সরকার দেশে বিদেশে সমর্থন হারিয়েছে: ফখরুল
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর বাড্ডায় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে পদযাত্রায় অংশ নিয়ে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
প্রথম নিউজ, অনলাইন: সরকার নির্বাচনী খেলায় মেতে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, সরকার একের পর এক খেলায় মেতে উঠেছে। আগামী নির্বাচন নিয়েও তারা খেলতে চাচ্ছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দেশে ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জনসমর্থন হারিয়েছে। দেশ এবং বিদেশের মানুষও নিশ্চিত যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন সম্ভব না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া দেশে নির্বাচন হবে না। শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর বাড্ডায় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে পদযাত্রায় অংশ নিয়ে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, সীমাহীন দুর্নীতি, শ্রমিক নির্যাতন বন্ধ, অবৈধ সরকারের পদত্যাগ ও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে পদযাত্রার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল। মিছিলটি বাড্ডা থেকে শুরু হয়ে রামপুরা গিয়ে শেষ হয়।
পদযাত্রায় অংশ নিয়ে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী এমন কথা বলছেন, যা দেশকে বিপদে ফেলছে। তিনি বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র তাকে সরাতে চায়। কিন্তু এ ধরনের কথা একজন প্রধানমন্ত্রীর কাছে কেউ আশা করেনি। বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশের টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করেছে সরকার। তারা ব্যাংক লুট করে নিয়েছে, অর্থনীতি ধ্বংস করে দিয়েছে। বর্তমান সরকার জোর করে ক্ষমতায় টিকে আছে। আবার তারা নির্বাচনের কথা বলছে। নির্বাচন এখন সরকারের খেলায় পরিণত হয়েছে।
আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো কালেই নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি, আগামীতেও হবে না মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বর্তমান সরকারকে সরাতে হবে। বিএনপির আন্দোলনকে সরকার ভয় পায় বলেই আমাদের নেতাকর্মীদের আটকে রাখা হচ্ছে, নির্যাতন করা হচ্ছে। এ সরকার নির্বাচিত সরকার নয়। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। ২০১৪ সালে তারা একতরফা নির্বাচন করেছে। ১৫১ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত করে সরকার গঠন করেছে। ২০১৮ সালের দিনের ভোট রাতে করে তারা জোর করে ক্ষমতা দখল করেছে।
ক্ষমতাসীনদের দখলদার সরকার উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, তারা জোর করে ক্ষমতায় বসে দেশের মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। শ্রমিকেরা ন্যায্য মজুরি পাচ্ছেন না। চাল, ডাল, তেল, লবণ, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সাধারণ কর্মজীবী মানুষের জন্য কিছুতেই কেনা সম্ভব হচ্ছে না।
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের মানুষ একটাই কথা বলছে, আপনি এই মুহূর্তে চলে যান। পরিষ্কার কথা, পদত্যাগ করুন। পদত্যাগ করে একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে, নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দিন। কারণ, এ দেশে হাসিনা সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। এ ব্যাপারে এ দেশের মানুষ নিশ্চিত।
শ্রমিক দল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্যসচিব বদরুল আলম ও সংগঠনটির ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্যসচিব কামরুল জামানের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান ও সদস্যসচিব আমিনুল হক, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, প্রচার সম্পাদক মনজুরুল ইসলাম মঞ্জু, শ্রমিক দল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক সুমন ভূঁইয়া, শ্রমিক দল ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক কাজী শাহ আলম রাজা প্রমূখ।