শাশুড়ি হত্যা মামলায় প্রেমিকসহ গৃহবধূর যাবজ্জীবন

শাশুড়ি হত্যা মামলায় প্রেমিকসহ গৃহবধূর যাবজ্জীবন

প্রথম নিউজ, লক্ষ্মীপুর : লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে শাশুড়ি রাহেমা বেগমকে (৬৫) বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনায় পরকিয়া প্রেমিক জসিম উদ্দিনসহ গৃহবধূ তাহমিনা আক্তারকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। সোমবার (১৯ জুন) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।

লক্ষ্মীপুর জজ আদালতে সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, হত্যা মামলায় গৃহবধূ তাহমিনা জামিনে গিয়ে পলাতক রয়েছেন। রায়ের সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। অপর দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি তাহমিনার পরকিয়া প্রেমিক জসিম আদালতে রায়ের সময় উপস্থিত ছিলেন।হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত তাহমিনা রামগঞ্জ উপজেলার সাউদেরখিল গ্রামের মফিজুল ইসলামের মেয়ে ও একই উপজেলার রাঘবপুর গ্রামের কবির হোসেনের স্ত্রী। এ মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত জসিম রাঘবপুর গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।

আদালত ও এজাহার সূত্রে জানা যায়, তাহমিনা ও তার চাচাতো ভাসুর জসিমের সঙ্গে পরকিয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২১ সালের ২১ এপ্রিল রাতে তাহমিনা ও জসিম শারিরীক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। ঘটনাটি তাহমিনার শাশুড়ি রাহেমা দেখে ফেলেন। এতে জসিম তাকে ধাক্কা দিয়ে খাটের ওপর ফেলে দেয়। একপর্যায়ে তিনি চিৎকার করতে গেলে জসিম তাকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে ধরে হত্যা করেন। এসময় তাহমিনা তার শাশুড়ির দু'পা চেপে ধরে রাখে। জসিম ঘর থেকে বের হয়ে যায়। পরে আশপাশের লোকজন ঘটনাটি টের পেয়ে ঘরের সামনে এসে দরজা ভেতর থেকে বন্ধ দেখতে পায়। স্থানীয় ইউপি সদস্যের সহযোগিতায় পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। 

পরদিন রাহেমার স্বামী আবু তাহের বাদী হয়ে রামগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে হত্যা মামলায় তাহমিনাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। ঘটনার ৬ দিন পর ২৭ এপ্রিল হত্যাকারী জসিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ আদালতে তোলে। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এই রায় দিয়েছেন।