ইউক্রেন সংকট: পণ্যবাজারে ৫০ বছরের সবচেয়ে বড় ধাক্কা আসন্ন

ইউক্রেন সংকট: পণ্যবাজারে ৫০ বছরের সবচেয়ে বড় ধাক্কা আসন্ন
ইউক্রেন সংকট: পণ্যবাজারে ৫০ বছরের সবচেয়ে বড় ধাক্কা আসন্ন-প্রথম নিউজ

প্রথম নিউজ, ডেস্ক : ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বের পণ্যবাজারে অর্ধ শতকের মধ্যে সবচেয়ে বড় ধাক্কা লাগতে যাচ্ছে বলে সতর্ক করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিশ্ব ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দেওয়া হয়।  

ইউক্রেনে যুদ্ধ যত দীর্ঘ হবে, খাদ্য পণ্যের দাম বাড়তি থাকার সময়সীমাও তত বাড়তে থাকবে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব ব্যাংক।

এতে বলা হয়, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের কারণে গ্যাস থেকে গম ও তুলা পর্যন্ত বিভিন্ন পণ্যে দাম অনেক বেড়ে গিয়েছে এবং এই ধাক্কা ১৯৭০ এর দশকের পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে। জ্বালানির দাম ৫০ শতাংশের বেশি বাড়ার দিকে এগোচ্ছে, যা ব্যবসা ও সংসার চালানোর খরচ অনেক বাড়িয়ে দেবে।

বিশ্ব ব্যাংকের এ প্রতিবেদনের সহ-লেখক পিটার ন্যাগল বিবিসিকে বলেন, পণ্যের দামের এই ঊর্ধ্বগতি এরইমধ্যে বড় ধরনের অর্থনৈতিক ও মানবিক প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। বিশ্বজুড়ে মানুষকে জীবনযাত্রার বাড়তি খরচ যোগাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

জ্যেষ্ঠ এ অর্থনীতিবিদ বলেন, আমরা গরীব পরিবারগুলোর জন্য বেশি উদ্বিগ্ন, যেহেতু তাদের আয়ের সিংহভাগ খাবার ও জ্বালানির পেছনে খরচ হয়। পণ্যের দাম বাড়লে তারাই সবচেয়ে ঝুঁকির মুখে পড়ে।  

বিশ্ব ব্যাংক বলছে, ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে এ বছরের মার্চ পর্যন্ত বিশ্ব টানা ২৩ মাস জ্বালানির দামে ঊর্ধ্বগতি দেখছে। মধ্যপ্রাচ্য সংকটের জেরে ১৯৭৩ সালের জ্বালানি মূল্য বৃদ্ধির পর এটাই দীর্ঘতম সময় ধরে জ্বালানির দাম বেড়ে চলার ঘটনা।

একইভাবে জ্বালানি তেলের দামও ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাড়তি থাকবে এবং চলতি বছরজুড়ে প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুডের দাম গড়ে ১০০ ডলারে বিক্রি হবে, যা বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতির হার বাড়ার অন্যতম কারণ হিসেবে ভূমিকা রাখবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক।

সবচেয়ে বেশি বাড়বে ইউরোপে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম, যা দ্বিগুণের বেশি বেড়ে যেতে পারে বলে বিশ্ব ব্যাংকের ধারণা। আগামী বছরের শরৎ এবং ২০২৪ সালের পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, গত বছরের তুলনায় ২০২৪ সালে গ্যাসের দাম ১৫ শতাংশ বেশি থাকবে।

রাশিয়া বর্তমানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের চাহিদার ৪০ শতাংশ গ্যাস ও ২৭ শতাংশ তেল সরবরাহ করে। কিন্তু ইইউ রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে বিকল্প উৎস থেকে জ্বালানি চাহিদা পূরণের চেষ্টা করছে, যা বিশ্বজুড়ে তেল-গ্যাসের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। মূলত চাহিদা ও সরবরাহ ভারসাম্য নষ্ট হওয়ায় সমস্যা বেড়ে যাচ্ছে।

বিশ্ব ব্যাংকের পূর্বাভাসে সতর্ক করা হয়েছে, অনেক খাদ্য পণ্যের দাম হঠাৎ লাফিয়ে বাড়ার মত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য মূল্য সূচক এরইমধ্যে ইতিহাসের সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছে। ছয় দশক আগে এই সূচক চালু করা হয়।

গমের দাম ৪২ দশমিক ৭ শতাংশ বাড়তে পারে এবং ডলারের হিসাবে এটা দাম বৃদ্ধির নতুন রেকর্ড গড়ার পথে আছে। অন্যান্য খাদ্য পণ্যের মধ্যে বার্লি ৩৩ দশমিক ৩ শতাংশ, সয়াবিন ২০ শতাংশ, ভোজ্য তেল ২৯ দশমিক ৮ শতাংশ ও মুরগির দাম ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ বাড়তে পারে। এসব পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি এটাই ইঙ্গিত করছে যে, রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে এসব পণ্যের রপ্তানি রাতারাতি কমে গেছে।

সার, বিভিন্ন ধাতু ও খনিজ দ্রব্যের মত কাঁচামালের দামও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে বিশ্ব ব্যাকের পূর্বাভাসে। তবে কাঠ, চা ও চালের মত কয়েকটি পণ্যের দাম কমবে বলে আশা করা হয়েছে সেখানে।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom