এবার উল্টো পথে বিমা
গত সপ্তাহে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম কমার শীর্ষ ১০টি স্থানই দখল করেছে বিমা খাতের প্রতিষ্ঠান।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: কিছুদিন আগে শেয়ারবাজারে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে একচেটিয়া দাপট দেখিয়েছে বিমা কোম্পানিগুলো। এখন সেই বিমা কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম ধারাবাহিকভাবে কমতে দেখা যাচ্ছে। গত সপ্তাহে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম কমার শীর্ষ ১০টি স্থানই দখল করেছে বিমা খাতের প্রতিষ্ঠান।
বিমা কোম্পানিগুলোর দাম কমার প্রভাব পড়েছে অন্য খাতের ওপর। ফলে দাম বাড়ার থেকে দাম কমার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে তিনগুণ প্রতিষ্ঠান। সপ্তাহজুড়ে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৪২টি প্রতিষ্ঠান। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪১টির।
দাম কমার তালিকায় বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান থাকলেও সবচেয়ে বেশি কমেছে মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দাম। বিনিয়োগকারীদের একটি বড় অংশ এই প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ানোর কারণে সপ্তাহজুড়েই দাম কমেছে। এতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম কমার শীর্ষ স্থানটি দখল করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
গত সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দাম কমেছে ২৩ দশমিক ৯৯ শতাংশ। টাকার অঙ্কে প্রতিটি শেয়ারের দাম কমেছে ৩১ টাকা ৪০ পয়সা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে কোম্পানিটির শেয়ার দাম দাঁড়িয়েছে ৯৯ টাকা ৫০ পয়সা, যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ছিল ১৩০ টাকা ৯০ পয়সা।
এই দরপতনের আগে অর্ধ-মাস ধরে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বাড়ে। গত ২২ মে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ৭৩ টাকা ৫০ পয়সা। এরপর থেকে কোম্পানিটির শেয়ার দাম ধারাবাহিকভাবে বাড়তে থাকে। দফায় দফায় বেড়ে প্রতিটি শেয়ারের দাম ১৩০ টাকা ৯০ পয়সা পর্যন্ত ওঠে। এরপর এখন কোম্পানিটির শেয়ার দাম কমতে দেখা যাচ্ছে।
শেয়ার দামে এমন উত্থান-পতন হওয়া কোম্পানিটি সর্বশেষ ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত বছরে বিনিয়োগকারীদের ১৫ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দেয়। তার আগে ২০২০ সালেও ১৫ শতাংশ নগদ ও ১৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি। এছাড়া ২০১৯, ২০১৮ ও ২০১৭ সালে কোম্পানিটি ২০ শতাংশ করে নগদ লভ্যাংশ দেয়।
২০০৫ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ৪২ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আর শেয়ার সংখ্যা ৪ কোটি ২৪ লাখ ৫ হাজার ২১৮টি। এরমধ্যে ৩০ দশমিক ৫৪ শতাংশ শেয়ার আছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে। বাকি শেয়ারের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩৭ দশমিক ৬০ শতাংশ এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩১ দশমিক ৮৬ শতাংশ শেয়ার আছে।
এদিকে দাম কমে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। ফলে সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৯০ কোটি ৩৩ লাখ ৯ হাজার টাকা। আর প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩৮ কোটি ৬ লাখ ৬১ হাজার টাকা।
মেঘনা লাইফের পরেই গত সপ্তাহে দাম কমার তালিকায় ছিল রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স। সপ্তাহজুড়ে এই কোম্পানিটির শেয়ার দাম কমেছে ২০ দশমিক ৯৬ শতাংশ। ২০ দশমিক ৯৪ শতাংশ দাম কামার মাধ্যমে পরের স্থানে রয়েছে প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
এছাড়া গত সপ্তাহে দাম কমার শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা- পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ১৯ দশমিক ২০ শতাংশ, প্রোগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ১৯ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ, চাটার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ১৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ, ইসলামীক কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্সের ১৮ দশমিক ৫১ শতাংশ, পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ১৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্সের ১৬ দশমিক ৯৬ শতংশ এবং গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের ১৬ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ দাম কমেছে।