আমাদের লাশ কি দেশে ফেরাতে চান?
ইউক্রেনে ভারতের উদ্ধার প্রক্রিয়া নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন সেখানকার ভারতীয় পড়ুয়ারা।
প্রথম নিউজ,ডেস্ক : ইউক্রেনে ভারতের উদ্ধার প্রক্রিয়া নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন সেখানকার ভারতীয় পড়ুয়ারা। সরকারকে তাদের প্রশ্ন, আপনারা কি আমাদের জীবিত অবস্থাতেই দেশে ফেরাবেন, না কি লাশ নিয়ে যেতে চান? মঙ্গলবার খারকিভের রাস্তায় খাবার কিনতে বেরিয়ে রাশিয়ার বোমা বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে এক ভারতীয় ছাত্রের। কর্নাটকের ওই ছাত্রের নাম নবীন শেখারাপ্পা জ্ঞানগউধর। নবীনের মৃত্যুর পরই খারকিভের আর এক ভারতীয় ছাত্রী পূজা প্রহরাজ টুইট করে ভারত সরকারের কাছে জানতে চেয়েছেন, ‘গত ছয়দিনে ভারতীয় দূতাবাসের তরফে খারকিভের ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য কিচ্ছু করা হয়নি। এর মধ্যেই আজ একজন ভারতীয় ছাত্র নিহত হলেন। কাল হয়তো আরো ১০০ জন মারা যাবেন। তারপর ১০০০।’ ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দফতরের নাম করে এরপর ওই ছাত্রী জানতে চান, বিদেশ বিষয়ক মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর কি আমাদের চার হাজার দেহ ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চান?’ খারকিভের ওই ছাত্রী হয়ত খারকিভের ভারতীয় ছাত্রদের মোট সংখ্যার উল্লেখ করেছেন। তবে গোটা ইউক্রেনে এখন আটকে রয়েছেন কম করে ১৬ হাজার ছাত্রছাত্রী।
ভারতের এই ছাত্রছাত্রীদের আত্মীয়রা তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছিলেন দিল্লিকে। জবাবে সোমবারই প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে জানানো হয়, পড়ুয়াদের দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আত্মীয়দের এই উদ্ধার কাজের প্রতি মূহূর্তের খবর দেয়ার নির্দেশও দেয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে। যদিও খারকিভের ওই ছাত্রীর দাবি, দূতাবাস তাদের নিরাপত্তার সামান্য ব্যবস্থাও করেনি ভারতীয় দূতাবাস। বরং ফোন করলে ফোন ধরা হয়নি ফোন। খারকিভে আটকে থাকা ওই ছাত্রছাত্রীরা জানিয়েছেন, তাদের অনেকেই দিনের পর দিন খেতে পাচ্ছেন না। মেয়েদের স্যানিটারি ন্যাপকিন, স্বাস্থ্যসম্মত শৌচালয় কোনো কিছুরই ব্যবস্থা নেই। এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের স্থানীয় বাসিন্দারাও তাদের সাহায্য করতে চাইছেন না।
ওই ছাত্রীরই পোস্ট করা একটি ভিডিয়োয় দুই ভারতীয় ছাত্রী জানিয়েছেন, ইউক্রেনের মানুষ তাদের ওপর ক্ষিপ্ত, বিরক্ত। সাহায্যে বিমুখ। কেন তাদের প্রতি এমন আচরণ? তার কারণ ওই ছাত্রীরা মুখে না বললেও অনুমেয়। কেন না রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরোধী সংকল্প প্রস্তাবে রাষ্ট্রপুঞ্জে কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত থেকেছে ভারত।
খারকিভের ওই ছাত্রীদের বক্তব্য, ‘খারকিভে আমরা জানতে পারছি, কিভে উদ্ধার কাজ চলছে। কিন্তু খারকিভের অবস্থা কিভের থেকেও খারাপ। এখানে লাগাতার ক্ষেপণাস্ত্র এবং বোমা বর্ষণ চলছে। খারকিভে আমরা পাঁচ মিনিটের জন্যও আমাদের আশ্রয় স্থল থেকে বের হতে পারছি না। তার কারণ যে কোনো সময়েই প্রাণ হারানোর ভয় রয়েছে এখানে।’
সূত্র : আনন্দবাজার
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews