এবার কি চালের দাম কমাতে পারবে সরকার
প্রথম নিউজ, ঢাকা : সয়াবিন তেলের মতো চালের বাজার নিয়েও বিপাকে পড়েছে সরকার। তবে সয়াবিনের মতো চাল নিয়ে বিশ্ববাজারে নেই কোনও টানাপোড়েন। পর্যাপ্ত মজুত, আমদানি এবং বাম্পার ফলনের পরও এর দাম নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। তাই চাল নিয়ে এবার নড়েচড়ে বসছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে শুরু হতে যাচ্ছে আলোচনা। প্রশ্ন উঠেছে, সভা-বৈঠক করে কি এবার চালের দাম কমাতে পারবে সরকার?
এর আগে সরকারের কোনও কার্যক্রমই চালের বাজার স্থিতিশীল করতে পারেনি। করোনা, লকডাউন, বিধিনিষেধ—নানা অজুহাতে দাম বেড়েই চলেছে। বাজারে নিম্নমানের মোটা চালের কেজিও এখন ৫০ টাকার বেশি।
চাল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সরকারের দফায় দফায় বৈঠকে সুফল আসেনি। দাম স্থিতিশীল রাখতে বাজার তদারকির নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এমন পরিস্থিতিতে আবারও এলাকা ভাগ করে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আবারও আলোচনায় বসছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। ইতোমধ্যে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা ডেকেছে মন্ত্রণালয়। রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের সম্মেলন কক্ষে সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকালে মতবিনিময় সভা হবে। অন্যটি হবে পরদিন মঙ্গলবার। ওই দিন বিকাল ৪টায় রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় মতবিনিময় সভা। সভায় খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা, চালকল মালিক, আড়তদার ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন।
কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, চালের চাহিদার অনুপাতে দ্রুত উৎপাদন বাড়াতে রোডম্যাপ প্রণয়ন করা হচ্ছে। এ বছর আউশ, বোরো ও আমনে রেকর্ড উৎপাদন হয়েছে। সরকারি মজুতও সর্বকালের সর্বোচ্চ। তারপরও দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, চালের মূল্য নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে উৎপাদন বাড়ানোর দিকে ঝুঁকছে সরকার। এর জন্য দরকার উচ্চ ফলনশীল ইনব্রিড ও সুপার হাইব্রিড জাতের আবাদ বাড়ানো। সেই লক্ষ্যে রোডম্যাপ আসছে।
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র আরও জানায়, চালের উৎপাদন বাড়াতে নতুন উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল জাতগুলোকে দ্রুত মাঠে নিয়ে যেতে হবে। সুপার হাইব্রিডেরও চাষ বাড়াতে হবে। এছাড়া, পাহাড়, হাওর, উপকূলসহ প্রতিকূল এলাকায় ধানের চাষ সম্প্রসারণ করতে হবে।
কৃষিমন্ত্রী জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক বাজারেও খাদ্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। এছাড়া দেশে এখন ১০ লাখ রোহিঙ্গা আছে। প্রতিবছর ২২-২৪ লাখ নতুন মুখ যোগ হচ্ছে। গবাদিপশু ও মাছের খাদ্য হিসেবেও চালের ব্যবহার হচ্ছে। মানুষের আয় ও জীবনযাত্রার মান বেড়েছে। এসব মিলে চালের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। ফলে, দাম কিছুটা বেশি। তবে এই মুহূর্তে দেশে খাদ্যের সংকট নেই বলে জানান মন্ত্রী।
খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, পাইকারি বাজারগুলোতে মজুত করে কৃত্রিম সংকট যেন না করা হয়, সে বিষয়ে কঠোর তদারকির সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রণালয়। এ জন্য রাইস মিলগুলোতেও সতর্ক দৃষ্টি রাখছে সরকার।
এমন প্রেক্ষাপটেই প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির সভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চাল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার জানিয়েছেন, চালের বাজারের পরিস্থিতি, সরবরাহ, মজুত ও সংগ্রহ বিষয়ে আপডেট থাকতেই সভা ডাকা হয়েছে। এ সভায় সরকারি-বেসরকারি চাল সংশ্লিষ্টরা থাকবেন। সভার পর সিদ্ধান্ত জানানো হবে
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: