সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে তিতাসের বকেয়া ৬ হাজার ৭০১ কোটি

আজ সোমবার (১০ জুলাই) তিতাসের প্রধান কার্যালয়ে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন এবং রাজস্ব আদায় সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হারুনুর রশীদ মোল্লাহ এসব তথ্য জানান।

সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে তিতাসের বকেয়া ৬ হাজার ৭০১ কোটি

প্রথম নিউজ, ঢাকা: সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে গ্যাস বিক্রয় বাবদ তিতাসের বকেয়া ৬ হাজার ৭০১ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে বকেয়া রয়েছে ১ হাজার ৬৫৭ টাকা টাকা এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে বকেয়া রয়েছে ৫ হাজার ৪৪ কোটি টাকা।

আজ সোমবার (১০ জুলাই) তিতাসের প্রধান কার্যালয়ে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন এবং রাজস্ব আদায় সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হারুনুর রশীদ মোল্লাহ এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, অবৈধ সংযোগের বিষয়ে আমরা অনেক অভিযান পরিচালনা করেছি। অভিযান অব্যাহত থাকবে। আমরা জনসংযোগ করেছি, বলেছি চুরি ঠেকাতে আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। তাদের বলেছি, লাইন কেটে দেওয়ার পর আবার লাইন বসলে সেই অঞ্চলের লাইন বন্ধ করে দেওয়া হবে। এতে আমরা অনেক ভালো ফল পেয়েছি।

হারুনুর রশীদ মোল্লাহ বলেন, ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে গত জুন পর্যন্ত ৩৩০টি মোবাইল কোর্টসহ ২৮ হাজার ৩৯৮টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এসব অভিযানে ৬৬৮ দশমিক ৫০ কিলোমিটার অবৈধ লাইন, অবৈধ সংযোগ ও বকেয়ার কারণে ৬ লাখ ২ হাজার ৮৮৪টি চুলার সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ মোট ৬ লাখ ৩ হাজার ৯৭৫টি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। অবৈধ ব্যবহারের কারণে ২৫০টি শিল্প, ৩২৯টি বাণিজ্যিক, ৫৫ ক্যাপটিভ, ১০টি সিএনজি ফিলিং স্টেশনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এসব অভিযানের মাধ্যমে ৩২১ কোটি ৮১ লাখ টাকা অতিরিক্ত বিল ও ৯১ কোটি ২৫ লাখ টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়েছে। এর মধ্যে অতিরিক্ত বিল বাবদ ১৪৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা ও ৩৭ কোটি ৪১ লাখ টাকা জরিমানা আদায় হয়েছে।

তিনি বলেন, সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে ২৩৮৬ কোটি ১৩ লাখ টাকা বকেয়া ছিল, ১৫২৫ কোটি ৯২ লাখ টাকা আদায় করা হয়েছে। এখন বকেয়ার পরিমাণ কমে ১৬৫৭ কোটি ৪৪ লাখ টাকায় নেমে এসেছে। বেসরকারি খাতে ৩১ হাজার ১৫৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকা বকেয়া ছিল, এখন ৫ হাজার ৪৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকা রয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, অভিযানে বাধা দেয় জনগণ, কোনো এমপি-মন্ত্রী আমাদের অসহযোগিতা করেননি। জনগণ প্রথমবার বিরোধিতা করে, দ্বিতীয়বার যখন গিয়েছি আর সমস্যা হয়নি।

জনশ্রুতি রয়েছে তিতাসের লোকজন এসব অবৈধ সংযোগ বাণিজ্যে জড়িত– এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এমন রেকর্ড নেই, সব কাজ করে ঠিকাদার। কিছু অভিযোগ সত্য, তবে বাইরের লোকজন বেশি অপকর্ম করছে। অভিযোগের কারণে তিতাসের লোকজনের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আমার সময়ে আট জনকে বরখাস্ত করেছি, ১৬ জনকে সাময়িক বরখাস্তসহ ২২৮ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ৯১ জনকে শাস্তিমূলক বদলি করেছি। ৩ হাজারের বেশি স্টাফের মধ্যে হয়ত নগণ্য পরিমাণে জড়িত থাকতে পারে। ৫০ থেকে ৬০ জন ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

বিচ্ছিন্নের পর পুনরায় সংযোগ প্রসঙ্গে হারুনুর রশীদ মোল্লাহ বলেন, কিছু সংযোগ হয়ত লাগতে পারে। তবে নিবিড়ভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে। প্রিপেইড মিটার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মিটার নিলে আমাদের লাভ, বকেয়া থাকে না, অগ্রিম বিল পাচ্ছি। তিতাস গ্যাসের সিস্টেম লস নিয়ে জানতে চাইলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, আমরা জোনগুলোতে মিটার বসিয়েছি, এখনো আলাদা করতে পারিনি, পরবর্তীতে আরেকটি সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে অবগত করা হবে।