স্ত্রী-সন্তানের সামনে আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার ঢুলঢুলি পাড়া এলাকার শ্বশুরবাড়িতে দুরুলের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।

স্ত্রী-সন্তানের সামনে আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

প্রথম নিউজ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে দুরুল হোদা (৪০) নামে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে বাড়িতে ঢুকে স্ত্রী-সন্তানদের সামনে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার ঢুলঢুলি পাড়া এলাকার শ্বশুরবাড়িতে দুরুলের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। নিহত দুরুল হোদা উপজেলার নয়ালাভাঙ্গা ইউনিয়নের মিরাটুলী বাবুপুর গ্রামের চান মণ্ডলের ছেলে ও ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য।

দুরুল হোদার শ্বশুর আনারুল ইসলাম বলেন, রোববার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার মিরাটুলী বাবুপুর গ্রামের বাবু ঝাপড়ার নেতৃত্বে ১০ টি মোটরসাইকেলে প্রায় ২০ জন ও পাঁয়ে হেঁটে বাড়ির পেছন দিয়ে আরও ১০ জনের একটি দল অস্ত্র হাতে আমার বাড়ি ঘিরে ফেলে। এ সময় আমাকেও গাছের ডাল দিয়ে পেটাতে থাকে এবং পাশের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেই। এরপর আমার বাড়ির পেছনের দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে লুটপাট করে এবং আমার মেয়ে-ছোট ছোট বাচ্চাদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। তারা বাড়িতে দুরুল কে না পেয়ে ভাই মনিরুলের বাড়ির দরজা ভেঙে তার বাড়িতে প্রবেশ করে। প্রায় ৪০ মিনিট ধরে তাণ্ডব চালায় সন্ত্রাসীরা। তারা এতটাই বেপারোয়া ছিল-তাদের দেখে কেউ বাঁচাতে এগিয়ে আসতে সাহস পাইনি। 

প্রত্যক্ষদর্শী নিহত দুরুল হোদার চাচিশাশুড়ি তাজকেরা বেগম বলেন, সন্ত্রাসীদের হাতে অস্ত্র দেখে ভয়ে আমরা বাড়ির সবগুলো দরজা বন্ধ করে দেই। এরপর তারা দরজা ভেঙে বাড়িতে ঢুকে এলোপাতাড়িভাবে আসবাবপত্র ও দরজা ভাঙতে থাকে। এ সময় দুরুলকে বাঁচাতে একটি ঘরে রেখে বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে রাখি। 

সে ঘরে ঢুকে খাটের নিচ থেকে দুরুলকে টেনে কোপাতে থাকে সন্ত্রাসীরা। এ সময় সন্ত্রাসীরা বলে ‘তোকে মেরে ফেলবো, নেতার নির্দেশ আছে। আমাদের কিছুই হবে না।’ পরে বাড়ির পেছনে নিয়ে চাইনিজ কুড়াল, হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে ফেলে রেখে চলে যায় তারা।

নিহত দুরুল হোদার ছেলে শিশু ইমরান আলী ও মেয়ে দিসা মনি বলে, আমার আব্বু, আম্মুসহ আমরা তিন ভাইবোন নানার বাড়িতেই ছিলাম। সন্ত্রাসীদের দেখে আব্বু ছাদ দিয়ে পাশেই নানার বাড়িতে চলে যায়। তারা এসে আমাদের সবাইকে মেরে ফেলবে বলে গালাগালি করতে থাকে। এরমধ্যে বাবু ঝাপড়া, খাইরুল, রনি, জুয়েল, লাদেম, মড়ল, টনি, সাইদুর, মমিন, জালাল, অলি, কামাল, সোহেল, শাহিন, কেতাবুল, সাত্তার, সুমন, বরজাহান ও ইমনকে তারা চিনতে পেরেছেন। 

নিহত দুরুল হোদার স্ত্রী তোহমিনা বেগম বলেন, একটি হত্যা মামলার আসামি ছিলেন আমার স্বামী। কয়েকদিন আগে জামিনে ছাড়া পেয়ে সন্ত্রাসীদের ভয়ে নিজ বাড়ি বাবুপুরে যেতে পারিনি আমরা। বাধ্য হয়ে আশ্রয় নিয়েছি বাবার বাড়িতে। তারপরেও খুন হতে হলো আমার স্বামীকে। তিনি এমন হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেন।

শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চৌধুরী জোবায়ের আহমেদ বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।  হত্যাকারীদের ধরতে অভিযান চলছে।