অনাস্থা প্রস্তাবে ক্ষমতা হারাবেন ইমরান খান!
ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে পাকিস্তানের পার্লামেন্ট জাতীয় পরিষদে
প্রথম নিউজ, ডেস্ক : পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ক্ষমতার মসনদ হারাচ্ছেন! এ আলোচনা উঠে এসেছে পাকিস্তান মুসলিম লিগ-কিউ (পিএমএলকিউ)-এর নেতা চৌধুরী পারভেজ ইলাহির এক ঘোষণার পর। ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে পাকিস্তানের পার্লামেন্ট জাতীয় পরিষদে। এই প্রস্তাব পাস করার মতো যথেষ্ট সংখ্যক এমপির সমর্থন আছে বলে ঘোষণা দিয়েছেন পারভেজ ইলাহি। তিনি বলেছেন, অনাস্থা প্রস্তাব পাস হতে যে পরিমাণ সদস্যের ভোট প্রয়োজন হবে, তার চেয়ে অনেক বেশি এমপির সমর্থন আছে তাদের। তিনি বলেছেন, বিপুল পরিমাণ বিস্ময় জমা আছে তাদের ভাণ্ডারে। এখানে উল্লেখ্য, পাঞ্জাব প্রদেশে ক্ষমতাসীন পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ (পিটিআই) সরকারের একটি মিত্র পিএমএলকিউ। অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে সরকারের থেকে দূরে সরে যাওয়া বিরোধী দলের মধ্যে অন্যতম তারা। ফলে তাদেরকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
যদি অনাস্থা প্রস্তাব পাস হতে হয়, তাহলে জাতীয় পরিষদে পিএমএলকিউয়ের ভোট প্রয়োজন হবে বিরোধীদের। জাতীয় পরিষদে এ দলটির আছে ৫টি আসন।
এমন অবস্থায় হাম নিউজের উপস্থাপক মেহের বোখারি বুধবার পারভেজ ইলাহির কাছে পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির দাবি সম্পর্কে মন্তব্য করতে বলেন। আসিফ আলি জারদারি বলেছেন অনাস্থা প্রস্তাবকে সমর্থন করতে জাতীয় পরিষদে কমপক্ষে ১৭২ জন আইনপ্রণেতা বা এমপির সমর্থন আছে। এর জবাবে পারভেজ ইলাহি বলেন, তিনি (জারদারি) যথার্থই বলেছেন। বিরোধীদের কাছে প্রয়োজনীয় সংখ্যক (সমর্থক) আছে। এমনকি কেউ কল্পনা করতে পারে, তার চেয়েও বেশি আছে। আমরা এমনটাই পরিমাপ করেছি এবং দেখছি।
পিএমএলকিউয়ের এই নেতা আরও বলেছেন, নিজের অবস্থানের জন্য নিজেকেই দায়ী করতে হবে সরকারকে। তারা প্রত্যেকের সঙ্গে এমনকি নিজস্ব লোকদের সঙ্গে সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করার পরিবর্তে কিভাবে সম্পর্ক গড়া যায়, সে সম্পর্কে কিছুই শেখেনি। পারভেজ ইলাহি বলেছেন, এরই মধ্যে বিরোধীদের তরফ থেকে তাকে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রিত্ব প্রস্তাব করা হয়েছে। নির্বাচনী জোট বাঁধার জন্য এমন প্রস্তাব দেয়া হলেও সরকার এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। তাহলে তিনি কেন এই প্রস্তাব এখনও গ্রহণ করেননি? এ প্রশ্নের জবাবে পারভেজ ইলাহি বলেছেন, আমরা অপেক্ষা করছি যে, সরকার এমন প্রস্তাব দেবে। হয়তো সরকারও একই প্রস্তাব দেবে।
পারভেজ ইলাহি আরও বলেন, আসন ভাগাভাগি নিয়ে অতীতে পিটিআইয়ের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তাদের কথা রাখা উচিত। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, সরকার তাদেরকে যে প্রতিশ্রæতি দিয়েছিল, তার প্রতি সম্মান দেখানো উচিত। সরকারের বয়স হয়েছে। তারা এখন আর শিশুসরকার নয়। তাদেরকে কথা রাখতে হবে। তা নাহলে জনগণ তাদের ওপর আস্থা রাখবে না। সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের পাকিস্তান মুসলিম লিগ- নওয়াজের (পিএমএলএন) আস্থায় ঘাটতি আছে বলে তিনি স্বীকার করেন। বলেন, পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ করেছেন জারদারি এবং পিএমএলকিউকে তার নিশ্চয়তা দিয়েছেন।
জাতীয় জবাবদিহিতা বিষয়ক ব্যুরোকে (এনএবি) ব্যবহার করে সরকার পিএমএলকিউকে টার্গেট করছে বলে সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তিনি। এ অবস্থায় সামনেই অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোট হবে পার্লামেন্টে। তবে কবে, সেই দিনক্ষণ এখনও ঘোষণা করা হয়নি। এর আগে পিটিআইয়ের একজন নেতা বলেছেন, ২৭ শে মার্চের পরে হতে পারে ওই ভোট। এমন পরিস্থিতিতে বিরোধী দলগুলোকে বাগে আনতে যারপরনাই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পিটিআই। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান, তার মন্ত্রীসভা দফায় দফায় মিটিং করছেন। তা দেখে মনে হচ্ছে সামনে আসলেই বিপদ ঘটতে পারে সরকারের। হয়তো ক্ষমতার মসনদ কেঁপে উঠতে পারে ইমরান খানের।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews