Ad0111

 আবারও মাশরাফির কাঠগড়ায় টাইগারদের কোচিং প্যানেল

 আবারও মাশরাফির কাঠগড়ায় টাইগারদের কোচিং প্যানেল
সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা

প্রথম নিউজ, ডেস্ক : গত মাসের শুরুর দিকে এক বিস্তারিত বার্তায় বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের কোচিং প্যানেল নিয়ে নিজের অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। বিদেশি কোচদের চেয়ে দেশিদের দিকেই বেশি প্রাধান্য দেয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি।

এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মাঝামাঝি সময়ে ফের মাশরাফির কাঠগড়ায় জাতীয় দলের বিদেশি কোচিং প্যানেল। দক্ষিণ আফ্রিকানদের দিয়ে বোঝাই কোচিং প্যানেলের খোলামেলা সমালোচনাই করেছেন মাশরাফি। শ্রীলঙ্কার কাছে সুপার টুয়েলভের ম্যাচে হারের পর নিজের বিশ্লেষণে এসব কথা বলেছেন টাইগারদের সফলতম অধিনায়ক।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেয়া মাশরাফির পোস্টটি হুবহু নিচে দেয়া হলো:

ম্যাচের একদিন পার হয়ে গেল কতো কথা শুনলাম যার অনেক কিছুরই যুক্তি আছে। কারণ দল হেরে গেলে মানুষ তার প্রতিক্রিয়া নিজের মতো করে দেবে এটা স্বাভাবিক। আমার মনেও অনেক কিছুই এসেছে। তবে দুইটা জিনিস খুব বেশি মনে হচ্ছে। ম্যাচটা হারার জন্য কি শুধুই রিয়াদ আর লিটনই দায়ী? আর কোন বিষয় কি নেই?

আমার যে বিষয়টি মনে হয়েছে সেটা হলো----

১--- ম্যাচের ৯.৪ ওভার ৭৯ রানে ওদের ৪ উইকেট, ঠিক তখন আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী ড্রিংকস ব্রেক তার মানে কোচ মাঠের ভেতর আসবে। আমাদের কোচ ও এসেছিলো। তাহলে উনি এসে রিয়াদের সঙ্গে কী কথা বলেছিলেন। যদি বলে থাকে তাহলে কি সব দায় রিয়াদের? মানলাম অন ফিল্ড ক্যাপ্টেন কল ইজ ফাইনাল। তবে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের ক্রাঞ্চ মোমেন্টে কি কোচ ডিসকাশন করে না? কারণ ক্যাপ্টেন তখন বিভিন্ন বিষয়ে চাপে থাকে। তার প্ল্যান কি এটা কি জানতে চেয়েছিল কোচ। আর যদি কথা হয়ে থাকে তাহলে কি কোচের প্রেস হ্যান্ডেল করা উচিত ছিলো কি না?

কারণ রিয়াদের ভুলটা ধরা হয়েছে ঠিক ঐ সময় থেকেই। কারণ ১১ নাম্বার ওভার করে মেহেদি; দলের মুল বোলার। ১২ নাম্বার ওভার করে রিয়াদ সম্ভবতো ৫-৬ রান দেয় ১৩ নাম্বার ওভার করে আফিফ যে ওভারে ১৫ রান হয়। কিন্তু রিয়াদ যে চিন্তা থেকে আফিফকে বলে এনেছিল সেটাতেও কিন্তু সুযোগ তৈরি হয়েছিল। যদি সুযোগ হাতছাড়া না হতো তাহলে আমরা বলতাম, দারুন ক্যাপ্টেন্সি। ক্যাচ মিসের অযুহাত না দিলেও এটাই সত্য ক্যাচ মিস এই প্রথম হয়নি আর লিটন দলের সেরা ফিল্ডারদের একজন। কোন কোন সময় ভাগ্যটাও সঙ্গে থাকতে হয়।

তাহলে স্রেফ দল সফল না হওয়ার কারণে এই দুজনকে এতোটা তুলোধুনো করা কতোটা ঠিক আমি শিওর না। আর ঠিক এ কারণেই আমার মনে হয়েছে, যদি কোচ এ বিষয়ে রিয়াদের সঙ্গে কথা না বলে থাকে তাহলে তো ব্রেকের সময় দলের টিম বয়কেই মাঠে পাঠিয়ে দেওয়া যায় হাই-হ্যালো করতে। কোচের আর প্রয়োজন কী?

