Ad0111

আইডিয়ালের অধ্যক্ষ শাহান আরাকে দুদকে তলব

এক তলবি নোটিশে তাকে আগামী ১৫ নভেম্বর উপস্থিত হতে বলা হয়েছে

আইডিয়ালের অধ্যক্ষ শাহান আরাকে দুদকে তলব
আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগম

প্রথম নিউজ, ঢাকা: ভর্তি বাণিজ্য ও ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগমকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) 

আজ সোমবার (৯ নভেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আতাউর রহমান সরকার স্বাক্ষরিত এক তলবি নোটিশে তাকে আগামী ১৫ নভেম্বর উপস্থিত হতে বলা হয়েছে। 

দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

নোটিশে অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগমের বক্তব্য নেওয়া প্রয়োজন এমন কথা উল্লেখ করে আরো বলা হয়, যদি নির্ধারিত সময়ে হাজির হয়ে বক্তব্য দিতে ব্যর্থ হন তবে অভিযোগে সংক্রান্ত বিষয়ে তার কোনো বক্তব্য নেই মর্মে গণ্য করা হবে।

এর আগে গত ২০ সেপ্টেম্বর অধ্যক্ষ ড. শাহান আরার অভিযোগ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র তলব করা হয়। যার অধিকাংশ নথিপত্র দুদকে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে। 

নথিপত্রের মধ্যে রয়েছে- ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য অনুষ্ঠিত টেস্ট পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের নামের তালিকা, অনুত্তীর্ণদের মধ্যে অধ্যক্ষের বিশেষ বিবেচনায় উত্তীর্ণ দেখিয়ে ফরম পূরণকারী এবং প্রথম ও দ্বিতীয় রি-টেস্ট পরীক্ষার মাধ্যমে উত্তীর্ণ দেখিয়ে ফরম পূরণকারী শিক্ষার্থীদের নাম, অভিভাবকের নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর এবং শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফরমপূরণ বাবদ নেওয়া অর্থসংক্রান্ত নথিপত্র।

টেস্ট পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের প্রথম ও দ্বিতীয়বার রি-টেস্ট পরীক্ষা গ্রহণের সপক্ষে শিক্ষা বোর্ডের নীতিমালা ও অনুমোদনের ফটোকপি।

আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের তিনটি শাখার ২০১৯-২০ ও ২০২০-২১ অর্থবছরের বিভিন্ন খাতের আয়; যেমন- সরকারি অনুদান, ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া ভর্তি, বেতন ও অন্যান্য ফি এবং প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি থেকে আয় ও ব্যয়ের যাবতীয় নথিপত্র।

এর আগে ২৯ আগস্ট দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগমের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া  হয়।

অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগমের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ : বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে অধ্যক্ষ থাকাকালীন ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের যোগসাজশে শিক্ষার্থী ভর্তিতে অনৈতিকভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।

২০১৯ সালে মতিঝিল শাখায় এসএসসি ফরম পূরণে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণেরও অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। টেস্ট পরীক্ষায় যেসব শিক্ষার্থী অনুত্তীর্ণ হন তাদের কাছ থেকে সাবজেক্টপ্রতি ২০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত গ্রহণ করে ফরম পূরণের সুযোগ দেন অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম। পরে ‘বিশেষ বিবেচনায়’ ওই পরীক্ষার্থীদের উত্তীর্ণ করা হয় বলে জানা গেছে।

এছাড়া আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মূল শাখা, বনশ্রী ও মুগদা শাখায় শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে অনৈতিকভাবে টাকা নেওয়ারও অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। জানা যায়, শিক্ষার্থীপ্রতি চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়। প্রাথমিকভাবে স্কুল ফান্ডে ওই টাকা জমা হলেও পরবর্তীতে অধ্যক্ষসহ ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা তা ভাগ করে নেন। এভাবে শাহান আরা বেগম দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।

২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ‘বিশেষ ক্লাসের’ নামে বাধ্যতামূলক অর্থ আদায়ের অভিযোগ পেয়ে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বনশ্রী শাখায় অভিযান চালায় দুদকের একটি দল। প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আতাউর রহমান সরকার ও উপ-সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়ার সমন্বয়ে গঠিত দল অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পায়। ওই সময় অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিক তথ্য-উপাত্ত জব্দ করে দুদক।

২০১৯ সালের মে মাসে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষার উত্তরপত্র ঘষামাজা করে নম্বর দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগমকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বোর্ড।

উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে গণমাধ্যমে শাহান আরা বেগম দাবি করেন, তার কোনো অবৈধ সম্পদ নেই।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

This site uses cookies. By continuing to browse the site you are agreeing to our use of cookies & privacy Policy from www.prothom.news