সরকার প্রতিহিংসায় খালেদা জিয়াকে বিদেশে যেতে দিচ্ছেনা: মির্জা ফখরুল
একটি দুর্বার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই ফ্যাসিস্ট, ভয়াবহ ও দানবীয় আওয়ামী লীগ সরকারকে পরাজিত করতে করা হবে।

প্রথম নিউজ, ঢাকা: রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা নিতে বিদেশে যেতে দেয়া হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশে এমন্তব্য করেন তিনি। 'বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসা নিশ্চিতকরণের দাবিতে' এ পেশাজীবী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
আজকের এই আন্দোলন শুধু বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই আন্দোলন হচ্ছে, সমগ্র দেশ ও জাতির মুক্তির আন্দোলন। আমাদের গণতন্ত্র ধ্বংস হয়ে গেছে। আমাদের সমস্ত অর্জনগুলোকে ধ্বংস করা হয়েছে। সেই কারণে আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যের মধ্যে দিয়ে এবং সমস্ত গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্যের মধ্যে দিয়ে একটা দুর্বার গণআন্দোলন গড়ি তুলি। সেই আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে এই ফ্যাসিস্ট, ভয়াবহ দানবীয় আওয়ামী লীগ সরকারকে পরাজিত করতে পারবো এবং তাদেরকে বাধ্য করবো বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, তাঁর চিকিৎসা এবং গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে।
প্রায় এক মাসের ওপরে বিএনপি আন্দোলন করছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি রাজপথে অনশন, সমাবেশ, বিভিন্ন বিভাগে সমাবেশ করেছে এবং পুলিশের নির্যাতনের মধ্যেও বিএনপির নেতারা সমস্ত জায়গায় আন্দোলন শুরু করেছেন। আর শওকত মাহমুদ সাহেব যে কথা বলেছেন, 'পেশাজীবীরা পরিবর্তন আনতে পারে।' সত্যি পারে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে দেশে পরিবর্তনের জন্য পেশাজীবীরা সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আসুন, আর বিলম্ব নয়। জনগণ বেরিয়ে আসছে। আমরা বিশ্বাস করি, জনগণ আরো বেশি বেশি আসবে। পেশাজীবী ভাইয়েরাও আরো শক্তির সঙ্গে বেশি করে এগিয়ে আসবেন। তখন নি:সন্দেহে আমরা সেই আন্দোলন শুরু করতে পারবো। যে আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে এই সরকারকে আমরা বাধ্য করতে পারবো, বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে।
শর্ত সাপেক্ষে বেগম খালেদা জিয়াকে বাড়িতে থেকে চিকিৎসা করতে বলা হয়েছে- আদেশের এই কথা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এটা সম্পূর্ণভাবে একটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। বেগম খালেদা জিয়াকে তাদের যে ভয়, তিনি যদি সুস্থ হয়ে বের হয়ে আসেন তাহলে তাদের তকতে তাও ভেঙে খানখান হয়ে যাবে। সেই কারণে তারা তাকে বাইরে চিকিৎসার জন্য দেন না।
বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ জানিয়ে তিনি বলেন, এতো অসুস্থ যে এখন ডাক্তারা নিজেরাই বলছেন, বেগম খালেদা জিয়া জীবন-মরণের সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। সমস্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তারা বলেছেন, এখন যে চিকিৎসা করলে আল্লাহ তাআলা আবার তাকে ফিরিয়ে দিতে পারেন- সেই চিকিৎসা এদেশে নেই, তাকে বিদেশে পাঠানো দরকার। কিন্তু এই সরকার তাকে বাইরে যেতে দিতে চায় না।
মির্জা ফখরুল বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে আজকে সম্পূর্ণ বেআইনীভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে তাকে আটক করে রাখা হয়েছে। এই আটক করে রাখাটা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটা সামগ্রিক চক্রান্তের একটা বহি:প্রকাশ। ১/১১ তে যে চক্রান্ত শুরু হয়েছিল, বাংলাদেশকে বিরাজনীতিকরণ করা হবে, পুরোপুরি রাজনীতিকে দূরে সরিয়ে দেয়া হবে- খালেদা জিয়াকে সেই পরিকল্পনা নিয়ে তারা (সরকার) এগিয়ে চলছে।
তিনি বলেন, সেই কারণে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সব রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য তৈরি করে একটি দুর্বার আন্দোলন গড়তে হবে। যার মধ্য দিয়ে এই ফ্যাসিস্ট, ভয়াবহ ও দানবীয় আওয়ামী লীগ সরকারকে পরাজিত করতে করা হবে।
আয়োজক সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শওকত মাহমুদের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের বিএফইউজে সভাপতি এম আবদুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাংবাদিক নেতা জাহাঙ্গীর আলম প্রধান প্রমুখ ।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: