আধুনিক প্রযুক্তি ই-টিকিট
অষ্টম শ্রেণির তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বইয়ের দ্বিতীয় অধ্যায়ে তোমরা ই-টিকিট সম্পর্কে জেনেছ। ভ্রমণ ছাড়াও আরো অনেক ক্ষেত্রেই এই প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে—

প্রথম নিউজ, অনলাইন: ই-টিকিটের পূর্ণাঙ্গ রূপ ‘ইলেকট্রনিক টিকিট’। বাস, রেল বা আকাশপথে ভ্রমণে ই-টিকিট প্রযুক্তি বহুল ব্যবহৃত। এতে সুবিধা হলো, ঘরে বসে অনলাইনে টিকিট সংগ্রহ করা যায়। আবার কাউন্টারের ভিড় এড়ানোও সম্ভব হয়।
কনসার্ট, সিনেমা হল অথবা পার্কে প্রবেশের জন্যও ই-টিকিট ব্যবহারের প্রচলন বেড়েছে।
এই প্রযুক্তি পুরোপুরি ইন্টারনেটের ওপর নির্ভরশীল। ই-টিকিটের ধারণার জন্ম ১৯৯০-এর দশকের মধ্যভাগে। যুক্তরাষ্ট্রের সাউথওয়েস্ট ও ভ্যালুজেট নামের দুটি এয়ারলাইন কম্পানি ১৯৯৪ সালে প্রথম বাণিজ্যিকভাবে ই-টিকিটের ব্যবহার শুরু করে।
২০০৮ সালে বিমানযাত্রায় ই-টিকিটের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন [আইএটিএ]।
নিজস্ব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিক্রি করে ই-টিকিট। নাম ও অন্যান্য তথ্য ওয়েবসাইটের ফরমে লিখে নির্ধারিত মূল্যও পরিশোধ করতে হয় ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেমে। এরপর ক্রেতার ই-মেইলে পিডিএফ আকারে পৌঁছে যায় ই-টিকিট।
প্রতিষ্ঠানের সার্ভারে সংরক্ষিত থাকে ক্রেতার তথ্য, পিডিএফ ফাইলে সেই তথ্যের লিংক দেওয়া হয় কিউআর অথবা বারকোড আকারে। পিডিএফ ফাইলটি প্রিন্ট করার প্রয়োজন নেই, স্মার্টফোনে সেটি ওপেন করে কিউআর কোড টিকিট চেকারকে দেখালেই হয়। স্ক্যানারের মাধ্যমে কিউআর কোড পরীক্ষা করে টিকিট যাচাই করা সম্ভব।
কাগজের টিকিটের বদলে ই-টিকিট ব্যবহারে যেমন কাগজ ও কালির অপচয় কমানো সম্ভব, তেমনি রোধ করা যায় টিকিট জালিয়াতি। একই কোড একাধিকবার ব্যবহার করা সম্ভব নয়, তাই ই-টিকিট কপি করে একাধিক ব্যক্তি ব্যবহার করতে পারে না।
প্রতিটি ই-টিকিটের মধ্যে ক্রেতার তথ্য থাকায় কালোবাজারি থেকেও রেহাই পাওয়া যায়। একজনের টিকিট অন্য কেউ ব্যবহার করলে তা দ্রুত শনাক্ত করাও সম্ভব। ই-টিকিটের আরেকটি বড় সুবিধা, কেনার জন্য লম্বা লাইনে দাঁড়ানোর প্রয়োজন নেই। ঘরে বসেই ইন্টারনেটে সহজে কেনা যায় টিকিট, ব্যবহার শেষে উচ্ছিষ্ট কাগজও থাকে না।
ই-টিকিট কেনা ও টিকিট যাচাই—দুই ক্ষেত্রেই প্রয়োজন ইন্টারনেট। অনেকের কাছে এটা সমস্যার মনে হতে পারে। যাদের স্মার্টফোন নেই, তাদের ই-টিকিট প্রিন্ট করাতে হয়, তাই কাগজ ও কালির প্রয়োজন রয়েই যাচ্ছে। অনেক সময় সার্ভার অতিরিক্ত চাপ সামলাতে না পেরে সমস্যা তৈরি করে তখন টিকিট যাচাই বিলম্বিত হয়। তবে স্মার্টফোন ব্যবহারকারী, উচ্চক্ষমতার সার্ভার ও নির্ভরযোগ্য ইন্টারনেট সেবার পরিধি প্রতিনিয়ত বাড়ছে, তাই এখন বেশির ভাগ সমস্যাই কাটিয়ে উঠেছে ই-টিকিট।