Ad0111

২০ বছর পর যশোরের রাস্তায় মাকে খুঁজছেন মুস্তাকিন

শোর শহরের মুজিব সড়কে মুস্তাকিনকে দেখা যায় বিভিন্ন দেয়াল ও বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ‘মাকে খুঁজছি’ শিরোনামে পোস্টার লাগাতে।

২০ বছর পর যশোরের রাস্তায় মাকে খুঁজছেন মুস্তাকিন

প্রথম নিউজ, যশোর: ২০ বছর পর মায়ের খোঁজে যশোরের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন মুন্সিগঞ্জের তরুণ মুস্তাকিন আহমেদ (২৫)। স্মৃতি হিসেবে সঙ্গে এনেছেন মায়ের সঙ্গে তার শিশু বয়সের কয়েকটি ছবি।

শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে যশোর শহরের মুজিব সড়কে মুস্তাকিনকে দেখা যায় বিভিন্ন দেয়াল ও বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ‘মাকে খুঁজছি’ শিরোনামে পোস্টার লাগাতে। সেই পোস্টারে তিনি লিখেছেন- এই মহিলা আমার মা, আমার মা আজ ২০ বছর আগে হারিয়ে গেছে। আমার মায়ের বাড়ি যশোর জেলায়। আমার মাকে যদি কোনো হৃদয়বান ব্যক্তি চিনে থাকেন, তাহলে আমাকে ফোন দিয়ে আমার মাকে খুঁজে পেতে সাহায্য করুন। পোস্টারে দুটি মোবাইল নম্বরও দেওয়া হয়েছে।  

এ সময় কথা হয় তার সঙ্গে। জানা গেল তার অতীত ইতিহাস। যশোর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে তিনি বলেন, প্রায় ২৫ বছর আগে আমার বাবা আবদুল খালেক তার প্রথম স্ত্রীকে রেখে ভারতে চলে যান। ভারতের গুজরাটে অবস্থানকালে আমার মায়ের (যশোরের মেয়ে) সঙ্গে পরিচয় হয়। সেখানে বাবা-মা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। সেখানেই আমার জন্ম হয়। আমার বয়স যখন পাঁচ বছর তখন বাবা আমাদের নিয়ে দেশে ফিরে আসেন। সংসারে প্রথম স্ত্রী থাকায় পরিবারের লোকজন মেনে নিতে পারেননি।

এক পর্যায়ে প্রায় ২০ বছর আগে আমাকে রেখে মাকে তাড়িয়ে দেয়। আমি শুধু জানি আমার নানা বাড়ি যশোরে। তবে সঠিক ঠিকানা জানি না। ছোটবেলায় এতিম শিশু হিসেবে মাদরাসায় লেখাপড়া করেছি। বাবাও কখনো সঠিক ঠিকানা বলেননি। কয়েক বছর আগে বাবাও মারা গেছেন। এখন ডাব বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করি।

মোস্তাকিনের দাবি, তার নানা বাড়ি যশোরে। এক সপ্তাহ আগে বাড়ির পুরাতন বাক্সে অনেকগুলো ছবি পান। তার মধ্যে দুটি ছবিতে দেখতে পান এক নারীর কোলে একটি শিশু। আর সেই ছবিটি ভারতের কোনো এক জায়গার। মোস্তাকিনের এক চাচা তাকে নিশ্চিত করেছেন ছবি দুটি তার মায়ের। এরপর মোস্তাকিন মায়ের সন্ধানে নেমে পড়েছেন রাস্তায়। 

শুক্রবার থেকে তিনি যশোরের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন। মোস্তাকিন বলেন, বাবা, সৎ মায়ের সঙ্গে ২০ বছর আগে যশোরে এসেছিলেন। শহরের একটি সিনেমা হল সংলগ্ন কবরস্থানের পাশের একটি বাড়িতে তাকে রেখে তার মাকে ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছিল (বিচ্ছেদ বাবদ)। তখনও তার মায়ের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। এতটুকুই স্মৃতি মনে আছে তার।

এ বিষয়ে ফোনে কথা বলেন মোস্তাকিনের সৎমা রেশমা খাতুন। তিনি বলেন, মোস্তাকিনের বাবা-মায়ের বিয়ে হয় ভারতে। পরে তারা দেশে আসে। মোস্তাকিনের বয়স যখন ৪-৫ বছর তখন বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। আমার দেবররা ২০ হাজার টাকা দেয় মোস্তাকিনের মাকে। সে মোস্তাকিনকে আমার কাছে রেখে চলে যায়। ওর বাবা মারা গেছে কয়েক বছর আগে। তিনি মোস্তাকিনের নানা বাড়ির পরিচয় বলে যাননি। শুধু এইটুকু জানি তার বাড়ি যশোরে ছিল। 

তিনি আরও বলেন, মোস্তাকিনের মা আবারও ভারতে চলে গেছে হয়ত। ওকে বলেছি তোর মা বেঁচে থাকলে ফিরে আসবে। যদি ফিরে আসে, তার থাকার জায়গা করে দেব। ও আমাদের কথা শোনেনি। মোস্তাকিনের চাচা অ্যাডভোকেট মেহেদী হাসান বলেন, মোস্তাকিন তার মায়ের সন্ধান করছে। ওই ছবি দুটো তার মায়ের। তার বাবার সঙ্গে মায়ের বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। আর মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

This site uses cookies. By continuing to browse the site you are agreeing to our use of cookies & privacy Policy from www.prothom.news