কার্যালয় এখন গণশৌচাগার
ভোলা : ভোলা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় এখন গণশৌচাগার। গত ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে এ কার্যালয় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। গত ৬ ফেব্রুয়ারি বুলডোজার দিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়টির সামনের দেয়াল ও দোতলার ছাদ ভেঙে ফেলা হয়। গতকাল ভোলা বাংলা স্কুল মোড়ে অবস্থিত কার্যালয়টিতে গিয়ে দেখা গেছে, পরিত্যক্ত কার্যালয়ের নিচতলায় দুটি মোটরসাইকেল রাখা আছে। প্রস্রাবের গন্ধে ভেতরে যাওয়া যাচ্ছে না।
ভোলার চরফ্যাশন : ভোলার চরফ্যাশনে আওয়ামী লীগের পরিত্যক্ত তিনতলা কার্যালয়ে জাতীর নাগরিক পার্টি (এনসিপির) সাইনবোর্ড লাগিয়ে কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। গত শনিবার চরফ্যাশন পৌর সদরের কলেজ রোডে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় দখল করা হয়। পরের দিন রবিবার সেটিতে দরজা লাগিয়ে সংস্কার করা হয়। এনসিপির চরফ্যাশন উপজেলা শাখার নেতা দাবি করে অহিদ ফয়সাল জানান, এনসিপির দলীয় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য চরফ্যাশন উপজেলা এনসিপির নেতা আমজাদ হাবিব, নুরে আলম নাসিম, শরিফ হোসাইন ও মো. শাহাবুদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে তাঁরা উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় দখলে নিয়েছেন। এখন থেকে চরফ্যাশনে এনসিপির দলীয় সব কার্যক্রম এই ভবন থেকেই পরিচালিত হবে। এই ভবনটি করা হয়েছে সরকারি জায়গা দখল করে এবং কিছু জমি মানুষের রেকর্ডীয় সম্পদ। তারা রেকর্ডীয় মালিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং সরকারি জমি লিজে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
বরগুনা পৌর শহরের শেরেবাংলা রোডের ফার্মেসিপট্টি এলাকায় সরকারি জমিতে নির্মিত বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কার্যালয়টিতে নেই কোনো দলীয় সাইনবোর্ড। জেলার অন্যান্য উপজেলায়ও আওয়ামী লীগ কার্যালয় পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। এ ছাড়া আমতলি উপজেলা পরিষদ এলাকায় জেলা পরিষদের জমিতে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়টি ওঠানো হয়। পটপরিবর্তনের পর উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়টি এখন আমতলি উপজেলা বিএনপির কার্যালয় হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় থাকা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়গুলো ব্যস্ততম এলাকার মধ্যেই। তবে জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকেই ওই সব কার্যালয়ে সুনসান নীরবতা বিরাজ করছে। জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ঝুলছে তালা। অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অনতিদূরের ওই কার্যালয়ে ভুতুড়ে পরিবেশ। জুলাই আন্দোলনের সময় কার্যালয়টি ভাঙচুর করা হয়। আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় ছিল দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের নিচতলায়। এটি পুড়িয়ে দেওয়ার পর আর মেরামত করা হয়নি। বিজয়নগরে চম্পকনগরে এক আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে থাকা কার্যালয়ও এখন খোলা হয় না। আশুগঞ্জ বাজারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজি সফিউল্লাহর বাসভবনের কার্যালয়ের সাইনবোর্ড নামিয়ে ফেলা হয়েছে আরো আগেই।
মেহেরপুর : গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে বিকেলের দিকে মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় পুড়িয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। আগুনে কার্যালয়ে সব আসবাব পুড়ে ছাই হয়। তারপর থেকে সে অবস্থায় পড়ে রযেছে কার্যালয়টি। কার্যালয়ের বারান্দায় ভ্রাম্যমাণ একজন কাপড় ব্যবসায়ী ব্যবসা করছেন গত নভেম্বর থেকে।
যশোর শহরের গাড়িখানা রোডে আওয়ামী লীগের জেলা কার্যালয় তালাবদ্ধ। শহরের পুরনো কসবায় দলটির প্রভাবশালী দুই নেতা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সাবেক সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদার ও কাজী নাবিল আহমেদের বাসভবনসংলগ্ন রাজনৈতিক কার্যালয় দুটিও বন্ধ। ঘোপ সেন্ট্রাল রোডের আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের নিজস্ব কার্যালয়টিও বন্ধ।
ঝিনাইদহ : ২০২২ সালে ঝিনাইদহ শহরের শিল্পকলা একাডেমির পেছনে সাবরেজিস্ট্রি অফিসের জায়গা দখল করে নির্মাণ করা হয় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়। বিশাল ভবনে দলীয় নেতাকর্মীরা বিভিন্ন কর্মসূচি ছাড়াও প্রতিনিয়িত আড্ডা দিতেন। ভবনটি ছিল শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জনরোষে ধ্বংস হয়ে গেছে কার্যালয়টি। সেখানে আস্তানা গেড়েছে মাদকসেবী ও ভবঘুরেরা। বিকেলের পর নিয়মিত আড্ডা বসে নেশাখোরদের।
এ ছাড়া জেলার মহেশপুর, কোটচাঁদপুর, কালীগঞ্জ, হরিণাকুণ্ডু উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় গণবিক্ষোভে ধ্বংস হয়ে গেছে। সেখানেও জেলা কার্যালয়ের মতো একই ধরনের কর্মকাণ্ড চলছে। শেলকুপা উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের ফটকও বন্ধ করে দিয়েছেন স্থানীয়রা।
নোয়াখালী : এক সময়ে দিনভর নেতাকর্মীদের কোলাহলে প্রাণচাঞ্চল্য নোয়াখালী জেলা আওয়ামী কার্যালয় এখন তালাবদ্ধ হয়ে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বিগত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় ভবনটিতে অগ্নিসংযোগসহ ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। পরে নেতাকর্মীরা পালিয়ে যাওয়ার পর পুলিশ পোড়া ভবনটিতে তালা ঝুলিয়ে দেয়। সেই থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওযামী লীগের নোয়াখালী জেলা কার্যালয় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।
এ ছাড়া নওগাঁ শহরের সরিষাহাটির মোড়ে দলীয় কার্যালয় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এভাবে বেশির ভাগ জেলায় আওয়ামী লীগ কার্যালয় পরিত্যক্ত, গণশৌচাগার ও মাদকসেবনকেন্দ্র হয়ে উঠেছে বলে আমাদের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।