অশান্তির আগুনে পুড়ছে মণিপুর, নতুন করে ৬ থানায় জারি ‘আফস্পা’

অশান্তির আগুনে পুড়ছে মণিপুর, নতুন করে ৬ থানায় জারি ‘আফস্পা’

প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: কোনওভাবেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না।  প্রায় দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে অশান্তির আগুনে পুড়ছে মণিপুর। জিরিবাম, পশ্চিম ইম্ফল, বিষ্ণুপুর-সহ একাধিক জেলায় সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ বার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে  রাজ্য জুড়ে ছ’টি থানা এলাকায় নতুন করে চালু করা হল ‘সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন’ (‘আর্মড ফোর্সেস স্পেশ্যাল পাওয়ার অ্যাক্ট’ বা আফস্পা)। এই আইনে কোনও এলাকা বা জেলাকে উপদ্রুত হিসেবে ঘোষণা করা হয়। যেখানে এই আইন জারি হয়,সেখানকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব সেনার হাতে বর্তায়। আইনে সেনাকে ব্যাপক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। ভারতের  স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের জারি করা একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পশ্চিম ইম্ফলের সেকমাই ও লামসাং, পূর্ব ইম্ফলের লামলাই, বিষ্ণুপুরের মইরাং, কাংপোকপির লেইমাখং এবং জিরিবাম থানা এলাকায় নতুন করে আফস্পা চালু করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত মাসের শুরুতেই মণিপুরে ছ’মাসের জন্য বর্ধিত হয়েছিল আফস্পা-র মেয়াদ। ইম্ফল, বিষ্ণুপুর, জিরিবাম-সহ ১৯টি থানা এলাকা বাদ দিয়ে গোটা রাজ্যেই এই আইনের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছিল। এ বার আরও ছ’টি থানায় বলবৎ হল সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন। হিংসার সাম্প্রতিক বাড়বাড়ন্তের পরে বিতর্কিত আইনটি আরও ছ’টি থানায় বলবৎ করা হল। সেনাবাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন ‘আফস্পা’ তোলার দাবিতে মণিপুরে ইরম শর্মিলা চানুর অনশনের কথা সবার জানা। কিন্তু সেই আইনের বলেই মণিপুরে শান্তি ফেরাতে মরিয়া কেন্দ্র। সম্প্রতি জিরিবামে এক জনজাতি নারীকে  জীবন্ত পুড়িয়ে মারার ঘটনায় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এসেছে পুলিশের। সেখানে গত ৭ নভেম্বরের ঘটনার ভয়াবহতা ফুটে উঠেছে। রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, পেশায় শিক্ষিকা ওই নারীর শরীরের বেশিরভাগই পুড়ে গিয়েছিল। মৃতদেহে ছিল একধিক  গভীর আঘাত। হাড়গোড়ও ভেঙে গিয়েছিল ।

মাথার খুলি শুধু পোড়াই নয়, টুকরো টুকরো হয়ে যায় । শরীরের বেশ কিছু অংশ মেলেইনি। ওই নারীকে  পুড়িয়ে মারার আগে সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা ধর্ষণ করেছিল বলে দাবি করেছেন তাঁর স্বামী। একইসঙ্গে গ্রামের অন্তত ১৭টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।অভিযোগ, হামলা চালিয়েছিল মেইতেই সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাম্বাই টেঙ্গল এবং ইউএনএলএফের যৌথ দল। সেই ঘটনার পর থেকেই উত্তপ্ত জিরিবাম জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। দোষীদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন গ্রামবাসীরা। ঘটনার প্রতিবাদে সরব হন কুকি, জ়োমি, মার গোষ্ঠীর নেতারা। সূত্র : টাইমস অফ ইন্ডিয়া