২--- ম্যাচের আগে উইকেট অ্যাসেস শুধু ক্যাপ্টেন করে না, পুরো টিম ম্যানেজমেন্ট সাথে থাকে। তাহলে টিম করার সময় চিন্তা করেছে উইকেট স্লো হবে যার কারণে তাসকিনকে বসিয়ে নাসুমকে খেলানো। কিন্তু নাসুমকে পাওয়ার প্লের পর বোলিং করানো হলো না। কারণ দুজন বাহাতি ব্যাটসম্যান উইকেটে। তাহলে আগেই চিন্তা করা উচিত ছিল শ্রীলংকার টপঅর্ডারে বাহাতি ব্যাটসম্যান বেশি। তার ওপর মাঠের একপাশে মাত্র ৫৬ গজ (সীমানা)। যখন নাসুমকে নেওয়া হয়েছে তাহলে ব্রেকের সময় কোচ রিয়াদকে কি বলেছে, যে নাসুম দলের মূল বোলার, ওকে ব্যাক করো। কারণ ঐ নাসুমই ব্রেকটা পরে দিয়েছে। ততক্ষণে ম্যাচ প্রায় শেষ। তাহলে ঐ সময় কোচ কি বসে বসে কোন প্ল্যান না করে শুধু খেলা দেখেছে। আবারও বলছি সিদ্ধান্ত রিয়াদ নেবে কিন্তু ওকে তো হেল্প করতে হবে। কারণ মাঠে ক্যাপ্টেন কখনও কখনও অসহায় হয়ে পড়ে। আর ঠিক তখনই টিম ম্যানেজমেন্টকে টেক অফ করতে হয়। অন্যান্য দলে তো তাই দেখি।

৩--আরও অনেক বিষয় আছে বলা যায়। তবে লিটনের ক্যাচ মিসের কোন এক্সকিউজ দেবো না। এমনকি লিটন নিজেও দেবে না। তবে ক্যাচ মিস খেলার একটা অংশই। কিন্তু ফিল্ডিং কোচের কাছে কি এ বিষয়গুলো নিয়ে জানতে চাওয়া হয়। ক্যাচ মিস কি এই প্রথম হলো? ২০১৯ বিশ্বকাপের পর ম্যানেজমেন্টের প্রায় সবাই চাকরি হারিয়েছে, স্রেফ বর্তমান ফিল্ডিং কোচ ছাড়া। তাহলে আমরা বিশ্বকাপে বা তারপর কি সেরা ফিল্ডিং সাইড হয়ে গিয়েছি।

এখন টিম ম্যানেজমেন্ট দেখলে মনে হয় একটা রিহ্যাব সেন্টার। যেখানে সাউথ আফ্রিকার সব চাকরি না পাওয়া কোচগুলো একসঙ্গে আমাদের রিহ্যাব সেন্টারে চাকরি করছে। এদের বাদ দেওয়া আরও বিপদ কারণ চুক্তির পুরো টাকাটা নিয়ে চলে যাবে। তাহলে দাঁড়ালো কি? তারা যতোদিন থাকবে আর মন যা চাইবে তাই করবে। হেড কোচ এক এক করে নিজ দেশের সবাইকে আনছে এরপর যারা অস্থায়ীভাবে আছে তাদেরও সরাবে আর নিজের মতো করে ম্যানেজমেন্ট সাজাবে। তাও মেনে নিলাম কিন্তু রাসেল (হেড কোচ) ম্যানেজমেন্টের জন্য যেভাবে স্টেপআপ করে, মূল দলের জন্য তাহলে লুকিয়ে কেন। কেন তামিম, মুশফিক, রিয়াদ ভালো থাকে না। এটা ঠিক করা কি তার কাজ না?

তারপরও দায় খেলোয়াড়দেরকেই নিতে হয়/হবে।এটাই স্বাভাবিক কারণ মাঠে তারাই খেলে কিন্তু একটা বিষয় পরিষ্কার যে খেলোয়াড়দেরকে সেরকম পরিবেশ করে দিতে হবে। তাদেরকে বোঝাতে হবে তাদের বিপদে কেউ পাশে না থাকুক অন্তত টিম ম্যানেজমেন্ট থাকবে।

আমি আমার ক্যাপ্টেনসির শেষ প্রেস কনফারেন্সে বলেছিলাম, এই দলের কোচ যেই হোক না কেন এখন এই দলের রেজাল্ট করার সময়, এক্সপেরিমেন্টের না। কোচের চাহিদা মেটানোর আগে আমাদের দেশের স্বার্থ আগে দেখতে হবে।কারণ ক্রিকেট দেশের মানুষের কাছে এখন স্রেফ খেলা নাই রীতিমতো আবেগে পরিণত হয়েছে।

ভালো করুক আমার প্রিয় দল। আল্লাহ সহায় হোন আমাদের।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

This site uses cookies. By continuing to browse the site you are agreeing to our use of cookies & privacy Policy from www.prothom.news