আজ জুলাই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে জাতিসংঘ টিম আসছে

পররাষ্ট্র সচিব জানিয়েছেন, এটি জাতিসংঘের প্রাথমিক তদন্ত টিম।

আজ জুলাই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে জাতিসংঘ টিম আসছে

প্রথম নিউজ, অনলাইন: ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দমনে শেখ হাসিনা সরকারের নৃশংসতা বিশেষ করে নির্বিচারে গুলি, হত্যা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো তদন্ত করতে জাতিসংঘের টিম ঢাকা আসছে আজ। পররাষ্ট্র সচিব জানিয়েছেন, এটি জাতিসংঘের প্রাথমিক তদন্ত টিম। তারা তথ্যানুসন্ধান করবে। এই টিম ফিরে যাওয়ার পর আরেকটি টিম আসবে। যারা ঘটনাগুলো বিস্তারিত তদন্ত করবে। গতকাল সন্ধ্যায় মানবজমিনের সঙ্গে আলাপে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, বৃহস্পতিবার তথ্য অনুসন্ধান দলটি ঢাকা পৌঁছাবে। ২৮শে আগস্ট পর্যন্ত তারা বাংলাদেশে থাকছেন। প্রাথমিক তদন্ত টিম মূলত, কীভাবে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করবে। জাতিসংঘের দলটি উপদেষ্টাদের সঙ্গেও দেখা করবেন জানিয়ে তিনি বলেন, এ ছাড়া বিভিন্ন সরকারি কর্তৃপক্ষ ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও দেখা করবেন। আর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দলটিকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেয়া হবে। 

প্রথমে জাতিসংঘের কারিগরি নাকি তদন্ত দল আসবে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এ বিষয়টি এখনো জাতিসংঘ থেকে আমাদের জানানো হয়নি। আশা করছি, প্রাথমিক দল হিসেবে সকল সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে দলটি আলোচনা করবে। মূলত বাংলাদেশের কোন কোন ক্ষেত্রে সহযোগিতা লাগবে এবং একই সঙ্গে জাতিসংঘের দলটি বাংলাদেশে আসলে তাদের কী ধরনের সহযোগিতা লাগবে তা নিয়ে আলোচনা হবে।

গণহত্যার শিকার হয়ে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ঢলের আরও একটি বছর পূর্ণ হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে প্রত্যাবাসন শুরু নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এখনো রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি খুবই সংকটপূর্ণ। এখনো আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমার বাহিনীর সংঘাত চলছে। বাংলাদেশের কাছে থাকা সামপ্রতিক তথ্য অনুযায়ী রাখাইন রাজ্যের একটি বড় অংশ এখনো আরাকান আর্মি নিয়ন্ত্রণ করছে, সেখানে মিয়ানমার বাহিনী কিছুটা কোণঠাসা রয়েছে। সংঘাতপূর্ণ এ সময়ে রোহিঙ্গাদের সেখানে ফেরত পাঠানো সম্ভব নয়। তারপরও মিয়ানমারের নতুন রাষ্ট্রদূত যখন সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন, সেখানে নেপিডো’র পক্ষ থেকে তার রাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেছেন।

রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা কমে আসা নিয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, বর্তমানে চাহিদার ৫০-৬০ শতাংশের তহবিল রয়েছে। এভাবেই গত দুই বছর ধরে চলছে। বাংলাদেশ ক্রমাগতভাবে আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে যাচ্ছে, যাতে সহযোগিতা অব্যাহত থাকে।

রোহিঙ্গা তহবিল কমে যাওয়া বাংলাদেশের জন্য এখনো অতটা প্রকট হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, যতদিন এ সংকটের রাজনৈতিক সমাধান বা প্রত্যাবাসন না হচ্ছে ততদিন এটি আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের জন্যও যাতে যৌথ দায়বদ্ধতা থাকে। বাংলাদেশের একার বোঝা নয় এটি। এ নিয়ে যোগাযোগ অব্যাহত রাখছি। প্রধান উপদেষ্টার বিমসটেক সম্মেলনে যোগ দেয়া নিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আসন্ন বিমসটেক সম্মেলনে যাবেন প্রধান উপদেষ্টা। সেখানে সাইড লাইনে কিছু বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা নিয়ে তিনি বলেন, এগুলো নিয়ে এখনো কাজ করছি। আমরা দেখছি যে, কোন কোন দেশের সরকার বা রাষ্ট্র প্রধানরা যাবেন। আগামী দুই/তিন দিনের মধ্যে জানা যাবে কাদের সঙ্গে বৈঠক চূড়ান্ত হয়েছে।

ভারত থেকে পানির ঢল নিয়ে প্রশ্ন করলে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশে প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছে। আমরা তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করছি। প্রয়োজনে কোনো পদক্ষেপের অনুরোধও ভারতের কাছে করা যাবে।