শক্তিকে আরো দ্বিগুন শক্তিতে পরিণত করে সবাই বৃহত্তর আন্দোলনের প্রস্তুতি নিন: ড. মোশাররফ

তিনি বলেন, আমি বলতে চাই, এই প্রশাসনকে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরকে আপনারা এই পর্যন্ত যা করেছেন জনগনের বিপক্ষে কাজ করেছেন।

শক্তিকে আরো দ্বিগুন শক্তিতে পরিণত করে সবাই বৃহত্তর আন্দোলনের প্রস্তুতি নিন: ড. মোশাররফ

প্রথম নিউজ, ঢাকা: সরকার হটানোর আন্দেোলনে ‘সামনে কঠিন কর্মসূচির’ ইঙ্গিত দিয়ে নেতা-কর্মীদের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিতে বললেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। আজ শনিবার বিকালে রাজধানীর কমলাপুরে পীরজঙ্গি মাজার সড়কে এক সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘‘ সামনে বৃহত্তর আন্দোলনে আপনাদের সকলকে এখনকার শক্তিকে আরো দ্বিগুন শক্তিতে পরিণত করে আগামী দিনে আমাদের যে কঠিন কর্মসূচি আসবে সেই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে এই স্বৈরাচারকে দেশ থেকে বিদায় করতে হবে। সেই লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহন করার আহ্বান জানাচ্ছি।”
আইনশৃঙ্খরা বাহিনীর উদ্দেশ্যে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘‘আপনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারি। এদেশের মানুষের খেটে খাওয়া অর্জনের টাকায় আপনারা বেতন পান। আপনারা এদেশের মানুষের সেবক হওয়ার কথা। কিন্তু আজকে আপনারা জনগনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে এদেশের মানুষের ওপরে আপনারা গুলি চালাচ্ছেন।”
‘‘ আমি বলতে চাই, এই প্রশাসনকে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরকে আপনারা এই পর্যন্ত যা করেছেন জনগনের বিপক্ষে কাজ করেছেন। আপনাদের কাছে উদাহরণ আছে এই অবৈধ স্বৈরাচারি ফ্যাসিস্ট সরকার গায়ের জোরে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য অবৈধভাবে অন্যায়ভাবে র‌্যাবের ওপর নির্দেশ দিয়েছেন সেই নির্দেশ শুনে র‌্যাব যে অন্যায় করেছে আজকে আমেরিকা থেকে তাদের বিরুদ্ধে স্যানশন এসেছে। আমি আপনাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, আর এই অবৈধ ফ্যাসিস্ট সরকারের অন্যায় হুকুম আপনারা মানবেন না। আপনারা জনগনের পাশে থাকুন।”
তিনি বলেন, ‘‘ আপনারা অনেকে ভয় পাচ্ছেন যে, এই আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় না থাকলে আপনাদের নাকী অসুবিধা হবে।আমরা বলছি, এখন আপনারা সংশোধন হোন। এখন থেকে আপনারা যারা জনগনের পক্ষে থাকবেন ভবিষ্যতে যে সরকার আসবে আপনাদেরকে ক্ষমা করে দেবে।”
‘‘ এখন থেকে যারা আপনারা জনগনের বিপক্ষে গিয়ে গুলি চালাবেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দেবেন আগামী দিনের কিন্তু এদেশের জনগন, জনগনের সরকার আপনাদেরকে কিন্তু ক্ষমা করবে না।”
ঢাকা মহানগর দক্ষিন বিএনপির উদ্যোগে সারাদেশে গায়েবী মামলায় গ্রেফতার, দ্রব্যমূল্যের ঊধর্বগতিসহ ১০ দফা দাবি আদায়ে এই সমাবেশ হয়। শনিবার ঢাকা ছাড়াও সারাদেশের ২১ মহানগর ও জেলায় এই সমাবেশ হয়েছে।
স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘‘ ৪৮ বছর পর শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে আপনারা মামলা দায়ের করেছেন। আমরা ৪৮ বছর পরে হলেও সেই মামলার বিচার ইনশাল্লাহ আমরা করব। আমাদের নেতৃবৃন্দকে যারা আঘাত করছেন, আমাদের নেতৃবৃন্দকে যারা হত্যা করছেন কাউকে আমরা ছাড়বো না-এই কথাটা আপনারা মনে রাখবেন।”
‘‘ আর একটি কথা বলে যেতে চাই, আমরা যারা এখানে সিনিয়র আছি হতে পারে এমন কোনো এক সময় আমরা থাকবো না। কিন্তু আমাদের নতুন প্রজন্ম যারা আছেন এই তোমরা শিখে নাও, তোমরা জেনে নাও যে, আমরা কি অত্যাচার সহ্য করেছি-এই অত্যাচারের প্রতিশোধ অবশ্যই তোমাদের নিতে হবে।”
তিনি বলেন, ‘‘ আমাদেরকে আজকে উনি(ওবায়দুর কাদের) বলেন কি হাটু ভাঙা দল বিএনপি। হাটু ভাঙা না, কোমড় ভাঙা তাতে কি আসে যায়। একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে দেখেন না… হাটুভাঙা না কোমড় ভাঙা তা দেখা যাবে।”
‘‘ এই হাটুভাঙা দলের বিরুদ্ধে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে ভয় তাদের। আমরা জানি আপনারা সুষ্ঠু নির্বাচন দেবেন না। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ সুষ্ঠু নির্বাচন আদায় করবেই। বিএনপির হাটুতে কত জোর, কোমড়ে কত জোর তখন টের পাবেন। যখন পালানো শুরু করবেন তখন বুঝতে পারবেন বিএনপির কত জোর…।”
দলের নেতা-কর্মীদের ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বানও জানান মির্জা আব্বাস।
ঢাকা মহানগর দক্ষিনের আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু‘র সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, নাসির উদ্দিন অসীম, কামরুজ্জামান রতন, মীর সরাফত আলী সপু, রকিবুল ইসলাম বকুল, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, মীর আলী নেওয়াজ, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, হাবিবুর রশীদ হাবিব, হামিদুর রহমান হামিদ, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, যুব দলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানি, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল, মহানগর দক্ষিন বিএনপির নবী উল্লাহ নবী, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, জাসাসের হেলাল খান, উলামা দলের শাহ নেছারুল হক, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, মতস্যজীবী দলের রফিকুল ইসলাম মাহতাব, শ্রমিক দলের মোস্তাফিজুল করীম মজুদার, ছাত্র দলের সাইদ মাহমুদ জুয়েলসহ মহানগর দক্ষিন ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।