উত্তরাধিকার সূত্রে পেলেও রাখা যাবে না ৬০ বিঘার বেশি কৃষিজমি

অতিরিক্ত কৃষিজমি নির্ধারিত ক্ষতিপূরণ দিয়ে সরকার খাস করতে পারবে। গতকাল সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।

উত্তরাধিকার সূত্রে পেলেও রাখা যাবে না ৬০ বিঘার বেশি কৃষিজমি

প্রথম নিউজ, অনলাইন: নতুন ভূমি সংস্কার আইন অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি ৬০ বিঘার বেশি কৃষিজমি রাখতে পারবেন না। এমনকি উত্তরাধিকার সূত্রে বেশি জমি পেলেও সেখান থেকে নিজের পছন্দমতো ৬০ বিঘা কৃষিজমি রেখে অতিরিক্ত জমি ছেড়ে দিতে হবে। অতিরিক্ত কৃষিজমি নির্ধারিত ক্ষতিপূরণ দিয়ে সরকার খাস করতে পারবে। গতকাল সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।

কোনো ব্যক্তির ৬০ বিঘা কৃষিজমি আছে, তার বাবার কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে আরও ৬০ বিঘা বা কমবেশি কৃষিজমি পেলেন তখন কী হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি উত্তরাধিকার হিসেবে পাওয়া কৃষিজমি এবং তার নিজের কৃষিজমির মধ্য থেকে নিজের সুবিধামতো সর্বোচ্চ ৬০ বিঘা জমি রাখতে পারবেন। অবশিষ্ট জমি সরকার বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ক্ষতিপূরণ দিয়ে খাস করতে পারবে। তবে কোনো কোম্পানি অনুমতি নিয়ে ৫০০-১০০০ বিঘা রাখতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে আমরা দেখবো কী কারণে তারা নিতে চায়। এছাড়াও সমবায় সমিতিসহ ৮টি ক্ষেত্রে ৬০ বিঘার বেশি কৃষিজমি রাখার সুযোগ রাখা হয়েছে। এই বিষয়টি বিধিমালায় ঠিক করা হবে। 

‘ভূমি অপরাধ ও প্রতিকার আইন-২০২৩’-এর বিষয়ে ভূমিমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে দেশবাসী এ আইনটির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। মাঝপথে অনেকে একটু হতাশ হয়ে গিয়েছিলেন যে, এটা হয়তো আর আলোর মুখ দেখবে না। আল্লাহ্‌র অশেষ রহমত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসিকতার কারণে আমরা জাতিকে একটি সুন্দর বিল উপহার দিতে সক্ষম হয়েছি। তিনি বলেন, আমরা যখন আইনটি মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করবো, তখন যদি অভিজ্ঞতার আলোকে আইনটি সংশোধন করার প্রয়োজন হয়, সেটা আমরা করবো।

এ সময় ভূমি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (আইন) মো. খলিলুর রহমান বলেন, ৬০ বিঘার বেশি কৃষিজমি না রাখার বিধানটি নতুন নয়। তিনি বলেন, একসময় জমিদারদের অধীনে অধিকাংশ জমি ছিল। কিন্তু ১৯৫০ সালে নতুন নিয়ম করে বলা হয়, কারও ৩৭৫ বিঘার বেশি কৃষিজমি থাকতে পারবে না। এরপর বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তা কমিয়ে ১০০ বিঘা করেন। আর ১৯৮৪ সালে সামরিক শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তা ৬০ বিঘা করে অধ্যাদেশও করেছিলেন।

কিন্তু অধ্যাদেশের আলোকে বিধিমালা না হওয়ায় ৪০ বছরেও সেটি বাস্তবে কার্যকর হয়নি। তাই আদালতের নির্দেশে সামরিক শাসনের সময়ে জারি করা অধ্যাদেশ বাতিল করে এখন নতুন আইন করে সরকার তা বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছে। যার মূল কথা হলো কোনো একক ব্যক্তির ৬০ বিঘার বেশি কৃষিজমি থাকতে পারবে না। আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- ভূমিসচিব মো. খলিলুর রহমানসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মী।