স্বৈরশাসকদের ধামাধারীদের পথে পথে প্রতিরোধ করতে হবে: রিজভী

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বৈরশাসকদের ধামাধারীদের পথে পথে প্রতিরোধ করতে হবে: রিজভী

প্রথম নিউজ, ঢাকা: স্বৈরশাসকদের ধামাধারীদের পথে পথে প্রতিরোধ করতে হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, গতকাল মুন্সিগঞ্জ সদর থানার মুক্তারপুরে বিএনপি’র শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পরিকল্পিত গুলিবর্ষণ ও গুরুতর আহত করাসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে রক্তাক্ত জখম করার ঘটনার পর পুলিশ এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীরা যৌথভাবে গতরাত থেকেই বিএনপি’র নেতাকর্মীদের বাসা ও তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তান্ডবলীলা চালাচ্ছে।
আওয়ামী সশস্ত্র ক্যাডার মোঃ মাসুদ, মুসা ও তোফাজ্জল নেতত্বে ১৫/২০ জন এর সাথে তিনজন পুলিশ সদস্যসহ একটি দল গতরাতে মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপি’র আহবায়ক আঃ হাই সাহেবের ভাগিনা মোঃ নিজাম উদ্দিন এর শিল্প প্রতিষ্ঠান ও তার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এতে তার সুতার ফাক্টরিটি সম্পূর্ণ ভস্মিভূত হয়, এই ঘটনায় আনুমানিক ২ থেকে ২.২৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়। এ সময় সন্ত্রাসী কায়দায় এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি করে, যাতে কেউ আগুন নেভাতে না আসে। অন্যদিকে গত রাতভর আওয়ামী লীগের লোকজন আঃ হাই সাহেবের পঞ্চসার ইউনিয়নের বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের বাড়িতে বাড়িতে আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন ও হুমকি প্রদান করে এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। অধিকাংশ নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এখন বাড়ি ছাড়া। ইতোমধ্যে নিজেদের অপকর্ম আড়াল করার জন্য উল্টো হামলার শিকার বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় আসামী করা হয়েছে-মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব ও কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, সদর উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ, শহর বিএনপি’র আহবায়ক এরাদত হোসেন মানু, সদর থানা বিএনপি’র সদস্য সচিব মুনির হোসেন ও জেলা বিএনপি’র আহবায়ক কমিটির সদস্য আতাউর হোসেন বাবুলসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে। আমি বিএনপি’র পক্ষ থেকে এই মিথ্যা মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের আহবান জানাচ্ছি। এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত যুবদল নেতা মোঃ শাওন, মোঃ জাহাঙ্গীর ও ছাত্রদল নেতা তারেকের অবস্থা আশংকাজনক। তারা জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। আমি দলের পক্ষ থেকে তাদের আশু সুস্থতা কামনা করছি।
তিনি বলেন,  আজকে আমরা শুনতে পাচ্ছি আওয়ামী লীগ ও তার  অংগ-সংগঠন এর নেতাকর্মীরা মুন্সীগঞ্জ সদর ও শহরে মিছিল বের করবে এবং লোক মূখে শোনা যাচ্ছে সেই মিছিল থেকে জেলা ও সদর বিএনপির কার্যালয়সহ বিএনপির নেতা কর্মী-সমর্থকদের শিল্প প্রতিষ্ঠান সহ বাড়িতে বাড়িতে হামলার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ব্যক্তিকেন্দ্রীক একনায়কতান্ত্রিক শাসনের দুঃসহ পরিণতি এখন গ্রাম থেকে শহরে সর্বত্রই দৃশ্যমান। রক্তপাত ছাড়া শেখ হাসিনার আর কোন অবলম্বন নেই। শেখ হাসিনার শাসনে গণতন্ত্রের অধঃপতন, ব্যক্তি স্বাধীনতা হরণ, নির্ভয়ে বসবাসের সুযোগ হরণ নিশ্চিত হয়েছে। এখন নাৎসীবাদের জয়জয়কার বাংলাদেশে।    
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতাসীন হয়ে আওয়ামী সরকার গণতন্ত্রের ভিত্তির ওপর ক্রমাগত আক্রমণ চালিয়ে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছে। বাংলাদেশ এখন দুঃসময় পার করছে। এরা রাষ্ট্রশক্তিকে কাজে লাগিয়ে রাষ্ট্রসমাজে বিভেদ-বিভাজনের মাধ্যমে চরম মেরুকরণ করেছে। একনায়কতন্ত্রের পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্যই রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো মুখ থুবড়ে পড়েছে। বাকশালী ইতিহাসের পূণর্লিখনে নতুন অধ্যায় যুক্ত হচ্ছে। বিচার, প্রশাসন, জাতীয় সংসদ, নির্বাচন কমিশন সবাই মুখোশের আড়ালে বাকশালী চেতনা ধারণ করে আওয়ামী সরকারের পক্ষে নিরন্তর কাজ করে চলছে। তারা গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে সহনশীলতা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে অচেনা করে তুলছে। মত প্রকাশের স্বাধীনতা এখন আতঙ্কের মধ্যে নিমজ্জিত। বিরোধী রাজনীতির কর্মসূচিতে সহিংস আক্রমণ কোন গণতান্ত্রিক রীতির আওতায় পড়ে ? যদিও গণতন্ত্রের কথা প্রায়শ:ই ক্ষমতাসীনদের মুখে খৈ ফোটে। আমরা আওয়ামী গণতন্ত্রের আরেকটি নমূণা দেখলাম-গতকাল মুন্সিগঞ্জে পুলিশের সহিংস তান্ডবে। পুলিশ এবং পুলিশের ভেতর থেকে খালি গায়ে ‘জয়বাংলা’ শ্লোগান দিয়ে বৃষ্টির মতো গুলি করছিল বিএনপি’র সমাবেশে, তারা কারা ?
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের সংকটের উৎপত্তিস্থল আওয়ামী লীগের শাসনকাল। মিথ্যা অপপ্রচার, লুটপাট, বিরোধী দলের নেতাদের নামে কুৎসা রটনা, বারবার প্রতিশ্রুতির বরখেলাপ, একতরফা নির্বাচন, বিরোধী কন্ঠস্বরকে নিষ্ঠুরভাবে দমন, গুমের অভিনব কর্মসূচি বাস্তবায়ন, বিচারবহির্ভূত হত্যার মতো দস্যুবৃত্তি, লক্ষ লক্ষ বিরোধী নেতাকর্মীদের নামে বানোয়াট মামলা ইত্যাদি আওয়ামী লীগের প্রকৃত উন্নয়নের নমূণা। বিএনপিসহ বিরোধী দলকে চাপের মুখে ফেলতে সরকারের প্রকাশ্য ও গোপন অমানবিক কৌশলের বিরুদ্ধে সকলকে রুখে দাঁড়াতে হবে। স্বৈরশাসকদের ধামাধারীদের পথে পথে প্রতিরোধ করতে হবে। গড়ে তুলতে হবে জনগণের এক প্রবল ¯্রােত। সেই ¯্রােতে ভাসিয়ে দিতে হবে এই অবৈধ সরকারকে। 

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom